শিক্ষকের বিয়েতে স্কুল শুদ্ধ ছাত্রছাত্রীদের প্রীতিভোজ, খুশীর হাওয়া সিউড়ির স্কুলে

বাংলাহান্ট ডেস্ক : বিয়ে মানে এক নতুন জীবনের শুরু। জীবনের এই বিশেষ দিনটাতে আত্মীয় পরিজন বন্ধুদের পাশে চান সকলেই। কাছের মানুষদের সঙ্গে ভাগ করে নেন নতুন জীবনের খুশি। খাওয়া দাওয়া হই হুল্লোড়ে একসঙ্গে মেতে ওঠেন সকলে। কিন্তু তাবলে বিয়েতে স্কুল শুদ্ধ পড়ুয়াদের নিমন্ত্রণ করে খাওয়ানো? এই ঘটনা সত্যিই বিরল। তবে এবার সত্যি সত্যিই ঠিক এমনটাই করে দেখালেন বীরভূমের একটি স্কুলের শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী। নিজেদের বিয়েতে স্কুলের ৪৮৬ জন ছাত্রদেরই প্রীতিভোজ দিলেন তাঁরা।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি বীরভূমের সিউড়ির সমন্বয়পল্লীর মহেন্দ্রনাথ পালের সঙ্গে বিয়ে হয় সিউড়ি সাজানোপল্লীর অর্পিতা রায়ের। পাত্র এবং পাত্রী দুজনেই কর্মরত সিউড়িরই কড়িধ্যা যদুরায় মেমোরিয়াল অ্যাণ্ড পাবলিক ইন্সটিটিউশনে। একজন শিক্ষক আরেকজন শিক্ষা কর্মী। বিয়ের পর ২২ ফেব্রুয়ারি বধূবরণ উপলক্ষ্যে অঙ্কের মাস্টারমশাই মহেন্দ্রনাথের বাড়িতে বসে প্রীতিভোজের আসর। সেদিন এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্কুলের সমস্ত শিক্ষক শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীরা। কিন্তু নানা কারণেই ছাত্রছাত্রীদের সেদিন নিমন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি ওই দম্পতির পক্ষে। আবার ছাত্রছাত্রীদের ছাড়া স্কুলই অসম্পূর্ণ। অবশেষে খানিক ভাবনা চিন্তার পর বেরোল অভিনব পথ।

শনিবার স্কুলের সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে নিজেদের বিয়ের আনন্দকে ভাগ করে নিতে স্কুলে আয়োজিত হল এক স্নেহ ভোজন। পেট পুরে দুপুরে খিচুড়ি, মাংস এবং চাটনি খেল কয়েকশো পড়ুয়া। ‘মাস্টারমশাই আর দিদিমণির’ বিয়েতে এহেন উপহার পেয়ে কার্যতই খুশি গোটা স্কুল।বিয়ের পাত্র তথা শিক্ষক মহেন্দ্রনাথ জানিয়েছেন, ‘শিক্ষক অথবা শিক্ষাকর্মীদের বাড়িতে শুভ অনুষ্ঠান থাকলে সেই শুভ অনুষ্ঠানের খুশি আমরা স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার চেষ্টা করি।

siuri2

তাই আমরা যখন নতুন জীবন শুরু করলাম তখন ওদের সঙ্গেও সেই আনন্দকে ভাগ করে নিতে আজকের এই আয়োজন’। অন্যদিকে পাত্রী জানিয়েছেন, ‘স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা আমাদের পরিবারের মতন। আমাদের বিয়ের অনুষ্ঠানে স্কুলের অন্যান্যরা উপস্থিত থাকতে পারলেও এত জন ছাত্রছাত্রীদের নিমন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু আমাদের আনন্দ তাদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ায় যাতে কোনও ত্রুটি না থাকে তাই আজ এই খাওয়া দাওয়ার আয়োজন করা হয়েছে। এইভাবে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে খুশি ভাগ করে নেওয়ার মজাই আলাদা।’

ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষিকার সুসম্পর্ক একটি অতি দরকারি এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শিশুদের ভবিষ্যৎ গঠনে অনেক খানি সাহায্য করে এই সম্পর্ক। তবে এই শিক্ষক দম্পতি যেভাবে স্কুলের গন্ডির বাইরেও নিজেদের ব্যক্তিগত জীবনেও আপন করে নিলেন ছাত্রদের তা অবশ্য প্রশংসার যোগ্য। ভালো থাকুন তাঁরা, ভালো কাটুক তাঁদের দাম্পত্য।

Avatar
Katha Bhattacharyya

সম্পর্কিত খবর