বাংলা হান্ট ডেস্ক : মৃত্যুর মাঝেই নবজীবনের জয়গান। ১২৮ ঘণ্টা পর তুরস্কে ভূমিকম্পের (Turkey – Syria Earthquake) ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে উদ্ধার হল এক শিশুকে। দু’মাস বয়সি ওই শিশু টানা ১২৮ ঘণ্টা ধ্বংসস্তূপের নীচেই চাপা পড়ে ছিল। সে বেঁচে থাকবে, তা আশা করেনি প্রায় কেউই। জীবিত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা গিয়েছে। ধ্বংসস্তূপ সরতেই শিশুর কান্নার শব্দ পেয়ে আনন্দে লাফিয়ে উঠেছেন উদ্ধারকারীরা।
জানা যাচ্ছে, তুরস্কের হাতায় প্রদেশের একটি জায়গায় ধ্বংসস্তূপের ভিতর থেকে উদ্ধার করা হয় ওই শিশুকে। দীর্ঘ ১২৮ ঘণ্টা ধরে ধ্বংসস্তূপের নীচেই চাপা পড়েছিল ওই শিশু। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষ উদ্ধারকারী দলের সঙ্গে যখন ভেঙে পড়া বাড়িঘরের নীচে কেউ বেঁচে রয়েছে কি না, খুঁজে দেখছিলেন, সেই সময়ই তারা ওই শিশুটিকে দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় উদ্ধারকাজ। ঘণ্টাখানেকের প্রচেষ্টায়, ভারী সিমেন্টের স্ল্যাব সরিয়ে উদ্ধার করা হয় দুই মাসের শিশুকে। ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকে যখন শিশুটিকে বের করে আনা হয়, তখন রাস্তার দুই ধারে জড়ো হয়েছিলেন অসংখ্য মানুষ। উদ্ধারকারী দল শিশুটিকে বের করে আনতেই হাততালি, উচ্ছাসে মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা।
তুরস্কের একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পাঁচ দিন পর গতকাল শনিবার দুই মাসের শিশুটি ছাড়াও আরও বেশ কয়েকজনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে আছে ২ বছর বয়সী এক শিশু, ৬ মাসের এক অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং ৭০ বছর বয়সী এক মহিলাও।
তুরস্কে সোমবারের ভূমিকম্পে এখনও পর্যন্ত ২৮ হাজার ৬১৭ জন নিহত হয়েছেন। ১৯৩৯ সালের পর এটি দেশটিতে আঘাত হানা সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প। সোমবারের ভূমিকম্পে সিরিয়ায়ও এ পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
তবে শুধু চাপা পড়ায় নয়, পর্যাপ্ত খাবারের অভাব এবং প্রবল ঠান্ডাতেও মৃতের সংখ্যা উত্তরোত্তর বাড়ছে বলে ধারণা। এখনও পর্যন্ত অষংখ্য মানুষ গৃহহীন অবস্থায় রাস্তায় রাত কাটাচ্ছেন। সরকারের পক্ষ থেকে ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে ঠিকই, তবে তা পর্যাপ্ত নয়। শনিবার রাতেও বহু মানুষকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এভাবে ধ্বংসস্তূপের তলায় আর কতদিন মানুষ জীবিত থাকবেন, সেটাই এখন ভাবিয়ে তুলেছে উদ্ধারকারী দলগুলিকে।