বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আগামী একুশে জুলাই ধুমধাম করে পালিত হতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) ‘শহীদ দিবস’ অনুষ্ঠান। বিগত দুই বছর করোনা (Corona) মহামারীর কারণে না হওয়ায় এ বছর ‘একুশে জুলাই’ সমাবেশের দিকে নজর রয়েছে গোটা বাংলার। বিভিন্ন জেলার অসংখ্য মানুষ এ বছর ভিড় জমাতে চলেছেন বলে খবর আর এর মাঝে সমাবেশ উপলক্ষ্যে বাংলার সকল সরকারি হাসপাতালগুলিকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিল স্বাস্থ্য দপ্তর, যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
উল্লেখ্য, এভাবে কোনও সমাবেশের পূর্বে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে আগাম প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া একপ্রকার নজিরবিহীন বলা চলে। অতীতে এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা দেখেনি বাংলা। ফলে স্বভাবতই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে, কিভাবে একটি সমাবেশকে কেন্দ্র করে শাসক দল এহেন নির্দেশিকা জারি করতে পারে। যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, “গত বছর বিধানসভা ভোটে বিপুল পরিমাণে জয়লাভ করেছে তারা। তার ওপর করোনার জন্য দুই বছর জনসমক্ষে এই দিনটি পালন করা সম্ভব হয়নি। তাই এবছর প্রচুর পরিমাণে ভিড় হবে বলেই আগাম সর্তকতা নিয়ে রাখা হচ্ছে।”
গত ৭ই জুলাই রাজ্য পুলিশ এবং ট্রাফিক অ্যান্ড রোড সেফটির পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য সচিবকে একটি চিঠি পাঠানো হয়। সূত্রের দাবি, এই চিঠিতেই শহীদ দিবস প্রসঙ্গে সকল সরকারি হাসপাতাল গুলিকে প্রস্তুত রাখার আবেদন করা হয়। একুশে জুলাই-এ বিশাল পরিমাণে ভিড়ের আশঙ্কা প্রকাশ করে ব্লাড ব্যাঙ্ক এবং মেডিকেল সংস্থাগুলিকেও তৈরি থাকার নির্দেশ জারি করা হয়েছে বলে খবর। সম্প্রতি, বাংলার স্বাস্থ্য অধিকর্তা সকল জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের কাছে এই সংক্রান্ত একটি নির্দেশিকা পাঠিয়েছেন বলে সংবাদ মাধ্যম সূত্র মারফত জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, সেই নির্দেশিকায় জাতীয় সড়কের পাশাপাশি রাজ্য সড়ক এবং অন্যান্য স্থানে সকল সরকারি হাসপাতালগুলিকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে একুশে জুলাই-এর দুই দিন আগে থেকেই এই নিয়মটি কার্যকর করা হতে চলেছে। শাসকদলের পক্ষ থেকে সকল মানুষের কথা চিন্তা করেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হতে চলেছে বলে মত প্রকাশ করা হয়।
তবে সরকার যাই বলুক না কেন, এই প্রসঙ্গে বিরোধীরা একাধিক প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছে তাদের দিকে। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “এবছর প্রথম এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এর পিছনে কারণ কি? পঞ্চায়েত নির্বাচন সামনে রয়েছে, তার আগে তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব শুরু হয়ে গিয়েছে। তার জন্য কি এই সিদ্ধান্ত?” অপরদিকে বিজেপির দাবি, “প্রশাসন নিজেদের ইচ্ছামত সবকিছু করে চলেছে। এটা তার ফল। গোটা রাজ্য জুড়ে শাসক দল নিজেদের ইচ্ছামত সকল পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে।”
অবশ্য বিরোধীদের এ সকল সমালোচনাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ ঘাসফুল শিবির। এদিন তৃণমূল নেতা তাপস রায় বলেন, “করোনার কারণে দু বছর সমাবেশ হয়নি। সেই কারণে এ বছর শহীদ দিবস উপলক্ষ্যে প্রচুর মানুষের সমাগম হবে বলেই আশা করা হচ্ছে। তাই সরকার চায় না কোনরকম খারাপ ঘটনা ঘটুক। সেই কারণে অনুষ্ঠানের আগে আমরা সব রকম সতর্কতা অবলম্বন করে চলছি।”