কাকে ঢাকতে চাইছেন? নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পর্ষদকে ধমক, বিচারপতি সিনহার এজলাসে তোলপাড়

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) একের পর এক প্রশ্নবাণে বিদ্ধ পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ (West Bengal Board of Primary Education)। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পূর্বে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কাছে দু’টি নিয়োগ প্রক্রিয়ার সম্পূর্ণ প্যানেল চেয়েছিল হাইকোর্ট। মঙ্গলবার এই নিয়ে হলফনামা দিয়ে পর্ষদ তরফে জানানো হয় যে শিক্ষক নিয়োগের প্যানেল প্রকাশ করার নিয়ম নেই। পর্ষদের সেই বক্তব্য শুবেই উষ্মাপ্রকাশ করেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা (Justice Amrita Sinha)।

বিচারপতির সাফ প্রশ্ন, কাউকে আড়াল করতেই কি প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের প্যানেল প্রকাশ করা হচ্ছে না? প্যানেল প্রকাশ না করে কি কাউকে ঢাকতে চাইছেন? অসুবিধা আছে? বিচারপতির সিনহার মন্তব্য, নিয়োগের প্যানেল খতিয়ে দেখার অধিকার আদালতের রয়েছে।

প্রসঙ্গত, আগেই ২০১৪ সালের টেটের ভিত্তিতে ২০১৬ এবং ২০২০ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্যানেল প্রকাশ করার জন্য পর্ষদকে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। তবে এদিন হলফনামা দিয়ে পর্ষদ জানায়, পূর্বে বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে একটি প্যানেল প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু ২০১৬ সালের নিয়োগের বিধি মেনে জনসমক্ষে প্যানেল প্রকাশের নিয়ম নেই।

আরও পড়ুন: ঝাড়খণ্ডের পর বাংলা! জেল খাটা প্রাক্তন TMC বিধায়কের বাড়ি সহ ৩৫ জায়গায় আয়কর হানা, শোরগোল রাজ্যে

এরপরই প্যানেল প্রকাশ করতে না চাওয়ায় পর্ষদকে ধমক দেন বিচারপতি। বলেন, ‘বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে এক বার প্রকাশ করা হলে দ্বিতীয় বার সেই একই জিনিস প্রকাশে আনতে অসুবিধা কোথায়? আমি প্রাথমিকের প্যানেল দেখতে চাই। মেয়াদ শেষের আগে যে প্যানেল প্রস্তুত হয়। তা আমি দেখতে চাই।’ বিচারপতির মন্তব্য, প্যানেল কারও বাড়িতে গচ্ছিত রাখার সম্পত্তি নয়।

high court

প্রসঙ্গত, এই মামলার আগের শুনানি হয়েছিল ৩০ নভেম্বর। সেই শুনানিতেও আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়ে পর্ষদ। সেই সময় ৯৪ জনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার কথা জানিয়েছিলেন। ওই ৯৪ জনকে শূন্যপদের বাইরে থেকে নিয়োগ করা হয়েছে বলে আদালতে জানিয়েছিলেন পর্ষদের আইনজীবী। শুধু টাই নয়, যে দু’টি প্যানেল প্রকাশ করা হয়েছিল তাও সঠিক নয় বলে জানানো হয়েছিল। প্যানেলের জন্য আদালতে ফের সময় চাওয়া হয়েছিল।

সেই সময় উষ্মাপ্রকাশ করে বিচারপতি অমৃতা সিনহা বলেন, ”আর কত দিন বঞ্চিতেরা অপেক্ষায় থাকবেন! দিন পেরিয়ে যাচ্ছে, তাদের বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে।” পর্ষদকে আরও সাত দিন সময় দেন বিচারপতি। আগামী ৭ ডিসেম্বরের মধ্যে পর্ষদকে হলফনামায় দু’টি নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্যানেল আদালতে জমা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতেই আদালতের প্রশ্নের মুখে পর্ষদ।

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর