বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রতিটি চুরির ঘটনাই বিবেচিত হয় বড় অপরাধ হিসেবে। কিন্তু এবার যে ঘটনাটি সামনে এসেছে তা রীতিমতো সবাইকেই অবাক করেছে। শুধু তাই নয়, মানবিকতার নিরিখে এহেন চুরির ঘটনাকে পুরোপুরি অপরাধ বলা যেতে পারে কি না, এই প্রসঙ্গেও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। মূলত, দিল্লিতে (Delhi) সম্প্রতি চার সদস্যের একটি গ্যাং এক মাসেই চুরি করে ফেলে ২০ টি গাড়ি। এমতাবস্থায়, পুলিশের তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে তারা ধরাও পড়ে যায়। আর তারপরেই জানা যায় সেই করুণ সত্যি।
এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ওই চার সদস্যের গ্যাংয়ের লিডার আশিস ওরফে আশু বেশ কয়েক বছর ধরে ব্লাড ক্যানসারে ভুগছে। এমতাবস্থায়, ২৯ বছরের আশুর চিকিৎসার জন্য দরকার বিপুল অর্থের। মূলত, কেমোথেরাপি থেকে শুরু করে বোন ম্যারো প্রতিস্থাপনের জন্যই দরকার ওই অর্থ। আর সেই টাকার সংস্থানের জন্যই একের পর এক গাড়ি চুরি করতে থাকে আশিসের বাকি শাগরেদরা।
ইতিমধ্যেই গত সোমবার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের নাম হল লাকি (৩৬), সাফিক (২১), মাজিম আলি (২৫) এবং রাম সঞ্জীবন (৬২)। তারা দিল্লি এবং তার আশপাশের এলাকা থেকে এক মাসের মধ্যে প্রায় ২০ টি গাড়ি চুরি করেছে বলেও জানা গিয়েছে। পাশাপাশি, ডিসিপি (দক্ষিণ-পশ্চিম) মনোজ সি জানিয়েছেন, ধৃত লাকির খুড়তুতো ভাই হল আশিস। বর্তমানে ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে আশিসের চিকিৎসা চলছে হাসপাতালে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, এর আগেও তাদের বিরুদ্ধে গাড়ি চুরির অভিযোগ ছিল। মূলত, গাড়ি চুরির পরে সেগুলিকে ভেঙে তার যন্ত্রাংশ বিক্রি করত তারা। এমতাবস্থায়, এক মাসের মধ্যে পরপর গাড়ি চুরির কারণে বিষয়টি আরও বেশি করে পুলিশের নজরে আসে। পাশাপাশি, সন্দেহও হয় তাদের। পরবর্তীকালে তদন্ত চালিয়ে পুলিশ পাকড়াও করে এই চারজনকে।
যদিও, পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, হাসপাতালে চিকিৎসা চলার কারণে আশিসকে গ্রেফতার করা হয়নি। গত ৬ বছর ধরে ক্যানসার বাসা বেঁধেছে আশিসের শরীরে। তার শারীরিক অবস্থাও খুব একটা ভালো জায়গায় নেই। চিকিৎসকদের তরফে তার বোন ম্যারো প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, চলছে কেমোথেরাপিও। যার ফলে খরচ হতে পারে ১০ লক্ষেরও বেশি টাকা। আর সেই টাকা জোগাড় করতেই গাড়ি চুরি শুরু করে আশিসের শাগরেদরা।