দুর্ঘটনায় হারিয়েছেন ডান হাত! মনের জোরকে সম্বল করেই IAS হয়ে নজির গড়লেন অখিলা

বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের দেশের অন্যতম একটি কঠিন পরীক্ষা হল UPSC (Union Public Service Commission)। প্রতিবছর হাজার হাজার প্রার্থী এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলেও তাঁদের মধ্যে কিছুজনই পরীক্ষাটিতে সাফল্য অর্জন করতে পারেন। এমতাবস্থায়, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা আপনাদের কাছে এমন এক লড়াকু মহিলার প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব যিনি সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে হারিয়ে দিয়ে এই কঠিন পরীক্ষাকে জয় করে IAS (Indian Administrative Service) অফিসার হয়েছেন।

মূলত, IAS অখিলা বিএস তাঁর শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে UPSC-র সাফল্যের পথে আসতে দেননি। একটি দুর্ঘটনায় অখিলা তাঁর তার ডান হাতটি হারিয়েছিলেন। কিন্তু তা সত্বেও তিনি UPSC পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সমাজের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন।

দুর্ঘটনায় ডান হাত হারিয়েছেন: অখিলা ২০০০ সালের ১১ সেপ্টেম্বরে একটি বাস দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন। এমনকি, ওই দুর্ঘটনায় তিনি তাঁর ডান হাত হারান। হাতটি ঠিক করার জন্য জার্মানির বিশেষজ্ঞদের সাথে পরামর্শ করা হলেও, হাতটি আর ঠিক হয়নি তাঁর।

তবে, এই দুর্ঘটনার পরও হাল ছাড়েননি অখিলা। বরং, তিনি তাঁর অন্য হাত দিয়ে লিখতে শুরু করেন এবং ধীরে ধীরে জীবনযুদ্ধে নিজেকে সামিল করেন। পাশাপাশি, শারীরিক অক্ষমতাকে উপেক্ষা করেই তিনি UPSC-র মতো পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন।

জানিয়ে রাখি যে, অখিলা পড়াশোনায় অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। পাশাপাশি, তিনি বোর্ড পরীক্ষায় সর্বোচ্চ গ্রেড পেয়ে উত্তীর্ণ হন। এরপরে IIT মাদ্রাজ থেকে ইন্টিগ্রেটেড এমএ ডিগ্রি অর্জন করার পর, তিনি ২০১৯ সালে UPSC-র জন্য প্রস্তুতি শুরু করেন। UPSC-র প্রথম দুই প্রচেষ্টায়, তিনি প্রিলিমসে উত্তীর্ণ হলেও মেইনে সফল হতে পারেননি।

এমতাবস্থায়, ২০২০ এবং ২০২১ সালে পরপর দু’বার ব্যর্থ হওয়া সত্বেও, তিনি ফের ২০২২ সালে UPSC পরীক্ষা দিয়েছিলেন। পাশাপাশি, তৃতীয় প্রচেষ্টায় ৭৬০ তম স্থান অর্জন করে IAS অফিসার হন অখিলা। এই প্রসঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে অখিলা জানান যে, তাঁর শিক্ষক তাঁকে IAS হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। আর এই প্রস্তুতির জন্য তিনি এক বছর ব্যাঙ্গালোরে কোচিংও নেন।

Success Story of IAS Akhila bs

পরিবারের কাছ থেকে পান সমর্থন: অখিলা জানান যে, তাঁর বাবা-মা এবং পরিবারের সদস্যরা তাঁকে তাঁর এই লড়াইতে সমর্থন করেন। তিনি জানান, তাঁর একমাত্র লক্ষ্য ছিল IAS হওয়া। তবে, পরীক্ষার সময় একটানা লেখালেখি করা ছিল অখিলার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। যদিও, সেইসব চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে অখিলা শেষপর্যন্ত তাঁর স্বপ্নপূরণ করেছেন।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর