‘রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি, বলছে চোর চোর! এত বড় সাহস? ডাকাতের ডাকাত ওরা’, কাদের ওপর চটলেন মমতা?

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সোমবার কোচবিহারে (Coochbehar) সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আর সেখান থেকেই একের পর এক ইস্যুতে বিরোধীদের তোপ দাগেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গত ৩৪ বছরের বাম জামানায় কোচবিহার অবহেলিত ছিল। আর ক্ষমতায় আসার পর কোচবিহারের জন্য কিছু করতে বাদ রাখেনি তৃণমূল সরকার।

বামের পাশাপাশি এদিন বিজেপিকেও তোপ দাগেন মমতা। বলেন, আগেরবারে যেই বিজেপির সাংসদ এখান থেকে জিতেছে, কী করেছে? আমি এয়ারপোর্ট করলাম। আর বাবু প্লেনে চড়ে এসে বলছে আমি করেছি। জমিদার বাবু? নিজের সাফল্যের খতিয়ান তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি রেল মন্ত্রী থাকাকালীন কোচবিহারের নতুন রেল স্টেশন কে করেছিল? যোগীগোপা ময়নাগুড়ি ভায়া কোচবিহারে লাইন কে করেছিল? তারপর চাংড়াবান্ধা, মালবাজার, জলপাইগুড়ি স্টেশন করেছিল?

বিজেপিকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এরা তো একটা ঘাস পুঁতেও দেখায়নি। ঘাস কীভাবে পুঁততে হয়! জল প্রকল্পে ঘর ঘর জল পৌঁছে দিয়েছি। আমি বলি, কত টাকা দিয়েছেন? ২৫ শতাংশ দিয়েছে। বাকি ৭৫ শতাংশ আমরা দিয়েছি। তাহলে কী দাঁড়ালো? দিল টা কে?

এদিন রাগ-ক্ষোভও উঠে এল মুখ্যমন্ত্রীর কথায়। ক্ষোভ প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রী বলেন,’ওদের এত বড় সাহস যে আমি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি আমাকে বলছে চোর? দেশকে লুট করেছে। বাংলাকে লুট করেছে। আমি একটা চা-ও কারও পয়সায় খাই না। সার্কিট হাউসে থাকলে নিজের পয়সায় থাকি। লজ্জা করে না! মিথ্যে কথা বলার জন্য একদিন ঠিক মানুষ ওদের জিভ খসিয়ে দেবে। দেশকে লুট করেছে, বাংলাকে লুট করেছে। ‘

নিজের কথায় মমতা সাফ জানিয়ে দেন, দলের বা সরকারের কেউ যদি দুর্নীতি করে থাকে, সেই দায়িত্ব তিনি নেবেন না। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ আমাদের হাতের ৫টি আঙুল কোনওটা ছোট, কোনওটা বড়। একশো শতাংশের মধ্যে ৫ জন যদি খারাপ কাজ করে , চুরি করে তাহলে তার দায় দলের না। আইন আইনের পথে চলবে। আমি রাস্তা যাচ্ছি দিয়ে, বলছে চোর চোর। এতবড় সাহস! ওরা ডাকাতের ডাকাত।

mamata f

আরও পড়ুন: ‘BSF-র দেওয়া কার্ড নিলেই NRC-তে পড়ে যাবেন’, ‘‌আমি বাঘের বাচ্চা…’‌, কোচবিহার থেকে দাবি মমতার

তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের উন্নয়নের খতিয়ান সকলের সামনে তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। উত্তরবঙ্গে একাধিক নদীর উপর সেতু নির্মাণ, রাস্তা সম্প্রসারণ, মন্দির সংস্কার, বিমানবন্দর তৈরি ইত্যাদির কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। জোর গলায় মমতা বলেন, ‘‌আমি ভাঙি না গড়ি। তাই বলব, কারও প্ররোচনায় পা দেবেন না।’‌

এদিন এই সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকেই রাজবংশী (Rajbanshi) ভাষা সরকারি স্কুলে পড়ানোর ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজবংশী স্কুলগুলিকে সরকারি স্বীকৃতি দেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যে মোট ১৯২টি স্কুলে রাজবংশী ভাষা পড়ানো হবে। তার মধ্যে প্রায় ১২০টি স্কুল রয়েছে কোচবিহারে। বাকি ৭২টি রয়েছে জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলায়।

এদিন একজোটে ১৯৮টি প্রকল্পের শিলান্যাস এবং উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। যার মোট বরাদ্দের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকা। ডালখোলা থেকে কোচবিহার একটা নতুন ইকোনমিক করিডোর তৈরী হচ্ছে। এর মাধ্যমে প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী।

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর