বাংলা হান্ট ডেস্ক: মুড়িগঙ্গার উপর গঙ্গাসাগর (Ganga Sagar) সেতু তৈরি করার কথা আগেই ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। ২০২৪-র লোকসভা ভোটের প্রচারে গিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, ২ থেকে ৩ বছরের মধ্যেই এই সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হবে। এই সেতু নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হলে তীর্থযাত্রীদের যাত্রা আরও সহজ হবে।
আর এবার লোকসভা ভোট মিটতেই গঙ্গাসাগর সেতু তৈরির কাজে তৎপরতা দেখতে শুরু করেছে রাজ্য সরকার। প্রসঙ্গত এই সেতু নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যেই জমি অধিগ্রহণের জন্য স্থানীয়দের সঙ্গে কথাও বলেছে রাজ্য সরকার। তাতে ১০০-এর বেশি বাসিন্দা জমি দিতে রাজি হয়েছেন।
প্রস্তাবিত গঙ্গাসাগর সেতুর জন্য কাকদ্বীপ এবং সাগরের মোট ১২ একর জমির প্রয়োজন। এর মধ্যে কিছু জমি সরকারি মালিকানাধীন হলেও অধিকাংশ জমিই হল ব্যক্তিগত মালিকানাধীন। জমির মালিকদের জানানো হয়েছে তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। ক্ষতি পূরণ পাওয়ার ব্যাপারে জানতেই ১০০- এর বেশি মালিক জমি দিতে সম্মত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: হাওড়া স্টেশন থেকে জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতার! তাঁর মাথা খারাপ বলে দাবি পরিবারের
ইতিমধ্যেই এই জমি বাবদ কত খরচ হতে পারে তার হিসেব কষে ফেলেছে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এইসব জমির জন্য ক্ষতিপূরণ বাবদ খরচ হবে ২০ কোটি টাকা। তবে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে একটি বিশেষ পদ্ধতিতে। আসলে জানা যাচ্ছে এই সেতু নির্মাণের জন্য যতটা জমির প্রয়োজন হবে সেই অনুযায়ীই ক্ষতিপূরণ দেবে সরকার।
জানা যাচ্ছে এই কচুবেড়িয়া এবং কালীনগরে সাড়ে ৪ একর জমির প্রয়োজন হবে। সেই জমির অধিকাংশই নাকি ফাঁকা রয়েছে। তবে সেখানে নাকি দুটি জমিতে পানের বরজ রয়েছে। সেগুলি অন্যত্র সরানোর পাশাপাশি ভেঙে ফেলা হবে একজনের বাড়ি। জানা যাচ্ছে ওই অঞ্চলে মোট ৩৫ জন বাসিন্দা জমি দিতে রাজি হয়েছেন। তাদের বক্তব্য, গঙ্গাসাগর যাওয়ার জন্য সেতু তৈরি হলে তারা খুবই উপকৃত হবেন। তাই তারা জমি দেওয়ার জন্যও সম্মত হয়েছেন।
সূত্রের খবর, মালিকরা নো অবজেকশন সার্টিফিকেট দিলেই সরকার জমি অধিগ্রহণ শুরু করে দেবে। সাগরে ৪ একর জমির দাম পড়বে ১০ কোটি টাকা। অন্যদিকে, কাকদ্বীপ লট ৮ আশ্রম মোড়ে ৭.৭৫ একর জমির দাম পড়বে প্রায় সাড়ে ৯ কোটি টাকা। সেখানকার ৮০ থেকে ৯০ জন বাসিন্দা জমি দেওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, গঙ্গাসাগর সেতুর দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ৪.৭৬ কিলোমিটার। যেহেতু মুড়িগঙ্গা দিয়ে অনেক জাহাজ চলাচল করে তাই নদীর জলস্তর থেকে ১২ থেকে ১৩ ফুট উচ্চতায় সেতুটি নির্মাণ করা হবে। আগে এই সেতুর নির্মাণ খরচ ধরা হয়েছিল ১২০০ কোটি টাকা। তবে বর্তমান হিসেব অনুযায়ী, এর খরচ হবে প্রায় ১৫০০ কোটি টাকা।