বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কয়েকদিন আগে সকল জনস্বার্থ মামলা ছেড়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম (Justice TS Sivagnanam)। সেই সময় ১০০ দিনের কাজের মামলাও ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। এরপর সেই মামলা যায় বিচারপতি সৌমেন সেন (Justice Soumen Sen) ও বিচারপতি মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চে। এবার সেই বেঞ্চের তরফ থেকেও এই মামলা ছেড়ে দেওয়া হল। ফলে বাংলায় ১০০ দিনের কাজের ভবিষ্যৎ নিয়ে ফের অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) যা হল…
১০০ দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সিবিআই তদন্তের আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গ ক্ষেত মজদুর সংগঠনের তরফ থেকে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়। তাদের বক্তব্য ছিল, কেন্দ্র-রাজ্য দ্বন্দ্বের কারণে ভুক্তভোগী হচ্ছেন সাধারণ শ্রমিকরা। কাজ, প্রাপ্য মজুরি কিছুই তাঁরা পাচ্ছেন না। কাজ ও মজুরি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন তাঁরা।
এরপর হাইকোর্টের তরফ থেকে যাচাই কমিটি তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়। গত এপ্রিল মাসে আদালতে রিপোর্ট দেয় ওই কমিটি। জানানো হয়, ১০০ দিনের (100 Days Work) দুর্নীতিতে রাজ্যের ৪ জেলা থেকে ২.২ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ কখন DA মামলা সুপ্রিম কোর্টে উঠবে? শুনানি নিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মীদের জন্য বড় আপডেট
কমিটির তরফ থেকে আরও জানানো হয়, ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগে কেন্দ্রীয় দল রাজ্য পরিদর্শনে এসেছিল। হুগলি, মালদহ, পূর্ব বর্ধমান ও দার্জিলিং- এই চার জেলায় ৫ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়। কেন্দ্রীয় দল সেই সময় জানায়, আসল সুবিধাভোগীদের বঞ্চিত করে এই অর্থ অন্য ব্যক্তিদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছিল। সেই টাকার খানিকটা অংশ উদ্ধার সম্ভব হয়েছে। যে টাকা উদ্ধার হয়েছে সেটা কেন্দ্রের কাছে ফেরত পাঠানো হবে।
সেকথা শুনে হাইকোর্ট পাল্টা কেন্দ্রের কাছে জানতে চায়, সংশ্লিষ্ট চার জেলা বাদে বাংলার অন্যান্য জায়গায় কি ১০০ দিনের কাজ শুরু করা যাবে? বাকি জায়গায় কাজ শুরু হলে কেন্দ্র (Central Government) কি টাকা দেবে? যে টাকা উদ্ধার হয়েছে সেটা প্রকৃত সুবিধাভোগীদের দেওয়া নিয়েও প্রশ্ন তোলেন উচ্চ আদালত।
সেই সঙ্গেই রাজ্যকে (Government of West Bengal) প্রশ্ন করা হয়, জব কার্ড হোল্ডারদের কেন বেকার ভাতা দেওয়া হবে না? রিপোর্ট দিয়ে আদালতকে জানানো নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। মে মাসে মামলার পরবর্তী শুনানি হওয়ার কথা ছিল। সেই সময় কেন্দ্রের আইনজীবীকেও উল্লিখিত প্রশ্নগুলির জবাব জেনে আসতে বলেছিল প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানমের বেঞ্চ।
তবে মে মাসে শুনানি হওয়ার আগেই হাইকোর্টের (Calcutta High Court) প্রধান বিচারপতি সকল জনস্বার্থ মামলা ছেড়ে দেন। এরপর এই মামলা যায় বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চে। এবার সেই বেঞ্চও এই মামলা ছেড়ে দিল। ফলে বাংলায় ১০০ দিনের কাজ নিয়ে তৈরি হল ঘোর অনিশ্চয়তা।