বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্কঃ আইপিএলের (IPL) ইতিহাসে এমন ঘটনা কখনো আগে ঘটেনি। একটি ম্যাচে দুই দলেরই কোনও একজন ক্রিকেটার শতরানের মুখ দেখেছেন। কিন্তু গতকাল রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ (SRH) বনাম রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর (RCB) ম্যাচে ঘটলো এমনই ঘটনা। একই ম্যাচে নিজেদের দলের হয়ে শতরান করলেন হেনরিক ক্লাসেন (Heinrich Klassen) এবং বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। যদিও শেষ পর্যন্ত ম্যাচ ছিনিয়ে নিয়ে গেল বিরাট কোহলির আরসিবি।
সানরাইজার্সের এই অত্যন্ত খারাপ মরশুমে তাদের একমাত্র আশার আলো হিসাবে ছিলেন হেনরিক ক্লাসেন। দল খারাপ করলেও তিনি অসাধারণ পারফরম্যান্স করেছেন যেদিন থেকে দলে সুযোগ পেয়েছেন। কালকেও তার ইনিংসটি সাজানো ছিল ৮ টি চার এবং ৬ টি ছক্কা দিয়ে। এসআরএইচের ইতিহাসে এটি ছিল কোনও ক্রিকেটারের দ্বিতীয় দ্রুততম শতরান। তবে হ্যারি ব্রুক (২৫) ছাড়া আর কেউ তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি। আরসিবির বোলাররা অনেক চেষ্টা করেও তাকে আটকাতে পারেননি শতরানের আগে। তার দৃষ্টিনন্দন ব্যাটিং দেখে সচিন টেন্ডুলকার পর্যন্ত তার প্রশংসা করেছেন।
প্রথম ইনিংসে অত্যন্ত আগ্রাসী ব্যাটিং করে শতরান করেছিলেন হেনরিক ক্লাসেন (১০৪)। দ্বিতীয় ইনিংসে তার পাল্টা দিয়ে নিজের ষষ্ঠ আইপিএল শতরানটি করলেন বিরাট কোহলি। তার ইনিংসটা কি দক্ষিণ আফ্রিকার তারকার চেয়ে বেশি মনোমুগ্ধকর ছিল। এই নিয়ে হয়তো প্রশ্ন থেকে যাবে। কিন্তু ভক্তরা এইভাবে সন্তুষ্ট হবেন যে কাল তাদের প্রিয় চেজ মাস্টার বিরাট কোহলিকে মাঠে নিজেরে পরিচিত ছন্দে ফিরতে দেখা গেছে এমন একটি দলের বিরুদ্ধে যাদের বিরুদ্ধে শেষ দুইবারের সাক্ষাতে তিনি গোল্ডেন ডাকে আউট হয়েছিলেন।
ক্রিস গেইলের সঙ্গে এই মুহূর্তে আইপিএলে যুগ্মভাবে সবচেয়ে বেশি শতরান করার রেকর্ডটি এখন বিরাটের নামের সাথে জুড়ে গেলো। ভবিষ্যতে তিনি এই রেকর্ডটি ভেঙেও ফেলতে পারেন। আর বর্তমানে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শতরান করার রেকর্ডটিও তার নামের পাশেই জ্বলজল করছে। আজ তিনি আরসিবির জার্সি গায়ে ৭৫০০ রানের গণ্ডিও পেরিয়ে গিয়েছেন। এটি ছিল এই আইপিএলে তার প্রথম শতরান। কিন্তু শতরানের চেয়েও বেশি তিনি যেভাবে দৃষ্টিনন্দন ব্যাটিং করে কপিবুক শট খেলে এই ইনিংসটি গড়েছেন তা নিঃসন্দেহে প্রশংসাযোগ্য। আজ তিনি ১০৩ মিটারের দূরত্বের একটি ছক্কা মেরেছিলেন যা সচরাচর তার ব্যাট থেকে দেখা যায় না।
সানরাইজার্স বোলাররা আজ কোনভাবেই আটকাতে পারেননি তাকে। অনেকেই আশঙ্কা করছিলেন যে পাওয়ার প্লে-তে আগ্রাসী ব্যাটিং করার পরে তিনি থমকে যাবেন। কিন্তু ৩৫ বলে নিজের অর্ধশতরান পূরণ করার পর বাকি ৫০ রান করতে বিরাট কোহলি সময় নেন ১৭ বল। আর আজকের ৬৩ বলে ১০০ রানের ইনিংসটি সাজানো ছিল ১২ টি চার ও ৬ টি ছক্কা দিয়ে। পরে কোহলি এবং দু প্লেসিস আউট হয়ে গেলেও ব্রেসওয়েল ও ম্যাক্সওয়েল জয়ের জন্য সামান্য যে কাজটুকু প্রয়োজন ছিল সেটুকু সেরে ফেলেন চার বল বাকি থাকতেই।