‘ঘুষ মন্দিরের প্রসাদ”, হাতেনাতে ধরা পড়ে আজব সাফাই সরকারি আধিকারিকের

বাংলা হান্ট ডেস্ক: নিয়েছিলেন ঘুষ, পড়েছিলেন ধরাও। কিন্তু, এখানেই থেমে থাকেনি ঘটনা। বরং, ঘুষ নেওয়ার স্বপক্ষে আজব যুক্তি দিলেন এক সরকারি আধিকারিক! একদম স্পষ্ট ভাবে তিনি জানিয়ে দিলেন যে, “ঘুষ তো মন্দিরের প্রসাদ। কেউ দিলে তা নিষেধ করতে নেই।”

এদিকে, এক সরকারি আধিকারিকের এমন মন্তব্যে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে সর্বত্র। জানা গিয়েছে যে, বেশ কিছুদিন ধরেই রাজ্যের দুর্নীতিদমন শাখার কাছে খবর আসছিল জয়পুর ডেভেলপমেন্ট অথরিটি-র অফিসে প্রকাশ্যে ঘুষ নিচ্ছেন আধিকারিক থেকে কর্মীরা। সেই খবর পেয়েই ওই অফিসে অভিযান চালান দুর্নীতিদমন শাখার একাধিক আধিকারিক। তখনই একটা বড় ঘুষচক্রের পর্দা ফাঁস করেন তাঁরা।

ইতিমধ্যেই ওই ঘটনায় এক আধিকারিক-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছেন দুর্নীতিদমন শাখার আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে যে, ধৃত আধিকারিকের নাম মমতা যাদব। হাতেনাতে ঘুষ নিতে গিয়ে ধরা পড়ে তিনি জানিয়ে দেন যে, “ঘুষ মন্দিরের প্রসাদ।” এদিকে, রাজস্থান সরকার যখন দুর্নীতি দূর করার জন্য নানা রকম প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, তখন রাজ্যেরই এক সরকারি অধিকারিকের এমন মন্তব্যে চক্ষু চড়কগাছ হয়েছে সকলেরই।

ঘটনার ভিত্তিতে দুর্নীতিদমন শাখার এক আধিকারিক জানিয়েছেন যে, জয়পুরের সিদ্ধার্থনগরের এক বাসিন্দা অভিযোগ জানান, দুই বন্ধু মিলে জমির পাট্টা নেওয়ার জন্য জয়পুর ডেভেলপমেন্ট অথরিটি-র অফিসে গিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু তাঁদের বলা হয়, পাট্টা পেতে গেলে সেখানকার আধিকারিক মমতা যাদবকে ছ’লক্ষ টাকা এবং ইঞ্জিনিয়র শ্যাম মালুকে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা দিতে হবে।

এদিকে, এই ঘুষ নেওয়ার বিষয়টি অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বজরং সিংহের কাছে পৌঁছয়। তারপর থেকেই তিনি একটি দল গঠন করে নজরদারি চালাচ্ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।

শুধু তাই নয়, এরপর রীতিমতো পরিকল্পনার মাধ্যমেই মমতাকে ঘুষ নেওয়ার সময়ে হাতেনাতে ধরেন দুর্নীতিদমন শাখার আধিকারিকরা। পরিকল্পনা মতো জমির পাট্টা নিতে টাকা নিয়ে অফিসে হাজির হয়েছিলেন অভিযোগকারী ওই ব্যক্তি। তাঁর সঙ্গে সাধারণ পোশাকে ছিলেন দুর্নীতিদমন শাখার আধিকারিকরাও।

তখন অফিসের বাইরেই দাঁড়িয়ে ছিলেন ইঞ্জিনিয়র মালু। ওই ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিতেই মালুকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন শাখার আধিকারিকরা। শেষে তাঁকে জেরার মাধ্যমে এর পর আরও তিন দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মীকে ধরা হয়। সবশেষে গ্রেফতার হন মমতাও।

জানা গিয়েছে, ঘুষ নেওয়ার সময়ই একদম হাতেনাতে ধরা পড়েন তিনি। দুর্নীতিদমন শাখার আধিকারিকরা জানিয়েছেন মমতার ঘর থেকে নগদ এক লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা উদ্ধার হয়েছে। এদিকে, এই ঘটনা সামনে আসতেই বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া মিলেছে একাধিক মহল থেকে।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর