বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলায় বড় মোড়! এবার নিয়োগ মামলায় অভিযুক্ত ‘মিডলম্যান’ প্রসন্ন রায়ের (Prasanna Roy) ১৬৩ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (Enforcement Directorates)। সূত্রের খবর, স্কুল সার্ভিস কমিশনের গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগের মামলায় এই বিপুল টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
ইডি সূত্রে খবর, দুর্নীতির তদন্তে নেমে প্রসন্ন রায় ও তার স্ত্রী কাজল সোনি রায়ের নামে থাকা বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। হোটেল, রিসর্ট সহ সমস্ত বাজেয়াপ্ত করা মোট সম্পত্তির মূল্য ১৬৩ কোটি ২০ লক্ষ টাকা। প্রসন্ন ও কাজল ছাড়াও শ্রী দুর্গা ডিলকম প্রাইভেট লিমিটেড নামক এক সংস্থার সম্পত্তিও রয়েছে সেই তালিকায়। ওই সংস্থাটিও প্রসন্নরই নিয়ন্ত্রণে ছিল বলে ইডি সূত্রে খবর।
নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলায় বহুদিন আগেই নাম জড়িয়েছে চাকরি বিক্রির ‘মিডলম্যান’ প্রসন্ন রায়ের। কিছুমাস আগেই এই প্রসন্নকে নিয়ে আদালতে বিস্ফোরক দাবি করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। চার্জশিট জমা দিয়ে ইডি জানায়, অভিযুক্ত প্রসন্ন জানিয়েছেন চাষবাসের মাধ্যমেও গত কয়েক বছরের ২৬ কোটি টাকা আয় করেছেন। রোজগারের উৎস হিসেবে জানিয়েছেন কলা, ক্যাপসিকাম, আখ, টম্যাটো, নারকেল, সর্ষে এসবের নাম। যদিও প্রসন্নর এই দাবি হাওয়ায় উড়িয়ে পাল্টা ইডির দাবি ছিল, প্রসন্নের বিভিন্ন সংস্থার অধীনে যে সমস্ত জমি রয়েছে, তাতে কোনও চাষই হয়নি।
ইডি সূত্রে দাবিব, প্রসন্ন, তার স্ত্রী এবং ঘনিষ্ঠদের মোট ২৫০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিস মিলেছে। অ্যাকাউন্টগুলির ফরেন্সিক অডিটও করিয়েছিল সিবিআই। অ্যাকাউন্টগুলিতে মোট ৭২ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। প্রসন্নের স্ত্রীর আয়ের কোনও উৎস না থাকা সত্ত্বেও তার নিজের অ্যাকাউন্টেই দু’কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে বলে জানিয়েছিল ইডি। নানা ছলে নিয়োগ দুর্নীতির টাকাই প্রসন্ন বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে রেখেছিলেন বলে আগেই অনুমান করেছিল ইডি। এরই মাঝে এবার ১৬৩ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হল।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের অগাস্ট মাসে সিবিআই এর হাতে গ্রেফতার হয়েছিলে প্রসন্ন রায়। জানা যায়, সম্পর্কে তিনি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ভাগ্নি-জামাই। তার অফিসে তল্লাশি করে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে৷ রংমিস্ত্রি থেকে দুবাইয়ের হোটেল মালিক। প্রসন্নর উল্কাগতির উত্থানেই কার্যত চোখ কপালে ওঠে গোয়েন্দাদের।
আরও পড়ুন: বাড়ছে টাকা? লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আপডেট! সুবিধা পেতে এখুনি জেনে নিন
ইডির দাবি ছিল, কেবল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ই নয়, আরও একাধিক নেতার সঙ্গে তার সম্পর্কও ছিল ঘনিষ্ঠ। শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গেও তার নিবিড় সম্পর্ক ছিল প্রসন্নর। ইডির দাবি, এসপি সিনহা, তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা সহ শিক্ষা দফতরের বহু আধিকারিকেরও তিনি ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন।