ভারতের এই স্কুল খোলা থাকে ৩৬৫ দিন! ২০ বছর যাবৎ একদিনও ছুটি নেননি শিক্ষক দম্পতি

বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রত্যেকের কাছেই বিদ্যালয় (School) হল এমন একটি প্রতিষ্ঠান যেটি ছাড়া জীবন কার্যত অসম্পূর্ণ থাকে। শিক্ষক-শিক্ষকাদের সাহায্যে এবং পরামর্শে বিদ্যালয় থেকেই পাওয়া যায় শিক্ষার আলো। যা জীবনে চলার পথে গতি প্রদান করে সকলকে। এমতাবস্থায়, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা আপনাদের কাছে এমন একটি বিদ্যালয়ের প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব যেটি বছরের প্রতিটি দিনই খোলা থাকে। হ্যাঁ, শুনতে অবাক মনে হলেও এটা কিন্তু একদমই সত্যি। সর্বোপরি, ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা দীর্ঘ ২০ বছর যাবৎ কোনো ছুটিও নেন নি।

জানিয়ে রাখি যে, পুণের প্রায় ৬০ কিলোমিটার পূর্বে, এমন একটি সরকারি স্কুল রয়েছে যেটি গত ২০ বছর যাবৎ একদিনের জন্যও বন্ধ হয়নি। অর্থাৎ, এই স্কুলে ৩৬৫ দিনই ছাত্রছাত্রীদের পড়ানো হয়। এই প্রাথমিক বিদ্যালয়টি কার্দেলওয়াড়ি নামের একটি ছোট গ্রামে অবস্থিত। যেটি বছরের সব দিনই শিক্ষার্থীদের জন্য খোলা থাকে। জানা গিয়েছে যে, ২০০১ সাল থেকে কোনো ছুটি দেওয়া হয়নি ওই স্কুলে। এমতাবস্থায়, স্কুলটি বছরে ৩৬৫ দিন কিভাবে কাজ করে তা বোঝার জন্য, ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশন রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (এনসিইআরটি)-এর টিম চলতি বছরে দু’বার স্কুলটি পরিদর্শন করেছে। ওই স্কুল পরিচালনা করেন শিক্ষক দম্পতি দত্তাত্রেয় এবং বেবীনন্দ সাকাত।

কখনও ছুটি নেননি তাঁরা, বহুবার হয়েছেন সম্মানিত: খবর অনুযায়ী, ২০০১ সালে তাঁরা দু’জনেই ওই সরকারি স্কুলে যোগদান করেন। এরপর থেকে তাঁরা নিরন্তরভাবে কাজ করে চলেছেন। বিগত ২০ বছর যাবৎ স্কুলটিতে শিক্ষার মান উন্নত করার পাশাপাশি একদিনের জন্যও স্কুলে তালা লাগাতে দেননি তাঁরা। এদিকে, ওই মহতী কাজের জন্য তাঁরা জেলা পরিষদ, রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে একাধিক পুরস্কার পেয়েছেন। পাশাপাশি, বেবীনন্দ রাষ্ট্রপতি কর্তৃক জাতীয় শিক্ষক পুরস্কারেও ভূষিত হয়েছেন।

বদলে গিয়েছে স্কুলের ছবি: মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, দত্তাত্রেয় জানিয়েছেন যে, “আমি যখন অন্য স্কুলে ১১ বছর চাকরি করার পর এখানে বদলি হই তখন এই বিদ্যালয়টি চারটি কক্ষ বিশিষ্ট একটি জরাজীর্ণ ভবনে দাঁড়িয়ে ছিল। স্কুলের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল তখন। শিক্ষার্থীও ছিল কম। তারপর আমরা ধীরে ধীরে গাছ লাগানো, বাগান করা, স্কুলের দেওয়ালে আঁকা প্রভৃতি কাজের মাধ্যমে স্কুলটির চেহারা ও পরিবেশকে জীবন্ত করে তুলি। এখানে পড়াশোনার পাশাপাশি শিশুদের অন্যান্য কাজেও উৎসাহিত করার চেষ্টা করা হয়।”

PHOTO 2022 08 29 21 40 07 1 6315e488caa5c

জানা গিয়েছে, ওই স্কুলে খুদে পড়ুয়াদের আঁকা এবং মাটির খেলনা তৈরির মত বিষয়গুলি শেখানো হয়। এছাড়াও, বিভিন্ন চলচ্চিত্র এবং নাটকও দেখানো হয়। স্কুলে রয়েছে ইন্টারনেটের সুবিধাও। মূলত, সেটি একটি মারাঠি মাধ্যমের স্কুল হওয়া সত্ত্বেও, সেখানকার পড়ুয়াদের CBSE এবং ICSE-র পাঠ্য বইও পড়ানো হয়। এছাড়াও এলসিডি স্ক্রিন, কম্পিউটার, এয়ার কন্ডিশনারের সুবিধা সহ একটি ল্যাবরেটরি রুমও রয়েছে ওই স্কুলে।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর