গায়ে ব্যাঙ দেখিয়ে আকুল আর্তি করা সাংবাদিকের ভাইরাল ভিডিওর রহস্য ভেদ, প্রকাশ্যে আরও একটি ভিডিও

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বুধবার পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকায় শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের (Yaas Cyclone) দাপট দেখা যায়। এই ঘূর্ণিঝড় পূর্ব মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় তাণ্ডবনৃত্য চালায়। দিঘার উপকূল অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। তবে ক্ষয়ক্ষতির আন্দাজ এখনই করা সম্ভব নয়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) জানিয়েছেন, ৭২ ঘণ্টা না হলে কতটা ক্ষতি হয়েছে জানানো সম্ভব না। তবে তিনি এও জানিয়েছেন যে, এই ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে প্রায় এক কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

বুধবার শুধু মেদিনীপুরই না, দুই চব্বিশ পরগনাতেও ঝড়ের প্রভাব দেখা যায়। ভরা কোটালের ফলে অজস্র নদী বাঁধ ভেঙে গিয়ে জনবসতিতে জল ঢুকে পড়ে। হাজার হাজার জনজীবন আতঙ্কে পড়ে যায়। বিভিন্ন মিডিয়া সংস্থা সেই ঘটনার রিপোর্টিং করতে এলাকায় পৌঁছে যায়। সেই ঘটনার অনেক ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। ZEE 24 Ghanta -র একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় খুব ভাইরাল হয়, যেখানে একজন সাংবাদিককে গলা জলে নেমে রিপোর্টিং করতে দেখা যায়।

গোসাবা থেকে ওই রিপোর্টিংটি করার সময় সাংবাদিক এটা দেখানোর চেষ্টা করেন যে, একটি ব্যাঙ বাঁচার তাগিদে তাঁর গায়ে উঠে পড়েছে। ওই সাংবাদিকের পাশে আর দু’তিনজন মানুষকেও দেখা যায়, যাদের মধ্যে একজনের হাতে একটি মাছ ছিল। সাংবাদিক ভিডিওতে এও বলেন যে, মাছ ব্যাঙ সবাই এই দুর্যোগে বাঁচার চেষ্টা করছে। ZEE 24 Ghanta -র ভিডিওটি রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়।

অনেকেই ওই ভাইরাল ভিডিও নিয়ে নানান ধরণের মিম করা শুরু করে দেয়। আর তাঁর প্রধান কারণ হল, ভিডিওটি দেখে অনেকেরই ধারণা হয়েছিল যে, সাংবাদিক ইচ্ছে করে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করে মিডিয়ার TRP বাড়াতে চাইছেন। আরেকদিকে, সাংবাদিকের পাশে দাঁড়িয়ে থাকে ব্যক্তিদের এই দুর্যোগের মধ্যে আতঙ্কিত থাকার বদলে হাসতেও দেখা গিয়েছিল, যা দেখে অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠছিল সংবাদটির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে। আর এবার সেই মুহূর্তের ভিডিওটির আসল রহস্য ফাঁস হয়েছে।

স্থানীয় এক ব্যক্তি সেই মুহুর্তটি ক্যামেরা বন্দি করেছিলেন। পর্দার পিছনের ঘটনার ভিডিওটিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওতে দেখা যায় যে, সাংবাদিক ইচ্ছে করে একটি জলমগ্ন এলাকায় নেমেছেন, তাঁর পাশে রাস্তাঘাটে জল নেই, তিনি শুধু নিছকই রিপোর্টিং করার জন্য ওই নির্দিষ্ট এলাকায় নেমেছিলেন। উনি যেখানে নেমেছিলেন, তাঁর পাশেই ছিল রাস্তা। সেখানে জল থাকলেও তা ছিল খুবই কম আর হেঁটে চলাচল করার মতো। সাংবাদিক যেই জায়গায় নেমেছিলেন, সেটি একটি নিচু ভূমি ছিল, সেই কারণে সেখানে জল জমাটা স্বাভাবিক।

দ্বিতীয় ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর সবাই এখন সাংবাদিক আর ওই মিডিয়া হাউসের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। নেটিজেনদের মতে, বিপর্যয়ের মধ্যে এরকম নিচু মানের সাংবাদিকতা করার কি আদৌ দরকার ছিল?

Avatar
Koushik Dutta

সম্পর্কিত খবর