বাংলাহান্ট ডেস্ক : আবারও দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত শাসক দল তৃনমূল (All India Trinamool Congress)। দলের প্রভাব খাটিয়ে ভুয়ো নথি ও জাল সইয়ের সাহায্যে করে ব্যাঙ্ক থেকে লক্ষ্য-লক্ষ্য টাকা তুলে নেওয়া হয়। গ্রামের মহিলাদের নামে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠল দুই তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে। জানা যাচ্ছে, দুই অভিযুক্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠীর দুই নেত্রী। ঘটনার খবর প্রকাশ্যে আসতেই ঘণ্টা চারেব তাদের আটকে রাখলেন গ্রামের মহিলারাই। যদিও ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই এই দুই মহিলাকে তৃণমূলের কেউ চেনেনা বলে দাবি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের।
ধরা পড়ে দিতে হলো মুচলেখা: স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, রবিবার বিকাল থেকে রাত্রি পর্যন্ত কয়েকশো প্রতারিত মহিলা বিক্ষোভের মুখে পড়ে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেওয়ার কথা স্বীকার করেন তাঁরা। চাপের মুখে পড়ে প্রতারণার অভিযোগ স্বীকার করে মুচলেখা দিতেও বাধ্য হন ওই দুই অভিযুক্ত নেত্রী বকুল চক্রবর্তী ও চুমকি সাহা। খবর পেয়ে রাত ন’টা নাগাদ পুলিশ এসে ওই দুই মহিলাকে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীদের কাছ থেকে উদ্ধার করে কাটোয়া থানায় নিয়ে যায়। সূত্রে খবর, বকুল ও চুমকি রাজ্য সরকারের আনন্দধারা প্রকল্প থেকে কয়েকশো মহিলার সই নকল করে এই লক্ষ-লক্ষ টাকা চুরি করেছেন। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলা সদস্যদের পুরো অন্ধকারে রেখেই এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে তারা। শুধু তাই নয়, জানা যাচ্ছে, এই প্রতারণা চক্রের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন ব্যাঙ্ক কর্মী ও গোষ্ঠীর অনেকেই।
ঋণের ফাঁদে সর্বস্বান্ত গ্রামের মহিলারা : এ দিকে, নিজের অজান্তেই ভুয়ো ঋণের ফাঁদে পড়ে গ্রামের দরিদ্র মহিলারা প্রায় সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ছেন। এমনকি ঋণ পরিশোধের জন্য কেটে নেওয়া হয়েছে তাঁদের ব্যাঙ্কে জমা রাখা টাকাও। শুধু তাই নয়, গোষ্ঠী ও ব্যাঙ্ক গ্রামে এসে মহিলাদের বাড়ি-বাড়ি টাকা পরিশোধের জন্য হুমকিও দিচ্ছেন বলে খবর। এরপরই গ্রামের মহিলারা অভিযুক্ত দুই মহিলাকে ধরে এনে আটকে রাখে। এই ঘটনায় বকুল চক্রবর্তী ও চুমকি সাহা দুজনেই নিজেদের তৃণমূল নেত্রী হিসাবে পরিচয় দেয়। তাদের দিকে ওঠা অভিযোগ স্বীকারও করে তারা। অভিযুক্ত দুজনের দাবি, ‘এই ভুয়ো ঋণ চক্রে সঙ্গে ব্যাঙ্কের কর্মী, ব্লকের কর্মী সকলেই জড়িত।’
চুমকি সাহা বলেন, ‘প্রায় ৪০-৫০ লক্ষ টাকা (Indian Rupee) ভুয়ো ঋণ এভাবেই ব্যাঙ্কের সঙ্গে চক্রান্ত করে বিভিন্ন জনের নামে তোলা হয়েছে। ব্যাঙ্কের ফিল্ড অফিসার আবার কেতুগ্রামের তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা। সেই ভুয়ো নথি তৈরি করে ঋণ তুলে প্রতারণা করেছে।’ যদিও, স্থানীয় তৃণমূল নেতা তপন কুমার মণ্ডল দাবি করেন, ‘বকুল বা চুমকি কেউই তৃণমূল করে না। আলমপুর পঞ্চায়েত এলাকায় ২১৭ টি নথিভুক্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠী থাকলেও ১৭৫ টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী সক্রিয় আছে। এর মধ্যে ৩২ টি গোষ্ঠীর প্রায় তিনশ মহিলার মাথায় ভুয়ো ঋণের বোঝা চেপেছে। আমরা সকলেই চাই ঘটনার সঠিক তদন্ত হোক। দোষীদের ঋণ পরিশোধের জন্য চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।’