৩৩,০০০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে ১৯০ ফুটের গ্রহাণু! NASA জানাল চাঞ্চল্যকর তথ্য

বাংলা হান্ট ডেস্ক: মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA (National Aeronautics and Space Administration) অ্যাস্টরয়েড অ্যালার্টের মাধ্যমে পৃথিবীর কাছাকাছি আসা পাথরের টুকরো বা গ্রহাণু সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করে। বর্তমানে প্রায়শই সংশ্লিষ্ট মহাকাশ গবেষণা সংস্থার তরফে গ্রহাণুর সতর্কতা জারি করা হচ্ছে। এমতাবস্থায়, মহাকাশ বিজ্ঞানীসহ জ্যোতির্বিদ্যায় আগ্রহীরা এই গ্রহাণুগুলির গতিবিধির ওপর নজর রাখছেন।

উল্লেখ্য যে, সৌরজগতে ৮ টি গ্রহ এবং ৫ টি ক্ষুদ্র গ্রহ রয়েছে। এছাড়াও, সৌরজগতে ২০০ টিরও বেশি উপগ্রহ রয়েছে। তবে এর চেয়ে আরও বেশিসংখ্যক গ্রহাণু রয়েছে। যাদের সংখ্যা হল ১২ লক্ষ ৯৮ হাজার ৩৬৮ টি। এমতাবস্থায়, গ্রহাণুর মতো পাথুরে টুকরোগুলি কখনও কখনও পৃথিবীর কক্ষপথে চলে আসে এবং তখন পৃথিবীর সাথে এগুলির সংঘর্ষের প্রবল সম্ভাবনাও থাকে। কারণ গ্রহাণু এবং পৃথিবীর মধ্যে তখন দূরত্ব খুব কমে আসে।

তাই নাসার জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরি (JPL) ক্রমাগত এই গ্রহাণুগুলি ট্র্যাকিং করে। এদিকে, JPL সম্প্রতি পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা একটি ভারি পাথরের বিষয়ে সতর্কতা জারি করেছিল। মূলত, NASA Asteroid 2023 MG6-এর জন্য একটি সতর্কতা জারি করে। এটি একটি ৮৯০ ফুটের গ্রহাণু। যা আকারে ফুটবল স্টেডিয়ামের মতো বড়ো।

এদিকে, প্রায় ৯০০ ফুটের এই বিশালাকার পাথুরে খণ্ডের পর এখন পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে আরেকটি গ্রহাণু। এই গ্রহাণুটি 2023 MG6-এর মতো বড় নয়। তবে এটি আকারে খুব একটা ছোটও নয়। এটির নাম হল Asteroid 2020 UQ3। যা ক্রমাগত পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে।

গ্রহাণু 2020 UQ3-র প্রসঙ্গে জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরির (JPL) ওয়েবসাইটে লেখা হয়েছে যে, এটি একটি ১৯০ ফুটের পাথরের টুকরো যা পৃথিবী থেকে প্রায় ১,২২০,০০০ কিলোমিটার দূরত্বে আসতে চলেছে। অর্থাৎ গ্রহাণুটি প্রায় ১২ লক্ষ কিলোমিটারের কাছাকাছি আসতে চলেছে। এই দূরত্ব অত্যন্ত কম। NASA জানিয়েছে, কোনো গ্রহাণুর পৃথিবীর ৭৫ লক্ষ কিলোমিটারের কাছাকাছি আসাটাই বিপজ্জনক হতে পারে। উল্লেখ্য যে, Asteroid 2020 UQ3-র গতি প্রতি ঘন্টায় ৩৩, ৩৮৭ কিলোমিটার বলা হয়েছে। অর্থাৎ এটি ৩৩ হাজার কিলোমিটারের বেশি গতিতে পৃথিবীর দিকে এগিয়ে আসছে।

190-foot asteroid coming towards the earth

এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, Apollo Group-এর অন্তর্গত এই গ্রহাণুটিকে ক্রমাগত ট্র্যাক করছে NASA। 1862 Apollo গ্রহাণুর পরে এই গ্রহাণুগুলির নামকরণ করা হয়। যেগুলি জার্মান জ্যোতির্বিজ্ঞানী কার্ল রেইনমুথ আবিষ্কার করেছিলেন। এমতাবস্থায়, প্রশ্ন উঠতে পারে যে তাহলে কি এটি পৃথিবীতে আঘাত করে বিপদ ডেকে আনতে পারে? যদিও, NASA এখনও এই গ্রহাণুর পৃথিবীতে আঘাত করার মতো তথ্য প্রকাশ করেনি। সেই কারণেই এই গ্রহাণু থেকে পৃথিবীর আপাতত বিপদের সম্ভাবনার বিষয়টি সম্পর্কেও কিছু জানানো হয়নি। তবে, কোনো বড় গ্রহাণুর যদি পৃথিবীর সঙ্গে ধাক্কা লাগে, তাহলে তা বিপদ ডেকে আনতে পারে।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর