বাংলা হান্ট ডেস্কঃ উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে তৃণমূলের ঘাঁটি খুব একটা শক্ত ছিল না কোনদিনই। আগে যেখানে ছিল কংগ্রেসের দামামা, গত লোকসভা নির্বাচনে কার্যত তার অনেকটাই দখল করে নেয় বিজেপি। যার ফলে উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে প্রায় খালি হাতেই ফিরতে হয়েছিল তৃণমূলকে। এমনকি বিধানসভা নির্বাচনের আগে উত্তরবঙ্গে প্রচারে গিয়ে এ বিষয়ে আক্ষেপ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিও (Mamata Banerjee)। মালদহ থেকে শুরু করে সমস্ত এলাকাতেই তিনি প্রায় কাতর আবেদন জানিয়েছিলেন, উত্তরবঙ্গের মানুষের আশীর্বাদ কি তিনি পাবেন না? ফল কিছুটা ফলেছে বিধানসভা নির্বাচনে। বিজেপির শক্ত ঘাঁটিতে কিছুটা ভাঙন ধরাতে পেরেছে তৃণমূল।
কিন্তু নির্বাচনের পর ঘর বদল এই খেলায় আরও বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পড়ছে উত্তরবঙ্গ বিজেপি (BJP)। কয়েকদিন আগেই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা (Ganga Prasad Sharma)। অনেক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে আলিপুরদুয়ারে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে জেতাতে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। কার্যত তার কিছুটা প্রভাব দেখা যাচ্ছে তিনি ছেড়ে আসার পরেই। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, উত্তরবঙ্গের প্রায় ১০ লক্ষ বিজেপি কর্মী এখন তৃণমূলে যোগ দেবার জন্য কাকুতি-মিনতি করছেন।
তাদের মধ্যে একদিকে যেমন রয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা (Bachchu hasda), সরলা মুর্মু,(Sarala murmu) কমল আচার্যের (Kamal Aacharya) মত দলবদলুরা, তেমনি রয়েছেন,লক্ষ লক্ষ সাধারণ কর্মী। অনেকেই নির্বাচনের আগে ভোল বদলে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। সূত্রের খবর অনুযায়ী, তাদের অনেকেই এখন ভুল স্বীকার করতে মরিয়া। কার্যত গুচ্ছ গুচ্ছ আবেদনপত্র জমা পড়ছে তৃণমূল দপ্তরে।
খবর অনুযায়ী, কোচবিহারের বিভিন্ন ব্লক থেকে প্রায় ১ লক্ষ ৫ হাজার আবেদন জমা পড়েছে তৃণমূলে ফেরার জন্য। আলিপুরদুয়ারে বিজেপি থেকে তৃণমূলে ফিরতে চাইছেন প্রায় ৯০ হাজারেরও বেশি মানুষ। দার্জিলিং এবং কালিম্পংয়ে সংখ্যাটা প্রায় ৪০ হাজার। এছাড়া জলপাইগুড়ি ও মালদা থেকে প্রায় ৭০ হাজার আবেদন এসেছে সাধারণ কর্মীদের। তৃণমূল সূত্রের খবর অনুযায়ী, উত্তর দিনাজপুর এবং দক্ষিণ দিনাজপুর মিলিয়ে তৃণমূলে যোগ দেবার আবেদন জানিয়েছেন প্রায় এক লক্ষ কর্মী।
এই সংখ্যা রীতিমতো মাথা ঘুরিয়ে দিয়েছে বিজেপির। এর আগেই উত্তরবঙ্গের ভাঙন সামলাতে তৎপর হয়ে উঠেছিল বিজেপি। কিন্তু কর্মীদের সংখ্যা এত বেশি হলে ভাঙন রোখা আদৌ সম্ভব হবে কি না তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। উত্তরবঙ্গের তাবড় তাবড় বিজেপি নেতারা ইতিমধ্যেই পরিকল্পনা তৈরি করতে শুরু করেছেন। কার্যত ভাঙন চলছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তেই। কিন্তু উত্তরবঙ্গ বিজেপির খুবই শক্ত ঘাঁটি তাই সেখানে ভাঙন রীতিমত আশঙ্কায় রাখবে তাদের।