বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayat Election)। তার আগে আটঘাট বেঁধে ময়দানে নেমে পড়েছে সমস্ত রাজনৈতিক দল। জোর কদমে চলছে জয়ের প্রস্তুতি। এরই মধ্যে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে নয়া স্লোগান তুলেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। ‘নো ভোট টু মমতা’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে তৃণমূল বিরোধী ভোটকে এক জায়গায় অনার বার্তা অধিকারী পুত্রের।
তবে শুভেন্দুর এই তত্ত্ব নিয়ে ভিন্ন মত উঠে এল বঙ্গ বিজেপির অন্দর থেকে। বৃহস্পতিবার বিধাননগরে পূর্বাঞ্চলীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের প্রেক্ষাগৃহে বিজেপির পঞ্চায়েত বিষয়ক বিশেষ সাংগঠনিক সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল, সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালবীয়, সাধারণ সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পাল, সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী প্রমুখ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পঞ্চায়েত নির্বাচন বিষয়ক প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক দেবশ্রী চৌধুরী (Debasree Chaudhuri)। যদিও দেখা মেলেনি বিরোধী দলনেতা ও দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের।
জানা গিয়েছে, এদিন শুভেন্দু অধিকারীর জোটের তত্ত্বের পাল্টা দেবশ্রী জানান, নিচু তলায় কোনও রকম মহাজোট হবে না। পঞ্চায়েতে বিজেপি নিজস্ব পতাকা এবং চিহ্ন নিয়েই একাই লড়বে বলে সাফ জানান নেত্রী। তিনি আরও বলেন, রাজ্যে বাম-কংগ্রেসের কোনও বিধায়ক নেই, সুতরাং একমাত্র বিরোধী দল বিজেপি।
তবে তিনি এও বলেন কেউ যদি তৃণমূল বিরোধী আন্দোলনে নামতে চান, তা হলে বিজেপি তাকে প্রতীক দেবে। বিজেপির প্রতীকেই তাকে লড়তে হবে। অর্থ্যাৎ, দেবশ্রীর কথায় পরিষ্কার যে অন্য কোনও প্রতীকে লড়াই করলে বিজেপি তার সমর্থনে নেই। অন্যদিকে, কিছুদিন আগেই শুভেন্দু বলেন, “কে কোথায় জিতবে সেটা পরের বিষয়, আগে তৃণমূলকে হারাতে হবে।”
তাহলে গিয়ে দাঁড়ালো নিচুতলায় শুভেন্দু যে জোট তত্ত্বের নিদান দিয়েছিলেন, তার বিরোধীতা উঠে এল দলেরই অন্দর থেকে। আর শুধু শুভেন্দুই নয়, এর আগে সুকান্ত বলেছিলেন, “আমরা চেষ্টা করব সব বুথে প্রার্থী দিতে, যেখানে প্রার্থী দেব না কৌশলগত কারণেই দেব না।” তবে গতকাল পঞ্চায়েত নির্বাচন বিষয়ক প্রস্তুতি কমিটির বৈঠক থেকে একেবারে ভিন্ন কথা শোনা গেল দেবশ্রীর গলায়।
সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে একাধিক ক্ষোভ, অভিমানের বিষয় উঠে আসে জেলা নেতৃত্বদের কাছ থেকে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ এখনও ঘোষণা হয়নি। তবে এর বহু আগেই নন্দীগ্রাম বিধানসভার একাংশে পঞ্চায়েতের প্রার্থী ঘোষণা হয়ে গিয়েছিল। যা নিয়েও কথা ওঠে বৈঠকে। যদিও রাজ্য নেতৃত্ব তরফে জানানো হয়েছে, প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা নিয়ে এখনও একাধিক স্তরে আলোচনার সুযোগ বা সময় দুটোই রয়েছে।
অন্যদিকে, শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ এক নেতাও এদিন দলের সাংগঠনিক কাজকর্মের জোর সমালোচনা করেন। তার মতে লাগাতার হতে থাকা দুর্নীতি নিয়ে মানুষের মধ্যে তৃণমূলের জন্য ক্ষোভ রয়েছে। সেই কারণে তারা তৃণমূলের বিরুদ্ধে যেতে প্রস্তুত, আর অন্য বিরোধীরাও নিচুতলায় নিজেদের প্রভাব ইতিমধ্যেই বিস্তার করা শুরু করে দিয়েছে। তাই মানুষ বিজেপির জন্য অপেক্ষা করে বসে থাকবে না। তৃণমূলের বিরুদ্ধে যেতে নিজের মতো করে বিরোধীদের খুঁজে নেবে। যদিও নেতার এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কিছু বলতে চাননি দেবশ্রী। নেত্রীর মতে, “পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে নভেম্বর মাস থেকে আমাদের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। সেই নিয়েই আলোচনা হয়েছে। এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারব না।”