নিয়মিত পুজো পান বাবা মন্দিরে, মৃত‍্যুর বহু বছর পরও দেশের সীমানা রক্ষা করেন হরভজন সিংহ

বাংলাহান্ট ডেস্ক: তাঁর মৃত‍্যুর পর কেটে গিয়েছে বহু বছর। কিন্তু এখনও তাঁর উপস্থিতি প্রতি মুহূর্তে উপলব্ধি করা যায়। এখনও তিনি একই ভাবে পাহারা দেন দেশের সীমান্ত। এমনটাই বিশ্বাস ভারতীয় সেনাবাহিনীর বহু জওয়ানের। শহিদ হরভজন সিংহের (harbhajan singh) নামে তৈরি হয়েছে বাবা মন্দির। সেখানে তিনি এখনও টহল দেন, রক্ষা করেন সেনাবাহিনীর জওয়ানদের।
সালটা ১৯৬৮। নাথুলা পাসে পোস্টিং ছিল ২২ বছর বয়সী হরভজন সিংহের‍। ওই বছরের অক্টোবরে রসদ নিয়ে মালবাহী পশুর সঙ্গে বিপদসঙ্কুল পথে আউটপোস্টের উদ্দেশ‍্যে রওয়ানা হয়েছিলেন তিনি। কয়েকদিন ধরেই বৃষ্টি ও ধসে রাস্তার অবস্থা ছিল খারাপ। যে মালবাহী পশুদের নিয়ে হরভজন রওয়ানা হয়েছিলেন তাদের মধ‍্যে কয়েকটি আউটপোস্টে ফেরত আসে। তখনই অন‍্যান‍্য জওয়ানদের সন্দেহ হয়।

images 2020 05 28T211500.815
কিন্তু তারপর বহু তল্লাশি করেও তাঁর দেহ পাওয়া যায়নি। শোনা যায়,পরে অপর এক জওয়ানকে স্বপ্নে তিনি বলে দেন কোথায় পাওয়া যাবে তাঁর দেহ। খোঁজার পর সেখান থেকেই পাওয়া যায় হরভজনের দেহ। তাঁর মৃত‍্যুর সঠিক কারন জানা না গেলেও পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদাতেই শেষকৃত‍্য সম্পন্ন হয় হরভজন সিংহের। তাঁর গ্রামে তিনি শহিদের মর্যাদাই পান।
হরভজনের সামরিক উর্দি, জুতো সবই সযত্নে সংরক্ষণ করা আছে। তবে মাঝে মাঝে সেসব অবিন‍্যস্ত হয়ে যায়। শোনা যায়, কাজের ফাঁকে তিনি নিজেই এসে বিশ্রাম নেন সেখানে। তিনি যে এখনও টহল দেন তার আরও প্রমাণ রয়েছে। সামরিক উর্দি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকলেও তাঁর জুতোতে মাঝে মাঝেই ধুলো কাদা দেখা যায়।

20200528 211635
সেনাবাহিনীর একাংশ বিশ্বাস করেন তাদের সুরক্ষার ভার নিজের কাঁধে নিয়েছেন হরভজন। শত্রুদের পক্ষ থেকে আগাম বিপদের কথাও তিনি জানিয়ে দেন। গ‍্যাংটক থেকে কিছু দূরে, নাথুলা ও জেলেপের মাঝামাঝি জায়গায় হরভজনের স্মৃতিতে তৈরি হয়েছে বাবা মন্দির। সেখানে তিনি নিয়মিত পুজো পান। দর্শন করতে আসেন পর্যটকরাও।

20200528 214903

১২ বছর আগে পর্যন্ত নিজের বার্ষিক ছুটি পেতেন হরভজন সিংহ। তাঁর সমস্ত জিনিসপত্র ট্রেনের বার্থ রিজার্ভ করে পৌঁছাত পঞ্জাবের কপূরথালা জেলায় তাঁর গ্রামে। আবার ছুটির শেষে কাজে ফিরতেন তিনি। সম্প্রতি জনপ্রিয় ইউটিউবার ভুবন বাম হরভজন সিংহকে নিয়ে একটি স্বল্প দৈর্ঘ‍্যের ছবিও করেন।

Avatar
Niranjana Nag

সম্পর্কিত খবর