কারো পকেটে ১২ টাকা, কারোর আবার পকেট শূণ্য, লকডাউন অবস্থায় পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছে কয়েক হাজার শ্রমিক

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ দেশে লকডাউন (Lockdown) অবস্থা জারী হওয়ার পর সমস্ত যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। যার ফলে সমস্যায় পরে বেশ কিছু শ্রমিক। যারা গুজরাটে (Gujarat) কাজের জন্য গিয়ে আটকে পড়েছিলেন। এখন এই হাজার হাজার অভিবাসী শ্রমিকরা ঠিক করেন যে, যানবাহন না থাকায় গোটা রাস্তাটা তাঁরা পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরবে। এবং তাঁদের এই ছবি প্রকাশ পাওয়ার পর থেকেই এখন প্রশাসন থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ তাঁদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন।

image 222222

মঙ্গলবার রাত থেকে পুরো দেশে লকডাউন অবস্থা জারী হওয়ার পর থেকেই কেউবা বাড়িতে কারাবন্দি হন আবার কেউ কেউ রাস্তায় নেমে আসে। এইসময় এক শ্রমিক মাথায় দুশ্চিন্তা এবং পকেটে মাত্র ১২ টাকা নিয়ে পায়ে হেঁটে বহু কিলোমিটার পথ পেড়িয়ে বাড়ির উদ্যেশ্যে রওনা হন। তাঁর সঙ্গে গুজরাটে কাজের প্রয়োজনে আসা হাজার হাজার অভিবাসী শ্রমিক পায়ে হেঁটে তাদের বাড়িতে যাওয়ার পথটি বেছে নেন। আর তাঁদের এই ছবি প্রকাশে আসতেই সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে প্রশাসন তাঁদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন।

এই শ্রমিকদের মধ্যে উল্লেখ্য হলেন রবীন্দ্র যাদব, যিনি আহমেদাবাদের একটি দোকানে আসবাবের কাজ করেন। তাঁর পকেটে রয়েছে মাত্র ১২ টাকা এবং এটা নিয়েই তাঁকে বাড়ি ফিরতে হবে। তিনি বলেন, ”এখন আমরা শুনেছি যে সরকার ও এনজিও আমাদের সীমান্তে পৌঁছাতে সহায়তা করবে। এখন এটাই একমাত্র আশা। তবে আমাদের শেঠ আমাদের বাড়িতে যেতে বলেছেন। এবং লকডাউনের কারণে এখন আমাদের কাজটিও বন্ধ রয়েছে। সুতরাং এখন আমরা কোন মজুরিই পাব না। আমি জানি যে এখন আমাদের বাড়িতে যাওয়ার পথটি খুব কঠিন”।

unnamed 26
শ্রমিকদের এই দুর্দশার বিষয়গুলি শিরোনমে আসার পরই তাঁদের পুলিশ, এনজিও এবং আরও অনেকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে। কেউ তাদের সীমান্তে পৌছতে সাহায্য করে, তো আবার কেউ তাঁদের খাবার দিয়ে সাহায্য করেন। শ্রমিকদের মধ্যে একজন ৩২ বছর বয়সী রাম প্রসাদ কোরি, মুখে রুমাল বেঁধে রেখেছেন। এই সংকটের পরিস্থিতিতে তাঁর এক পায়ের চটি ছিঁড়ে যায়। কিন্তু তিনি তাঁর কাছে কোন অর্থ না থাকায় তিনি চটি সারাতেও পারেননি এবং নতুন করে কিনতেও পারেননি। তাঁদের চাহিদা তাঁরা তাঁদের পরিবারের লোকদের কাছে এখন ফিরতে চাইছে।

শ্রমিকদের এই বাড়ি ফেরা ছবি প্রশাসনের উত্তেজনাও বাড়িয়ে তুলেছে। তবে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য এবং তাদের গ্রামে ফিরে আসার পরে সেখানে যে কোনও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে কিনা, তা নিয়ে প্রশাসন চিন্তিত। তাঁরা মনে করছেন, এই শ্রমিকরা যদি করোনা আক্রান্ত হন এবং তাঁরা যদি একবার বাড়ি পৌঁছে যান, তাহলে তাঁদের পরিবারের লোকজনও করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়বেন।

Avatar
Smita Hari

সম্পর্কিত খবর