বাংলা হান্ট ডেস্ক: বাঙালিদের কাছে ভ্রমণ মানে দীপুদা অর্থাৎ দীঘা, পুরী, দার্জিলিং। হানিমুন হোক কিংবা উইন্টার ভ্যাকেশন মানেই এই তিন জায়গা। এর বাইরে কখনো বেরোনোর চিন্তা ভাবনাই করেন না। কিন্তু আমাদের পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে এমন একটি জায়গা, যেখানে গেলে আর ফিরে আসতে ইচ্ছেই হবে না। জায়গার নাম কৈখালি (Kaikhali)। কলকাতা থেকে মাত্র ৩ ঘন্টার দূরত্ব। ঘর থেকে পা বের করলেই পৌঁছে যাবেন কৈখালিতে। বিস্তৃত নীল জলরাশি, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আপনার হৃদয় হরণ করতে বাধ্য।
এই শীতেই ঘুরে আসুন কৈখালি (Kaikhali):
অনেকেই এই শীতে ছোট্খাটো ভ্রমণের সুযোগ খুঁজছেন। কিন্তু কোথায় যাবেন ভেবে পাচ্ছেন না। যার ফলে ঘোরার প্ল্যানও ক্যান্সেল করতে হচ্ছে। তবে আর ক্যান্সেল করতে হবে না শীতেই ঘুরে আসুন কৈখালি (Kaikhali)। শিয়ালদহ থেকে এক ট্রেনেই জয়নগর-মজিলপুর। এরপর সেখান থেকে অটো ধরে নিমপীঠ পার করে কৈখালি বড়ো জোর ঘন্টা দেড়েক সময় লাগবে। সবমিলিয়ে কলকাতা থেকে পৌঁছাতে হাতগুণে সময় লাগবে ৩ ঘন্টা কিংবা তার চেয়ে সামান্য বেশি। তাতেই পৌঁছে যাবেন নিজের গন্তব্যস্থলে।
কোথায় অবস্থিত এই কৈখালি: দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনের অংশই কৈখালি। শুধু কৈখালি (Kaikhali) নয়, এখানে যাওয়ার আগে ঘুরে নিতে পারবেন নিমপীঠ রামকৃষ্ণ আশ্রম। তবে বর্তমানে নিমপীঠে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। একসময় যেখানে গ্রামের পরিবেশের ছোঁয়া ছিল, এখন সেখানে শহুরে ছাপ ধরা পড়ছে। তবে রামকৃষ্ণ আশ্রমে আসলে আপনার মনে এক আলাদাই শান্তি নামবে। চারিদিকেই যেন শান্তির বার্তা। পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন চত্বরের আশেপাশে বিভিন্ন রকমের গাছ। মন্দিরের ভিতরে রয়েছে রামকৃষ্ণের মূর্তি, বিবেকানন্দ, সারদাদেবীর ছবি।
আশ্রমটি শুধু আধ্যাত্মিক স্থান হিসেবেই নয় এর আশেপাশে রয়েছে আরো অনেক কিছু দেখার জিনিস। ছেলেমেয়েদের স্কুল, মাটি পরীক্ষাকেন্দ্র, কৃষি গবেষণা কেন্দ্র, হস্তশিল্প প্রশিক্ষণ কেন্দ্র সহ আরও অনেক কিছু। যদিও পর্যটকরা এই নিমপীঠ আশ্রমে আসেন তার পিছনেও রয়েছে বিশেষ একটি কারণ। জানা যায় কৈখালিতে যে আবাস স্থল রয়েছে তা রামকৃষ্ণ মিশন দ্বারাই পরিচালিত। যার জন্য মহারাজের সঙ্গে যাওয়ার আগে দেখা করে যেতে হয়। রামকৃষ্ণ মিশনে আহার সেরে নিয়ে অটো ধরে আপনি চলে যান কৈখালি।
আরও পড়ুনঃ ঠিক যেন আইস কিউব! অনন্ত আম্বানির এই ঘড়ির দাম শুনলে চোখ কপালে উঠবে!
কৈখালিতে গেলে কি দেখতে পাবেন: কৈখালি যাওয়ার সময় রাস্তায় দু’পাশে দেখা যাবে সবুজে ঘেরা গাছপালা। শুনশান রাস্তা সেই সাথে গ্রাম্য, দূষণমুক্ত পরিবেশ দেখতে বেশ ভালো লাগবে। অটো যেখানে নামাবে সেখান থেকেই আপনি চলে যাবেন আপনার আবাসস্থলে। সেখানে দেখতে পাবেন মাতলার মাতাল করা জলের উচ্ছ্বাস। নৌকা ভাড়া করে মাতলা এবং নিমানিয়া দুই নদীর বক্ষের উপর ভেসে বেড়াতে পারবেন। সূর্যাস্তের সময় আকাশের রক্তিম আভা দেখারও সৌভাগ্য হবে।
ঝড়খালিতেও থাকতে পারেন: এক রাত কৈখালিতে (Kaikhali) কাটানোর পর পরের দিন বেরিয়ে পড়তে পারেন ঝড়খালির উদ্দেশ্যে। ম্যানগ্রোভ অরণ্যে ঢাকা এই ঝড়খালি। কপাল ভালো হলে বাঘের গর্জন পর্যন্ত শুনতে পাবেন। নদী পথ দিয়ে ঝড়খালি যেতে সময় লাগবে দুই থেকে আড়াই ঘন্টা মত। কৈখালিতে থাকতে না চাইলে ঝড়খালিতেও থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। চাইলে এখানেও আপনারা থাকতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ শিল্পীদের ‘বয়কট’ প্রসঙ্গে কুণালের কথায় সায় নেই অভিষেকের! তুঙ্গে নতুন জল্পনা
এখন প্রশ্ন হচ্ছে কলকাতা থেকে কৈখালি যাবেন কিভাবে এবং থাকবেন কোথায়: শিয়ালদহ থেকে নামখানা লোকালে চেপে জয়নগর-মজিলপুর স্টেশন। সেখান থেকেই সরাসরি অটো ভাড়া করে নিমপীঠ রামকৃষ্ণ আশ্রম এবং কৈখালি (Kaikhali) যাওয়া যায়। আর গাড়ি নিয়ে আসলে বারুইপুর কাছারিবাজার হয়ে কুলপি রোড দিয়ে যেতে হবে। এখানে থাকার জন্য পর্যটক আবাস রয়েছে, সেখানে আপনি অগ্রিম বুকিং করতে পারেন। নিমপীঠ রামকৃষ্ণ আশ্রমের দ্বারা এই বুকিং করা যায়। পাশাপাশি এখানে বেসরকারি আরও বিভিন্ন হোটেলের ব্যবস্থা রয়েছে। আপনার মনের মত সমস্ত ব্যবস্থা এখানে পেয়ে যাবেন।