খাতায় কলমে রয়েছে সুন্দর রাস্তা, বাস্তবে নেই একটিও ইট! ভ্যানিশ পথশ্রী প্রকল্পের ৩০ লাখ টাকাও

বাংলাহান্ট ডেস্ক : মুখ্যমন্ত্রীর (Chief Minister) পথশ্রী প্রকল্প। এলাকার সাধারণ মানুষের রাস্তা নিয়ে সমস্যা সমাধানের জন্য মুখ্যমন্ত্রী শুরু করেন এই প্রকল্পটি। এই প্রকল্পের মাধ্যমে এলাকার উন্নয়নে সাধারণ মানুষ উন্নত রাস্তার দাবি জানালে সেই রাস্তার উন্নয়নে সঠিক পদক্ষেপ করবে রাজ্য সরকার। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের সেই প্রকল্পের আড়ালেই চলতে ব্যাপক দুর্নীতি। পথশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে রাস্তার উন্নয়নের জন্য সময় মতো টাকা বরাদ্দ তো হচ্ছে কিন্তু কাজের কাজ হচ্ছে না কিছুই।

আদতে রাস্তা তৈরি না করেই খাতা-কলমে রাস্তা তৈরির ৩০ লক্ষ টাকা চুরি অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক কাজিয়া। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় সোনারপুর ব্লকের প্রতাপ নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের শিশুমঙ্গল পিএফ স্কুল থেকে প্রসাদপুর মেন রোড পর্যন্ত প্রায় ২৪৩০ স্কোয়ার মিটার রাস্তা তৈরি হওয়ার কথা ছিল পথশ্রী প্রকল্পের আওতায়। যার জন্য অনুদান মেলে ৩০ লক্ষ টাকা। এই রাস্তার শিলান্যাস করেছিলেন সোনারপুর দক্ষিনের তৎকালীন বিধায়ক জীবন মুখোপাধ্যায়। ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে রাস্তা তৈরি হওয়ার কথা ছিল। শিলান্যাসের পর দু’বছর কেটে গেলেও রাস্তার দু’পাশে কিছু ইট ছাড়া আর কিছুই এসে পৌঁছয়নি। আর এরপরই তীব্র ক্ষোভ তৈরি হতে শুরু করেছে এলাকাবাসীর মধ্যে।

Sonarpur Corruption

পথশ্রী প্রকল্পে মাধ্যমে ২৪৩০ স্কোয়ার মিটার রাস্তা ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে পুরো রাস্তা ঝামা ইটের হওয়ার কথা। কিন্তু সেই রাস্তায় রাস্তার পাশে কিছু ইট ছাড়া কাজের কাজ হয়নি কিছুই। প্রকৃতপক্ষে রাস্তাটি এতটাই ভেঙে পড়েছে যে চলাচলেরও অযোগ্য। এলাকাবাসীদের অভিযোগ, রাস্তার কাজ না হলেও রাস্তার জন্য অনুদান পাওয়া ৩০ লক্ষ টাকার কাজ খাতায়-কলমে হয়ে গিয়েছে। আর এই ঘটনাকে ঘিরেই তীব্র চাঞ্চল্য রয়েছে এলাকায়। ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও।

পুরো ঘটনা নিয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান তাপসী মন্ডল জানান, ‘তিনি পড়াশোনা কম জানেন। নির্মাণ সহায়ক যা কাগজ দিয়েছেন তাতেই তিনি সই করে দিয়েছেন। ৩০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করার এই ঘটনাকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন সোনারপুরের বাসিন্দা বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী। তিনি জানান, ‘কাগজ-কলমে যা আছে বাস্তবে তা নেই। সারা রাজ্য জুড়ে এই ভাবেই লোপাটের রাজনীতি চালাচ্ছে তৃণমূল।’

sujan chakraborty 669x350 1

বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানান, ‘রাজ্যে একাধিক রাস্তা পুকুর এই উদাহরণ আছে। তৃণমূলের আমলে দুর্নীতি চরম পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। সমস্ত তথ্য আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। আমরা চাই আগে হিসাব দিক তারপর টাকা দেওয়া হবে।’ অভিযোগ পাওয়ার পরেই পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন জেলাশাসক।


Sudipto

সম্পর্কিত খবর