বাংলা হান্ট ডেস্ক : তাঁরা সকলেই মেধাবী। পড়াশোনাও করেছেন চুটিয়ে। কিন্তু ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব একটা আশাবাদী নন উচ্চমাধ্যমিকের কৃতীরা (Higher Secondary Topper)। রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড় চলছে। দুর্নীতি ভয়ংকর চেহারা ভেসে উঠছে চোখের সামনে। সেটা তাঁদের মনে কি প্রভাব ফেলছে? তাঁর উত্তর দিলেন উচ্চমাধ্যমিকের কৃতীরা।
২০২২-২৩ উচ্চমাধ্যমিকের মেধাতালিকায় চতুর্থ স্থান পেয়েছেন প্রেরণা পাল। উত্তর ২৪ পরগনার ইছাপুর হাই স্কুলের ছাত্রী তিনি। প্রেরণার কথায় উঠে এসেছে নিয়োগ দুর্নীতির প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই বাচ্চাকে স্কুলে পাঠিয়ে অভিভাবকরা একপ্রকার নিশ্চিত হন যে বাচ্চা স্কুলে কিছু শিখবে। স্কুলে শুধুমাত্র বইয়ের বিদ্যা শেখানো হয় না। মূল্যবোধ, মানবিক চেতনা, এথিক্স শেখার ভিত্তি। বাচ্চা যে বিকশিত হবে তার ভিত্তি স্কুল। সেখানে শিক্ষাক্ষেত্রে এই যে দুর্বিষহ দুর্নীতি সেটা আমাকে ভীষণভাবে ভাবাচ্ছে।
প্রেরণা আরও বলেন, ‘এই যে দেখতে পাই, দাদা-দিদিরা রাস্তায় আন্দোলন করছে, কোনও উচ্চবাচ্য নেই। এটা ভাবায়। এখান থেকে তো বেরতে হবেই। যাঁরা যোগ্য তাঁরা সুযোগ পাচ্ছে। এটা ভীষণভাবে অবসাদমূলক।’ তিনি মনে করেন শিক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার। সেই জায়গাটা এতটা দুর্নীতি যথেষ্ট ভাবায় তাঁকে।
প্রসঙ্গত, প্রেরণার বাবা-মা দুজনেই শিক্ষক। তাঁর দাদুও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। প্রেরণার হতাশা উঠে এসেছে তাঁর কথায়, ‘মানুষ গড়ার কারিগর যাঁরা। সেখানে এমন কিছু মানুষ যাচ্ছেন। তাঁদের মান ও হুঁশ কিছুই নেই।’ নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সাধারণ মানুষদের একাংশের চিন্তাভাবনাও ভাবায় তাঁকে। তাঁর বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে অনেকেই উদাসীন এখনও।
ভবিষ্যতে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সময় পড়াশোনার ফল মিলবে কিনা তা নিয়েও দুশ্চিন্তার কথা লুকোননি প্রেরণা। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা-মা দুজনেই শিক্ষক। সেই সুবিধা সবাই পায় না। সবার বাবা-মা রক্তজল করে এমনভাবে পড়াশোনা করান যাতে শেষে একটা সরকারি চাকরি পাওয়া যায়। তাহলে শেষ বয়সে একটু ভাল ভাবে কাটাতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘আমার চেনা বহু মানুষ রয়েছেন তাঁরা কবে টেট দিয়েছেন, এসএসসি দিয়ে বসে রয়েছেন তাঁরা বেকার। আমি যেহেতু জেনারেল লাইনে পড়াশোনা করছি। তাই আমারও চিন্তা হয়। এতদূর পড়াশোনা করছি, তারপর দাঁড়াতে পারব তো। যখন রাজ্যে এমন দুর্দশা দেখছি। তখন তো চিন্তা হবেই।’