বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গৃহযুদ্ধ আর অন্তর্কলহ যেন থামবার নাম নেই গেরুয়া শিবিরে। কিছুদিন আগে পর্যন্ত এ বিষয়ে শীর্ষতালিকায় নাম উঠে আসত শুভেন্দু-মুকুল কিম্বা দিলীপ-মুকুলের। কখনও কখনও আবার শোনা গিয়েছে দিলীপ-শুভেন্দু অন্তর্দ্বন্দ্বের কথাও। অনেকেই বলেছেন সদ্য সদ্য বিজেপি শিবিরে যোগদান করে যে প্রাধান্য লাভ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী তাতে অনেকটাই ক্ষুব্ধ দিলীপ শিবির। তবে আপাতত তা অনেকটাই সামলে উঠেছে বিজেপি। একদিকে যখন দিলীপের হাতে রয়েছে সংগঠনের কাজ, অন্যদিকে শুভেন্দু মূলত সামলাচ্ছেন বিধানসভার পরিষদীয় দলকে। তবে ফের একবার গৃহ কোন্দলের আশঙ্কা তৈরি হলো বিজেপিতে।
এবার হট সিটের একদিকে রয়েছেন সুপরিচিত দিলীপ ঘোষ কিন্তু অন্যদিকে রয়েছেন স্বপন দাশগুপ্ত। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দিলীপ এবং স্বপনের স্বভাব সম্পূর্ণ বিপরীত। একজন যেমন মিডিয়ার সামনে রাখঢাক না করেই সমালোচনা করতে পারেন দলেরও। অন্যজন কিন্তু মোটেই তেমন নন। অনেক মেপে কথা বলাই তার অভ্যাস, বারবার পরখ না করে সংবাদমাধ্যমের সামনে কোনো কথা বলতে রাজি নন তিনি। তবে স্বপনের অস্ত্র মূলত লেখনি। আর তার মাধ্যমেই আরও একবার কটাক্ষ তীর চালালেন তিনি। কারণ নাম উল্লেখ না করলেও তিনি আজ যে টুইট করেন তার লক্ষ্য যে মূলত দিলীপ ঘোষ তা নিয়ে একমত অনেকেই।
I learnt many lessons in politics from my friend Arun Jaitley. A few come to mind:
1) If a reporter thrusts a microphone in your face, it isn’t obligatory to answer. 2) Wisdom lies in knowing when to keep your views private. 3) It isn’t necessary to have a view on every subject.— Swapan Dasgupta (@swapan55) June 22, 2021
এদিন টুইটারে প্রয়াত অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকে স্মরণ করে তিনি লেখেন, “আমি আমার বন্ধু রাজনীতিবিদ অরুণ জেটলির কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি তার কয়েকটা পরামর্শ সরাসরি আমার মাথায় আসছে।
এক. সাংবাদিক মুখের সামনে মাইক ধরলেই উত্তর দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়।
দুই. কোন বিষয়টি তুমি ব্যক্তিগত রাখতে চাও তা জানা অত্যন্ত জরুরী।
তিন. প্রতিটি বিষয় নিয়ে মুখ খুলতেই হবে এমন কোন মানে নেই।”
যদিও স্বপন দাশগুপ্ত নিজেই জানিয়েছেন, আমি কারও নাম উল্লেখ করিনি। আমার প্রয়াত বন্ধু তথাস্তু রাজনীতিবিদ অরুণ জেটলির কাছ থেকে যে শিক্ষা পেয়েছি এই উপলব্ধি ভাগ করে নিয়েছি মাত্র। যা অনেকের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। তবে এই টুইটের লক্ষ্য যে কার্যত দিলীপ তা মেনে নিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতিও। উত্তরে তিনি বলেন, “দলের কর্মীরা যখন মার খাচ্ছেন তখন টুইটার, ফেসবুকে রাজনীতি করার কোনও মানে হয় না। ঠান্ডা ঘরে বসে ও সব করা যায়। এখন বেশি করে কর্মীদের পাশে দাঁড়ানো দরকার।’’
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য দিলীপ স্বপনের এই দ্বন্দ্ব সেভাবে প্রকাশ্যে না এলেও রাজনৈতিক মহলে তা মোটামুটি সুপরিচিত। এমনকি তাকে তারকেশ্বর বিধানসভার প্রার্থী করাতেও খানিকটা অখুশি ছিল দিলীপ শিবির। এমনকি শিবিরের এক নেতা তাকে পরিযায়ী বলেও উল্লেখ করেছেন। তাদের মতে কার্যত মাঠে-ময়দানে দেখা যায় না স্বপন বাবুকে তিনি ভোটে লড়েছেন, হেরেছেন এবং আবার রাজ্য সভাতে ফিরে গিয়েছেন।
এই অন্তর্দ্বন্দ্ব যা আদতে যে কোনো রাজনৈতিক দলের ক্ষেত্রেই পতনের মূল কারণ হতে পারে তা বলাই বাহুল্য। তাই আগামী দিনে এই সমীকরণ এখন কোন দিকে গড়ায় তার উত্তর দেবে সময়ই।