বাংলাহান্ট ডেস্কঃ বিজেপিতে (BJP) যোগ দিতে চলেছেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া (Jyotiraditya Scindia)। দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে এই মেগা দলবদল বৃহস্পতিবারেই হতে পারে। আনুষ্ঠানিকভাবে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখাবেন প্রয়াত কংগ্রেস নেতা মাধবরাও সিন্ধিয়ার (Madhavra Scindia) ছেলে জ্যোতিরাদিত্য।
২১ বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে মঙ্গলবারই কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। অমিত শাহের সঙ্গে একই গাড়িতে চেপে তিনি মোদীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। তারপরই প্রকাশ্যে আসে তাঁর কংগ্রেস থেকে ইস্তফার বিষয়টি। সম্ভবত ১২ মার্চ বিজেপিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিতে পারেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। ইতিমধ্যেই জ্যোতিরাদিত্যের দলে অন্তর্ভুক্তি কথা হয়েছে মোদী-অমিত শাহেরবিজেপি সূত্রে খবর কংগ্রেস থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর জ্যোতিরাদিত্যকে এবার রাজ্যসভার সাংসদ করা হতে পারে, এমনকী তাঁর মন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনাও জোরালো। আগামী ১৩ মার্চ বিজেপির রাজ্যসভার প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেশ করতে পারেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। মধ্যপ্রদেশে বিজেপি সরকার গড়লে উপমুখ্যমন্ত্রী পদে সিন্ধিয়া-ঘনিষ্ঠ কোনও নেতাকেই বসাতে চান মোদী-শাহেরা।
গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়ে সিন্ধিয়া (Jyotiraditya Scindia) বলেন, “আমি মাননীয় জেপি নাড্ডা, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহকে ধন্যবাদ দেব, আমাকে আপনাদের পরিবারে স্থান দেওয়ার জন্য। আমার জীবনে দুটি তারিখ খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম দিন ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০০১। যেদিন আমি আমার বাবাকে হারিয়েছিলাম। ওই দিনটা আমার জীবন বদলে দেয়। দ্বিতীয় তারিখ, ১০ মার্চ ২০২০ যেটা ওঁর ৭৫তম জন্মদিবস ছিল। যেদিন জীবনে নতুন মোড় এসেছে। আমি সবসময় মনে করি, আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত জনসেবা। আর রাজনীতি শুধু ওই লক্ষ্যপূরণের একটি মাধ্যমমাত্র। ১৮ বছর ধরে আমি সেটা করার চেষ্টা করেছি কংগ্রেসে থেকে। কিন্তু, আজ আমার মন ব্যাথিত। আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি, ওই সংগঠনে থেকে জনসেবার লক্ষ্যপূরণ করতে পারছিলাম না।”
একসঙ্গে ২২ বিধায়কের দলত্যাগে কমলনাথের কুর্সি টলমল। কমলনাথ সরকারের পতন এখন সময়ের অপেক্ষা। ফের মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন বিজেপির শিবরাজ সিং চৌহান। যদিও সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ দেবেন বলে আগেই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ।
বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতার দৃপ্ত ঘোষণায় সিঁদুরে মেঘ দেখেছে বিজেপি। তড়িঘড়ি মঙ্গলবার রাতেই মধ্যপ্রদেশের বিজেপি বিধায়কদের দিল্লিতে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পাল্টা কংগ্রেস যাতে বিজেপির কোনও বিধায়ককে ভাঙাতে না পারে সেই কারণে বিধায়কদের কার্যত নজরবন্দি করে রেখেছেন মোদী-শাহেরা।
কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। চিঠিতে তিনি লেখেন, ‘চিরকালই আমি দেশ ও রাজ্যের মানুষের সেবা করতে চেয়েছি। কিন্তু কংগ্রেসে থেকে আমরা তা পারছিলাম না। তাই দল ছাড়তে বাধ্য হচ্ছি।’
মধ্যপ্রদেশে কমলনাথ মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক খুব একটা মধুর ছিল না জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার। একাধিক ইস্যুতে রাজ্য সরকারের সমালোচনাও করতে দেখা গিয়েছে জ্যোতিরাদিত্যকে। সম্প্রতি শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারকে তুলোধনা করেন জ্যোতিরাদিত্য।
মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা ভোটের আগে কংগ্রেসের দেওয়া প্রতিশ্রুতির প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথকে নিশানা করেন জ্যোতিরাদিত্য। তখনই মিলেছিল ইঙ্গিত। জ্যোতিরাদিত্য দল ছাড়তে পারেন বলে জল্পনাও তৈরি হয়েছিল।
মধ্যপ্রদেশ সরকারের এক মন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথের সঙ্গে আলোচনার পরামর্শও দিয়েছিলেন জ্যোতিরাদিত্যকে। তবে এখন আর সেসবের বালাই নেই। কংগ্রেসের সঙ্গে দীর্ঘদিনের পাঠ চুকিয়েছেন প্রয়াত মাধবরাও সিন্ধিয়ার পুত্র। এবার গেরুয়া শিবিরেই মোদী-শাহের হাত ধরে পথ চলা শুরু হবে জ্যোতিরাদিত্যের।