১০ বছর আগে যেই সামগ্রী ১০০ টাকায় পাওয়া যেত, আজ তার মূল্য কত? চমকে দেবে পরিসংখ্যান

বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের সমাজে মুদ্রাস্ফীতি এমনই একটি “অভিশাপ” যা কার্যত ঘুম উড়িয়ে দেয় সাধারণ মানুষের। ভারতের মতো দেশে মুদ্রাস্ফীতির বৃদ্ধি ক্রমশ উদ্বেগ বাড়ায়, কারণ আমাদের দেশে এখনও পর্যন্ত একজন সাধারণ মানুষের মাসিক আয় গড়ে প্রায় সাড়ে বারো হাজার টাকার গন্ডীতেই আবদ্ধ রয়েছে। এমতাবস্থায়, সরকার নিজেই বিশ্বাস করে যে, দেশের ৮০ কোটিরও বেশি মানুষ দরিদ্র। যে কারণে তাঁদের বিনামূল্যে খাদ্যশস্য প্রদান করা হয়।

এদিকে, করোনার মত মহামারী কার্যত এই পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে। সম্প্রতি মুদ্রাস্ফীতির হার প্রসঙ্গে সরকারের প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে যে, দেশে এই হার এখন প্রায় ৮ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে।

সরকারের মতে, এপ্রিল মাসে কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স (CPI)-এর উপর ভিত্তি করে খুচরো মুদ্রাস্ফীতির হার ৭.৭৯ শতাংশ ছিল। পরিসংখ্যান অনুযায়ী এই হার গত ৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১৪ সালের মে মাসে মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ৮.৩ শতাংশ।

মূলত, সময়ের সাথে সাথে একটি পণ্য বা পরিষেবার মূল্য বৃদ্ধিকেই “মুদ্রাস্ফীতি” হিসেবে মনে করা হয়। এই হিসেবকে সাধারণত একটি মাস বা বছর অনুযায়ী পরিমাপ করা হয়। যেমন, এক বছর আগে যদি কোনো কিছুর দাম ১০০ টাকা থাকত এবং বর্তমানে সেটি বেড়ে গিয়ে ১০৫ টাকা হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতির হার হবে ৫ শতাংশ। এদিকে, ক্রমশ মুদ্রাস্ফীতির ফলে সময়ের সাথে সাথে মুদ্রার গুরুত্ব কমে যায়। অর্থাৎ, আজ আপনার ১০৫ টাকা এক বছর আগে ১০০ টাকার সমান ছিল।

কিভাবে আপনার পকেটে টান পড়ছে জেনে নিন:
* মুদ্রাস্ফীতি বর্তমানে ২০১২-র বেস প্রাইসের ভিত্তিতে গণনা করা হয়। এখান থেকেই আপনি অনুমান করতে পারবেন যে, ২০১২ সালে ১০০ টাকায় যা কিনতে পারতেন, আজ সেই জিনিস কিনতে কত খরচ করতে হবে।

* ২০১২ সালে, আপনি যদি ১০০ টাকায় একটি জিনিস কিনতেন, তাহলে আজ একই জিনিস কিনতে আপনাকে ১৭০.১ টাকা খরচ করতে হবে। যদিও, এক বছর আগে পর্যন্ত, ওই একই জিনিস কিনতে আপনাকে ১৫৭.৮ টাকা খরচ করতে হত। অর্থাৎ, এক বছরের মধ্যেই ওই জিনিস কিনতে ১২.৩ টাকা বেশি খরচ করতে হবে।

* যেহেতু, একই আইটেম কিনতে আপনাকে এক বছরে ১৫৭.৮ টাকার পরিবর্তে ১৭০.১ টাকা খরচ করতে হচ্ছে, তাই বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতির হার ৭.৭৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

মুদ্রাস্ফীতি পরিমাপ করার জন্য দু’টি সূচক রয়েছে:
ভারতে মুদ্রাস্ফীতি পরিমাপ করার জন্য দু’টি সূচক রয়েছে। প্রথমটি হল কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স (CPI)। আর দ্বিতীয়টি হল হোলসেল প্রাইস ইনডেক্স অর্থাৎ WPI। মূলত, সাধারণ ক্রেতারা, যাঁরা খুচরো বাজার থেকে কেনেন সেক্ষেত্রে CPI-এর মাধ্যমে জানা যায়, খুচরো বাজারে পণ্যের দাম কিভাবে ওঠানামা করছে।

retail inflation 660 620x400 1

অপরদিকে, ব্যবসায়ী বা কোম্পানিগুলি পাইকারি বাজার থেকে পণ্য কেনেন। WPI পাইকারি বাজারে পণ্যের দামের পরিবর্তন দেখায়। বিশ্বের অনেক দেশে, মুদ্রাস্ফীতি পরিমাপের জন্য WPI-কে প্রধান মান হিসাবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু ভারতে, প্রধান প্যারামিটার হিসাবে CPI-কে বিবেচনা করা হয়।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর