মলদ্বারে ঢুকিয়ে পাচার হচ্ছে জেল খানায়! পৃথিবীর সবথেকে ছোট ফোন নিয়ে চিন্তিত কর্মকর্তারা

বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান যুগে মোবাইল ফোন ছাড়া সমস্ত কিছুই অচল। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই সমগ্র বিশ্ব হাতের মুঠোয় এসে পৌঁছেছে এই যন্ত্রের মাধ্যমে। স্বাভাবিকভাবেই ফোন কেনার আগে সেটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য যাচাই করে নেন গ্রাহকেরা। ডিসপ্লে, রেজোলিউশন, ক্যামেরা থেকে শুরু করে প্রতিটি জিনিসই খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে নেওয়া হয়।

তবে, সাধারণ গ্রাহকদের কাছে এটা স্বাভাবিক বিষয় হলেও অপরাধীদের কাছে শুধুমাত্র একটা চাহিদাই থাকে ফোনের ব্যাপারে। তা হল ফোনটি যত ছোট হবে ততই তাঁদের সুবিধা। যার ফলে শরীরের যে কোনও অঙ্গে সেটি ঢুকিয়ে নিয়ে কার্যসিদ্ধি করতে পারবেন তাঁরা।

এদিকে, মোবাইল ফোন প্রস্তুতকারক সংস্থা Zanco আজ থেকে অন্তত ছয় বছর আগে পৃথিবীর সবথেকে ছোট সেল ফোন নিয়ে হাজির হয়েছিল, যার নাম ছিল Zanco ফ্লাই। তবে, এখানেই শেষ নয়, তার ঠিক পরের বছরই ২০১৭ সালে তার থেকেও ছোট আর একটি ফোন নিয়ে আসে সংস্থা। যার নাম হল Zanco Tiny T1।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ওই ফোনই হচ্ছে পৃথিবীর সবথেকে ছোট মোবাইল ফোন। পাশাপাশি, জানলে চমকে যাবেন যে, এই ফোনটি সবথেকে বেশি ব্যবহার করার প্রবণতা দেখা গিয়েছে কয়েদিদের মধ্যে। এমনকি আজও বহু কয়েদি শরীরের গোপনস্থানে ঢুকিয়ে রেখে জেলের ভিতরে এই ফোনটি বহাল তবিয়তে ব্যবহার করে থাকেন।

প্রস্তুতকারী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে যে, বিভিন্ন জরুরি ক্ষেত্রে এই ফোনটি ব্যবহার করা যেতে পারে। পাশাপাশি, এই ফোনে অত্যন্ত শক্তিশালী একটি ব্যাটারি রয়েছে। তবে, লাগাতার ৩ ঘণ্টা কথা বলে গেলে তৎক্ষণাৎ এই ফোনের ব্যাটারি শেষ হয়ে যাবে। যদিও, জরুরি ভিত্তিতে Zanco টাইনি টিওয়ান ফোন ব্যবহার করলে তিন দিন যাবৎ এটি ব্যাটারি ব্যাকআপ ধরে রাখতে সক্ষম।

পাশাপাশি, এই ফোনের সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব হল আকারে এটি ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের থেকেও ছোট। শুধু তাই নয়, ফোনটি মাত্র ৪৬.৭ মিমি দীর্ঘ এবং ওজন মাত্র ১৩ গ্রাম। মোট ৩০০টি ফোন নম্বর এবং ৫০টি এসএমএস সেভ করে রাখা যায় এই ফোনে। তবে ইন্টারনেটের সুবিধা উপলব্ধ নেই ফোনটিতে।

ব্যবহারকারীদের কাছে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও ২০১৭ সালে প্রকাশিত সংবাদমাধ্যম আইটিপ্রো-র একটি রিপোর্টে বলা হয়েছিল যে, এই ধরনের ফোন নিষিদ্ধ হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। বিচার সচিব ডেভিড লিডিংটন ডিসেম্বরের শেষ দিকে অনলাইন খুচরো বিক্রেতাদের বিক্রি বন্ধ করার আহ্বান জানানোর পরে এই জাতীয় ছোট ফোনগুলি নিষিদ্ধ করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

কারণ, ফোনটি তৈরি করা হয়েছিল যে উদ্দেশ্যে, ব্যবহৃত হচ্ছে ঠিক তার উল্টো উদ্দেশ্য নিয়েই। সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট করেছে সংবাদমাধ্যম ভাইস ইন্ডিয়া। সেই পোস্টে বলা হয়েছে যে, নিতম্বের ভিতরে ভরে এই ফোনটি জেলের ভিতরে প্রবেশ করছে কয়েদিরা।

zanco news

এই প্রসঙ্গে ভাইস ইন্ডিয়া-র কাছে একজন প্রাক্তন কয়েদি দাবি করেছেন যে, “অ্যামাজনে এই ধরনের ফোন ১০০ শতাংশ প্লাস্টিক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আর সেই ভাবে ফোনটি ব্যবহার করলে মেটালও ডিটেক্ট করতে পারে না।”

পাশাপাশি, তিনি আরও জানিয়েছেন যে, “জেলের অন্দরে সর্বত্র ফোন থাকে। যেখানে নজর যাবে, সেখানেই ফোন দেখা যাবে। কর্মীরা ফোনগুলি নিয়ে আসে। অথবা আপনি অন্য বন্দির কাছ থেকে তাদের একটি উপকার করে বা তাদের কিছু দিয়ে এমন একটি ফোন কিনতে পারেন।”

এছাড়াও, ভাইস ইন্ডিয়া-র পোস্টে আরও জানানো হয়েছে যে, সম্প্রতি এক ব্যক্তির চুলের খোঁপা থেকে চারটি মোবাইল, চারটি সিম কার্ড এবং চারটি চার্জার পাওয়া গিয়েছিল। শুধু তাই নয়, আরও একজন বন্দির মলদ্বার থেকে দুটি মোবাইল ফোন, দুটি ব্যাটারি, প্লাস, দুটি ড্রিল, একটি করাতের আটটি টুকরো, পাঁচটি পেরেক এবং তিনটি সিম কার্ডও পাওয়া যায়।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর