বাংলাহান্ট– এক গাছেই চল্লিশ রকমের ফল ? কিভাবে সম্ভব? না সম্ভব। এই অসম্ভব কে সম্ভব করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্যাম ভেন অ্যাকেন। যদিও তিনি সবাইকে অবাক করার জন্য আবিষ্কার করেননি। তার উদ্দেশ্য ছিল বিরল প্রজাতির কিছু ফলকে সংরক্ষণ করা।
শুরুটা ২০০৮ সালে। ভ্যান অ্যাকেন জানতে পারেন, অর্থাভাবে নিউ ইয়র্কের জেনেভার একটি কৃষি গবেষণা স্টেশনের একটি ফলের বাগান বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সেখানে অসংখ্য মিশ্র এবং দেশজ প্রজাতির বিভিন্ন ফলের গাছ ছিল। আবার সেখানে বেশ কয়েকটি গাছের বয়স ১৫০-২০০ বছর। কিন্তু টাকার অভাবে এ ধরনের অনেক দুর্লভ প্রজাতির ফলগাছ বিলুপ্ত হবার জোগাড়। তখনই ফল বাগানটি কিনে নেন ভেন অ্যাকেন।
এরপর গাছগুলো থেকে কলম নিয়ে একটি গাছে রূপান্তরের চেষ্টা করতে লাগলেন। এভাবে গাছটির বয়স দু’বছর হল। তখন তিনি চিফ গ্রাফটিং নামের একটি নতুন পদ্ধতি নিয়ে পরীক্ষা শুরু করেন। ফলের কলিসহ অন্য একটি গাছের ফালি পরীক্ষা করা গাছটির মধ্যে কেটে সেখানে স্থাপন করেন। তারপর সেটা সেভাবেই কয়েক মাস রাখা।শীতকাল পার করা হয়। যদি সব ঠিকঠাক থাকে, তাহলে গাছটির শাখা-প্রশাখা অন্য আর পাঁচটি গাছের মতোই বেড়ে উঠবে। প্রায় পাঁচ বছর ধরে এই এক্সপেরিমেন্ট চালান ভ্যান অ্যাকেন। অবশেষে প্রথম চল্লিশটি ফলওয়ালা গাছ সুস্থভাবে বেড়ে ওঠে।
স্যাম ভেন অ্যাকেন পেন্সিলভানিয়া ডাচের একটি কৃষক পরিবারে সন্তান। তাই এই ধরণের গাছেদের প্রতি ভালোবাসা তার রক্তে।এ পর্যন্ত ভ্যান অ্যাকেন আড়াইশ’ প্রজাতির ওপরে কাজ করেছেন। ভবিষ্যতে তার ইচ্ছে শহরের বিভিন্ন এলাকায় এ ধরনের গাছ লাগানো। পোর্টল্যান্ডের কাছে দক্ষিণ মেইনে তার নিজস্ব ফল বাগান করার ইচ্ছা আছে। তার এই চল্লিশ ফলের গাছ আবিষ্কার এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।
হয়তো এইসব কারণে মনে হতে পারে তিনি বড় কোনো কৃষি গবেষক। না, তিনি বেছে নিয়েছিলেন চিত্রশিল্পকে। বর্তমানে সিরাকিউজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাস্কর্যবিদ্যা বিভাগে তিনি অধ্যাপনা করছেন। তবে তার জীবনের সেরা কীর্তিটির পেছনে কৃষিবিদ্যা এবং চিত্রশিল্প দুটোরই সমান অবদান আছে। তার এই আবিষ্কারের সাফল্যের পেছনে তার পেশা ও নেশা দুটোই সমান ভাবে দায়ী।