বাংলাদেশ হচ্ছে ধর্ষণের দেশ: বললেন তসলিমা নাসরিন

বাংলাহান্ট ডেস্ক : বাংলাদেশী লেখিকা তসলিমা নাসরিন। বিতর্কিত লেখার জন্য গত ২৫ বছর নির্বাসিত রয়েছেন নিজের মাতৃভূমি বাংলাদেশ থেকে। তিনি বরাবর নিজের বক্তব্য ফেসবুকের মাধ্যমে প্রকাশ করে থাকে। সমাজের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নির্দ্বিধায় ব্যাখ্যা করে নিজের মন্তব্যের মাধ্যমে। এবারও সেরকমই মন্তব্য প্রকাশ করেছেন। হুবহু তুলে ধরা হলো তার ফেসবুক থেকে পোস্ট করা এরকম মন্তব্য।

tn 1484046319 2

“এরকম ঘটনা বাংলাদেশে প্রতিদিন ঘটছে। বাংলাদেশ হচ্ছে ধর্ষণের দেশ। ৭-৮ বছরের একটা বাচ্চা মেয়েকে এই বৃদ্ধ রেপ করতে চেষ্টা করছিলো। এদেশের বোধহয় এক ইঞ্চি জায়গা বাকী নেই নারী শিশুদের জন্য নিরাপদ! গ্রামে এরকম সু্ন্নতী দাড়িঅলাদের দেথবেন ওয়াজ মাহফিলের একদম শুরুতে বসে আছে। মানুষের যখন সব রঙের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায় তখন একমাত্র যৌনতাই থাকে তার বিনোদন। মসজিদ মাদ্রাসার হুজুর থেকে মন্দিরের পুরোহিত, গির্জার ফাদারদের জীবন একঘেয়ে ধর্ম আর বিধি নিষিধে জর্জরিত। ইসলাম তো গান সংগীত সিনেমা বিনোদন সব হারাম করে রেখেছে। একজন হুজুর সিনেমা দেখতে হলে যায় না। গান শুনে না। আর্ট শিল্পকলা দেখে না। মাদ্রাসাগুলোতে তাই শিশু বলৎকার মহামারি লেগে থাকে। আমাদের গোটা দেশটায় ধর্ষণের মহামারী লেগে যাবার কারণ আমাদের সাধারণ মানুষের জীবনে হারাম হালালের নিক্তিতে জীবনের রঙরস সব হারাতে বসেছে। এক সময় গ্রাণীণ জীবনে এই বয়েসের বৃদ্ধরা রাত জেগে কবির লড়াই শুনত। বর্ষকালে গ্রামে গ্রামে যাত্রাদল আসত। বৈশাখে সার্কাস, পুতুল নাচ, নাটক… কত বিনোদন ছিলো। এক সময় এদেশে মদ নিষিদ্ধ ছিলো না। ইসলামিক জোশে মদ নিষিদ্ধ করে এসেছে ফেনসিডিল, ইয়াবার মত নেশা। যখন আপনি সব আটকে রাখবেন তখন অবদমিত চাহিদা বিকৃত হয়ে বেরিয়ে আসবে। এখন সারাদেশে খালি একটাই কথা, মরলে কবরে জবাব দিবা কি? বুড়া বয়েসে মিয়া শয়তানের মত নাটক সিনেমা দেখো তোমাগো শরম নাই…। ওয়াজের সংখ্যা বেড়ে গেছে। মসজিদ মাদ্রাসা, মন্দিরে জাঁকজমক বৃদ্ধি পেয়েছে। এসবই একটা নৈতিক অধ:পতিত সমাজের লক্ষণ। যখন কোন সমাজে ধার্মীকের সংখ্যা বেড়ে যাবে তখন ধরে নিতে হবে সেই সমাজের বেশির ভাগ মানুষ অসৎ। মানুষ পাপ করলেই বেশি করে মসজিদ বানায়, ছেলেকে মাদ্রাসায় পাঠায়, মন্দিরে দান করে, দেশে ওমরা হজ করা হাজির সংখ্যা বেড়েছে ব্যাঙের ছাতার মত। এসবই নষ্ট একটা সমাজের চিত্র। ভিডিওটির ঘটনা কোন বিচ্ছ্ন্নি কোন ধর্ষণ প্রচেষ্টার চিত্র না। এটি আমাদের সমাজের পঁচনের একটি ছোট্ট দৃশ্য মাত্র।”

সম্পর্কিত খবর