বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্কঃ সবে সমাপ্ত হয়েছে আইপিএল ২০২৩ (IPL 2023)। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর বাকিদের টেক্কা দিয়ে রেকর্ড পঞ্চম বারের জন্য আইপিএল ট্রফি ঘরে তুলেছে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস। বাকি সব ম্যাচের কথা যদি আপাতত ভুলেও যাওয়া যায় তাহলেও দেখা যাবে ফাইনালটিই এতটা উত্তেজক ছিল যে সেটি গড়িয়েছিল তিন দিন অবধি। প্রথম দিন বৃষ্টির জন্য খেলাই শুরু করা যায়নি। রবিবারের পর সোমবার খেলা শুরু হলেও দ্বিতীয় ইনিংস আরম্ভ হতেই ফের বৃষ্টি নামে। এরপর পুনরায় যখন খেলা আরম্ভ হয় তখন খেলা শেষ হতে হতে সেই দিন গড়িয়ে পরের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার গভীর রাত অবধি ম্যাচ চলে।
গোটা আইপিএলে এবার একাধিক নতুন নিয়ম দেখা গিয়েছে। সেই নিয়ম গুলির প্রয়োগ নিয়ে অনেকের আপত্তি থাকতে পারে। কিন্তু ওই নতুন নিয়ম গুলির আমদানির কারণে খেলাটি আরো উত্তেজক হয়েছে বলে একাংশের ধারণা। এই মরশুমে যতগুলি শতরান করেছেন ক্রিকেটাররা, ততগুলি আর কোনও মরশুমে হয়নি। যতবার এই মরশুমে দুসর গণ্ডি টপকে গেছে দলগুলি ততবার আর কোনও মরশুমে দেখা যায়নি। অন্যান্য বারের মতোই এবারও একাধিক নতুন তারকার জন্ম দিয়েছে এই আইপিএল। সেই সঙ্গে বেশ কিছু পুরোনো দিনের অভিজ্ঞ তারকা প্রমাণ করেছেন যে তারা এখনো ফুরিয়ে যাননি। এরই মধ্যে থেকে বেছে নেওয়া হলো এই আইপিএলের সেরা পাঁচটি ঘটনা।
লড়াকু রিঙ্কু: কলকাতা নাইট রাইডার্স কে চলতি মরশুমে প্রায় একার হাতেই টেনেছেন এই তরুণ ক্রিকেটার। একসময় লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে তাকে দলে রাখা কেন হচ্ছে সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলতেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। কিন্তু চলতি মরশুমে রিঙ্কু নিজের সমালোচকদের যাবতীয় জবাব দিয়ে দিয়েছেন। গুজরাট টাইটান্স এর বিরুদ্ধে এক ওভারে ২৯ রান চেজ করে জয়টা আইপিএলের ইতিহাসের সেরা মুহূর্ত গুলির মধ্যে একটি হয়ে থাকবে।
মোহিত ম্যাজিক: একসময় ভারতীয় দলের হয়ে বিশ্বকাপ খেলা এই তারকা মিডিয়াম পেশার কিছুদিনের জন্য যেন ভারতীয় ক্রিকেটের মূলস্রোত থেকে হারিয়ে গিয়েছিলেন। গুজরাট টাইটান্স তাকে গত মরশুম থেকেই নেট বোলার হিসেবে সুযোগ দিয়েছিল। কিন্তু আশীষ নেহেরা, হার্দিক পান্ডিয়াকে প্রভাবিত করে তিনি এই মরশুমে মূল দলে চলে আসেন এবং গুজরাটের ডেথ বোলিংয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অস্ত্র হয়ে ওঠেন। দুর্ভাগ্যবশত ফাইনালের শেষ দুই বল তার শেষটা সর্বাঙ্গসুন্দর হতে দিলো না। তবে এবারের আইপিএলে তার সুপারস্টার হিসেবে প্রত্যাবর্তনটা আইপিএলের ইতিহাসের সেরা মুহূর্তগুলোর মধ্যে একটি হয়ে থাকবে।
কোহলির ক্যারিশমা: আরসিবি হয়তো প্রতি আইপিএলের মতোই এই আইপিএলে হতাশ করেছেন কিন্তু তার দোষ একেবারেই এবার দেওয়া যাবে না বিরাট কোহলিকে। তার পক্ষে যতটা সম্ভব ততটা করেছিলেন তিনি। মরশুমের শেষ দুই ম্যাচের দুই দুর্দান্ত শতরান করে ভারতের হয়ে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে সবচেয়ে বেশি শতরান হাকানো ব্যক্তি হয়ে গিয়েছেন তিনি।
গিল ও যশস্বী: এই আইপিএল থেকে ভারতীয় দল ভবিষ্যতের ওপেনিং জুটিকে পেয়ে গিয়েছে এমনটা অনেকেই ভবিষ্যৎবাণী করছেন। শুভমান গিল এবং যশস্বী জয়সওয়াল যে ফর্ম এই মরশুমে দেখিয়েছেন তা যদি তারা ভবিষ্যতে ধরে রাখতে পারেন, তাহলে ভারতকে রোহিত শর্মার পরে দীর্ঘদিন ওপেনিং জুটে নিয়ে কোনও চিন্তা করতে হবে না। এই আইপিএল থেকে শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি হতে পারে এই ঘটনাটাই।
ধোনির মাঠে আসা: গোটা আইপিএল জুড়ে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি যখনই মাঠে নেমেছেন, তখনই স্টেডিয়াম নির্বিশেষে এমন শব্দব্রক্ষ্ম তৈরি হয়েছে যা আগে কোনওদিনও দেখা যায়নি। ধোনিও সাধ্যমত পারফরম্যান্স করে নিজের ভক্তদের খুশি করার চেষ্টা করেছেন।