বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার রীতিমতো “গুপ্তধন”-এর সন্ধান পেলেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। জানা গিয়েছে, আর্মেনিয়ায় (Armenia) প্রত্নতাত্ত্বিকরা একটি প্রাচীন কবরস্থানে খননের সময় প্রায় ৩,২০০ বছরের পুরোনো “গুপ্তধন” খুঁজে পেয়েছেন। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে, বহু শতাব্দী ধরে খনন কাজ চালিয়ে সেখানে স্থিত কঙ্কালগুলি থেকে যা কিছু পাওয়া গিয়েছিল তা লুঠ করে নেয় দুর্বৃত্তরা। কিন্তু তারপরেও সেখানে একটি সমাধি বহু শতাব্দী ধরে নিরাপদে ছিল।
এমতাবস্থায়, সেটি তুর্কি সীমান্তের কাছে আর্মেনিয়ার মেটসমোর প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানে পাওয়া গেছে। জানা গিয়েছে, ৪০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে অষ্টাদশ শতক পর্যন্ত ওই স্থানটি সম্পূর্ণ নির্জন ছিল। এই প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে, মেটসমোরের প্রাচীনতম অংশটি একটি কবরস্থানের পাশাপাশি দেওয়াল দিয়ে ঘেরা ছিল।
রিপোর্ট অনুযায়ী, পোলিশ এবং আর্মেনিয়ান প্রত্নতাত্ত্বিকদের একটি যৌথ দল সেখানে খনন করার সিদ্ধান্ত নেন। এমতাবস্থায়, হিস্টোরিক্যাল এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড কালচারাল মিউজিয়াম-রিজার্ভের মতে, প্রত্নতাত্ত্বিকরা একটি পাথরের সমাধি খুঁজে পান, যেখানে দু’জন মানুষকে কবর দেওয়া হয়েছিল। এই সমাধির মেঝে পাথর দিয়ে তৈরি। পাশাপাশি, সেখানে স্থিত কঙ্কালগুলি পাথর দিয়ে ঢাকা ছিল। উভয় কঙ্কালের পিঠ ছিল একে অপরের বিপরীতে। পাশাপাশি, সেখানে এক মহিলা এবং একটি পুরুষের কঙ্কালও ছিল। অনুমান করা হচ্ছে যে, হয়তো তাঁরা দম্পতি ছিলেন। যাঁদেরকে ১২০০-১৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে সমাহিত করা হয়েছিল।
১০০ টিরও বেশি রত্ন পাওয়া গেছে: ওই কঙ্কালগুলির হাড়গুলি ভালোভাবে সংরক্ষিত ছিল। পাশাপাশি, সেগুলির পা ছিল কিছুটা মোড়া অবস্থায়। এছাড়াও, তাঁদের ৩০-৪০ বছর বয়সের মধ্যে মৃত্যু হয় বলে জানা গিয়েছে। এমতাবস্থায়, তাঁদের সমাহিত করার পরে ওই সমাধিটি পুনরায় খোলার কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে, ওই কঙ্কালগুলির চারপাশে ছিল গুপ্তধন। প্রত্নতাত্ত্বিকরা সেখান থেকে ১০০ টিরও বেশি অলঙ্কার এবং পুঁতি খুঁজে পেয়েছেন। যেগুলির মধ্যে অনেকগুলি সোনার পেন্ডেন্টও রয়েছে। ওই সমাধিতে পাওয়া গোলাকার মুক্তোর মতো বস্তুগুলিও সোনার। এর পাশাপাশি লাল-বাদামি রংয়ের পাথরও পাওয়া গেছে। যেটি গয়নার অংশ ছিল।
কি কি পাওয়া গেছে: এই প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, সেখানে স্থিত একটি কঙ্কালের কব্জির চারপাশে ব্রোঞ্জের তৈরি একটি ব্রেসলেট পাওয়া গেছে। প্রত্নতাত্ত্বিকরা জানিয়েছেন, অন্য হাতে ছিল একটি পাতলা, টিনের আংটি। সাইন্স ইন্ড পোল্যান্ড অনুসারে, মেটসমোরে ১০০ টিরও বেশি কবর খনন করা হয়েছে। যেগুলির মধ্যে অধিকাংশ সমাধি লুঠ করে নিয়ে গেছে ডাকাতেরা। এছাড়াও, মেটসমোরে একটি দুর্গের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। যেটির পরিসর সাতটি অভয়ারণ্য সহ মন্দির দ্বারা বেষ্টিত ছিল।