২০১৬-র প্যানেল বাতিল হওয়ায় অবসাদগ্রস্ত! আত্মঘাতী স্কুল শিক্ষক, উদ্ধার ঝুলন্ত দেহ

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত সোমবার এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি (SSC Recruitment Scam) মামলার রায় দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ইতিমধ্যেই এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে এসএসসি। সোমবার সেই মামলার শুনানি ছিল শীর্ষ আদালতে। আর সেদিনই উদ্ধার হল এক শিক্ষকের (Teacher) ঝুলন্ত দেহ।

প্রয়াত শিক্ষকের নাম বীরেন্দ্রনাথ সরেন। বাঁকুড়ার (Bankura) সিমলাপালের উপরশোল নিবাসী এই শিক্ষক ভূতশহর হাই স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। আজ সকালে বাড়ির কাছের একটি আমগাছ থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। বীরেন্দ্রনাথের পরিবারের লোকজনের কথায়, ২০১৬ সালের প্যানেলে চাকরি পেয়েছিলেন তিনি। ২০১৯ সালের চাকরিতে যোগদান করেন। এসএসসি মামলায় হাই কোর্টের (Calcutta High Court) রায়দানের পর বীরেন্দ্রনাথ মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন বলে দাবি করেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের অনুমান, আতঙ্ক থেকেই হয়তো আত্মহননের পথ বেছে নেন তিনি।

প্রয়াত শিক্ষকের স্ত্রী মানকু হাঁসদা এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘ওঁর চাকরি চলে গিয়েছিল কিনা আমি বলতে পারব না। কারণ ও বাড়িতে কোনও আলোচনা করতো না। তবে হাই কোর্টের রায় শোনার পর চুপচাপ হয়ে গিয়েছিলেন। উনিও ২০১৬ সালের প্যানেলে চাকরি পেয়ে ২০১৯ সালে যোগদান করেছিলেন। প্রচুর কষ্ট করে চাকরি পেয়েছিলেন। উনি যে এমন কিছু করবেন সেটা কল্পনা করতে পারিনি’।

আরও পড়ুনঃ প্রচারে বেরিয়েই বিপত্তি! হেভিওয়েট TMC প্রার্থী সৌগত রায়কে ঘিরে ধরলেন মহিলারা! তারপর…

কার্যত একই সুর শোনা যায় বীরেন্দ্রনাথের জামাইবাবু শ্যামলাল মান্ডির গলাতেও। তিনি বলেন, ২০১৬ সালের প্যানেলে চাকরি পেয়েছিলেন বীরেন্দ্রনাথ। তবে প্যানেল বাতিল হওয়ায় তাঁর চাকরি চলে গিয়েছিল কিনা সেই বিষয়ে জানেন না। তবে আদালতের রায় ঘোষণার পরেই অবসাদে ডুবে গিয়েছিলেন।

এদিকে বীরেন্দ্রনাথ যে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন, সেই ভূতশহর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাপস সন্নিগ্রহী বলেন, বাতিল হওয়া প্যানেলে বীরেন্দ্রনাথের নাম ছিল না। তাপস বলেন, ‘শারীরশিক্ষা এবং কর্মশিক্ষার বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের জন্য ২০১৪ সালের পর থেকেই ভিন্ন প্যানেল হচ্ছে। প্রয়াত বীরেন্দ্রনাথ ২০১৬ প্যানেলে চাকরি পেলেও তিনি শারীরশিক্ষার শিক্ষক ছিলেন। সেই কারণে বাতিল প্যানেলে তাঁর নাম ছিল না’। ভূতশহর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, ২২ তারিখ হাই কোর্ট রায় দিয়েছে আর সেদিনই গরমের ছুটিও পড়ে গিয়েছে। তাই এই বিষয়ে তিনি আর কিছু বলতে পারবেন না।

SSC recruitment scam a teacher death in Bankura

এদিকে স্বামীকে হারিয়ে কার্যত চোখে অন্ধকার দেখছেন বীরেন্দ্রনাথের স্ত্রী মানকু। দুই ছেলেমেয়ে রয়েছে তাঁদের। সন্তানদের কীভাবে বড় করবেন সেই চিন্তা কুরে কুরে খাচ্ছে তাঁকে। এদিন সকালে বীরেন্দ্রনাথের ঝুলন্ত দেহ দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন। তাঁরা মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রয়াত শিক্ষকের ময়নাতদন্ত করা হবে। ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

Sneha Paul
Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তরের পর সাংবাদিকতা শুরু। বিগত প্রায় ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর