অমিত সরকার ঃদেহে মনেপ্রাণে আত্মায় হয় একটি পূর্ণাঙ্গ মানুষ। একটি সপ্রাণ শিশু পৃথিবীর বুকে জন্ম নেয় মাতৃগর্ভ থেকে। যেহেতু সে সজীব সেহেতু তার প্রাণের অস্তিত্ব প্রশ্নাতীত। আর প্রাণের গভীরে আত্মার উপস্থিতি বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। কিন্তু দেহের বা মনের দিক থেকে মুখ বধির খণ্ড পঙ্গু দৃষ্টিহীন দুর্বল বুদ্ধি সম্পন্ন হলেই শিশুকে আমরা বলি প্রতিবন্ধী। কিন্তু একটি শিশু যখন মাতৃক্রোড়ে তার পূর্ণাঙ্গ রূপ নিয়ে জন্মগ্রহণ করে তার জীবন হয়ে ওঠে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আর সেই শিশুটি মা-বাবার কাছে হয় এতটাই আদরের যে তার প্রতিটি মুহূর্ত যেন তার পিতা-মাতার স্বর্ণোজ্জ্বল ভাবে লিপিবদ্ধ রাখতে চায়। তাদের জীবনের ডাইরিতে বিশেষ করে তার শিশুর জন্মদিনের দিনটি আরো বেশি তার কাছে স্মৃতির স্বর্ণযুগের দলিল করে রাখবার একটা পন্থা। আধুনিক যুগের পিতা-মাতা কিন্তু জন্মদিন পালন করে থাকে অনেকের নাচানাচি গানের আরম্ভ জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালন করে। কিন্তু ঘটেছে এবার ঠিক তার বিপরীত ঘটনা। শুনলে আপনি কেন? যে কোন মানুষের অবাক হতে পারেন।
পশ্চিমবঙ্গের এক অদ্ভুত শহর যে শহরের নাম হয়তো প্রান্তিক মানুষের কাছে অজানা। উত্তর দিনাজপুর কালিয়াগঞ্জ। সেখানে এক দম্পতির শিশুর জন্মদিনে পালন করল রক্তদান শিবির। গত বৃহস্পতিবার তার জন্মদিন ঘিরে ছিল এমনই উৎসাহ। এর মাধ্যমে সমাজে যখন রক্তের ভয়াবহতা নিয়েছে। রক্তদান শিবিরে হসপিটালে নার্সিংহোমে রক্তের জন্য মানুষ হাহাকার করছে। আর সেই মুহূর্তে এমন পদক্ষেপ সত্যি যেন সমাজকে এক নতুন চশমা পরিয়ে দিল। কালিয়াগঞ্জ এর শুভাশিস দাস ও তার একমাত্র কন্যা সন্তান ও তার স্ত্রী। যাদের নিয়েই তার দুনিয়া। দম্পতি পেশায় শিক্ষক। কিন্তু তাদের শিশুর প্রতি শিশুকে নতুন ভাবে সমাজকে দেখানোর আগ্রহ প্রবল। তাইতো তারা ভীষণ উৎসাহিত ছিল বিষয়টি নিয়ে। রক্তদাতাকে নিয়ে জন্মদিনে পালনে উপস্থিত হয়েছিলেন মহাবীর ভবনে। যাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বহুদিন ধরে রক্তদান শিবিরের সাথে জড়িত এক উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব সন্তোষ বেঙ্গানি, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মধ্যে গৌতম বিশ্বাস, ভারত সেবাশ্রমের স্বামীজী উৎপল মহারাজ, আটঘরা মঠের মহারাজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। রক্তদান শিবির করে এই অভিনব পন্থা জন্মদিন পালন সমাজ তথা কিছু ব্যক্তির মনে এমন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে যা সত্যি হয়তো দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।