বাবা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, নিজেও কয়েক হাজার কোটির মালিক! তবুও ফল-সবজির ব্যবসা করেন এই যুবক

বাংলা হান্ট ডেস্ক: ৪,০০০ কোটি টাকার ৪০০ টি কক্ষের বিলাসবহুল প্রাসাদ। শুধু তাই নয়, সেখানে রয়েছে ৩,৫০০ কেজির ঝাড়বাতিও। হ্যাঁ, গোয়ালিয়র রাজপরিবার এইসব রাজকীয় জিনিসের জন্য অত্যন্ত পরিচিত। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল গোয়ালিয়র রাজপরিবারের উত্তরাধিকারী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া (Jyotiraditya Scindia) হলেন একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তাঁর ছেলের নাম হল মহাআর্যমন সিন্ধিয়া (Mahanaaryaman Scindia)। এখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারে যে, কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পুত্র মহাআর্যমন কি করেন? আর এই প্রশ্নের উত্তরেই লুকিয়ে রয়েছে বড় চমক। কারণ, বাবার ছত্রছায়া থেকে বেরিয়ে এসে অভিনবভাবে নিজের পরিচয় তৈরি করেছেন মহাআর্যমন।

মূলত, রাজপরিবারের ঘরানা থেকে কিছুটা পৃথক ব্যবসা শুরু করেন মহাআর্যমন। বাবাকে তাঁর কাজে সাহায্য করার পাশাপাশি তিনি ব্যবসাতেও দ্রুত অগ্রসর হন। গত বছরই তিনি তাঁর নতুন স্টার্টআপ শুরু করেছেন। যেটির নাম হল MYMandi। কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক মহাআর্যমান তাঁর বন্ধু সূর্য্যশ রানার সাথে এই স্টার্টআপ শুরু করেছেন। এটি মূলত একটি এগ্রিকালচার স্টার্টআপ। সম্প্রতি তাঁদের এই স্টার্টআপ এক কোটি টাকা আয় করেছে।

অন্যান্য শহরেও বিস্তৃত হবে ব্যবসা: মহাআর্যমন সিন্ধিয়ার কোম্পানি MYMandi-র মাধ্যমে ফল ও সবজি সম্পর্কিত ব্যবসা করা হয়। MYMandi হল একটি অনলাইন এগ্রিগেটর যেটি ফল ও সবজি সরবরাহ করে। বর্তমানে এই কোম্পানি জয়পুর, গোয়ালিয়র, নাগপুর এবং আগ্রা এই চারটি শহরে ব্যবসা করছে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে, তাঁরা এই কোম্পানিটিকে ধীরে ধীরে অন্যান্য শহরে প্রসারিত করার পরিকল্পনাও করেছেন। উল্লেখ্য যে, মাত্র এক বছরেরও কম সময়ে এই কোম্পানির আয় এক কোটি টাকায় পৌঁছেছে।

মাসিক আয় ৫ কোটি টাকায় পৌঁছতে পারে: এই প্রসঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারের সময়ে মহাআর্যমন জানান, তিনি তাঁর ব্যবসাকে এতটাই ভালোবাসেন যে তিনি নিজেই পণ্য কিনতে বাজারে পৌঁছে যান। সেখানে মহাআর্যমন তাঁর পরিচয় লুকোনোর জন্য মুখ ঢেকে রাখেন এবং স্টার্টআপের মাধ্যমে কৃষকদের সাহায্য করেন। তিনি অনুমান করেছেন যে, এই কোম্পানির মাসিক আয় আগামী সময়ে সাড়ে ৪ থেকে ৫ কোটি টাকায় পৌঁছতে পারে।

প্রাসাদে রয়েছে ৪০০ টিরও বেশি কক্ষ: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, মহাআর্যমন গোয়ালিয়রের জয়বিলাস প্রাসাদে থাকেন। এই প্রাসাদে ৪০০ টিরও বেশি কক্ষ রয়েছে। প্রাসাদের ভিতরে একটি ৩,৫০০ কেজির ঝাড়বাতিও রয়েছে। জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার পুত্র মহাআর্যমন দুন স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। এরপরে, তিনি গ্র্যাজুয়েশনের জন্য গেইল বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপের সাথে কাজ করার অভিজ্ঞতাও রয়েছে মহাআর্যমনের।

Success Story of Mahanaaryaman Scindia

এদিকে, জয়বিলাস প্রাসাদ ১৮৭৪ সালে নির্মিত হয়েছিল। তখন এটি তৈরি করতে খরচ হয়েছিল ১.১ কোটি টাকা। তবে, মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে এই প্রাসাদটির দাম প্রায় ৪,০০০ কোটি টাকা। ১,২৪,৭৭১ বর্গফুট জুড়ে বিস্তৃত এই প্রাসাদের একটি অংশ মিউজিয়াম হিসেবে ডেভেলপ করা হয়েছে। পাশাপাশি, ১৩ বছর বয়স থেকে মহাআর্যমন তাঁর বাবার জন্য নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন। গত কয়েক বছর ধরে তিনি জনগণের সঙ্গে জনসংযোগও করছেন। তিনিও বাবার স্টাইলে বক্তব্য দেন। এমনকি সোশ্যাল মিডিয়াতেও মহাআর্যমানের বিপুলসংখ্যক ফ্যান-ফলোয়িং রয়েছে।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর