পুলিশের গাড়ির তেল ভরে ৫ কোটি টাকা ধার, ব্যবসা লাটে ওঠার জোগাড় পাম্প মালিকের

বাংলা হান্ট ডেস্ক: ব্যবসা করতে গিয়ে অনেকসময় বিভিন্ন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন অনেকেই। পাশাপাশি, সমস্ত ব্যবসায় লাভ-লোকসানের তুল্যমূল্য বিচার তো থাকেই। কিন্তু, পুলিশকে ধারে জিনিস দিতে গিয়ে ব্যবসা লাটে ওঠার ঘটনা কি কখনও শুনেছেন? অবাক মনে হলেও ঠিক এইরকমই এক ঘটনা ঘটেছে বিহারে!

বিপুল অঙ্কের টাকা ধারের কারণে এবার পাটনার একটি পেট্রোল পাম্প তেল দিতে অস্বীকার করল পুলিশকে। জানা গিয়েছে যে, গত বছরের অগাস্ট মাস থেকেই পুলিশের গাড়িতে ধারে তেল দিত ওই পেট্রোল পাম্পটি। পাটনা পুলিশ বিভাগের প্রায় ৩০ টি থানার গাড়ি ধারে তেল ভরতে আসত এখানে। এত সংখ্যক গাড়িকে ধারে তেল দিতে দিতে ধারের অঙ্কই বর্তমানে ছুঁয়েছে ৫ কোটি!

এই খবর সামনে আসতেই তাজ্জব হয়ে গিয়েছেন সকলেই। এমতাবস্থায়, এই বিপুল ধার নিয়ে ব্যবসা চালানোই কঠিন হয়ে পড়ছে পাম্প কর্তৃপক্ষের। ব্যাঙ্ক এবং তেল সংস্থার কাছ থেকে ইতিমধ্যেই ঋণ নিয়ে কোনোমতে ব্যবসা চালাচ্ছেন তাঁরা। তাই, চলতি বছরের শুরু থেকেই তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন যে, এবার আর পুলিশের কোনো গাড়িতে ধারে তেল দেবে না ওই পেট্রোল পাম্প!

পাশাপাশি, বিপুল অঙ্কের এই টাকা দ্রুত শোধ দেওয়ারও আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা। এই প্রসঙ্গে ওই পাম্পের ম্যানেজার মৃত্যুঞ্জয় কুমার শর্মা জানিয়েছেন যে, “গত বছর থেকে ধারে তেল ভরতে ভরতে ইতিমধ্যেই পাঁচ কোটি টাকার ধার হয়ে গিয়েছে। কোনোমতে ব্যাঙ্ক এবং তেল সংস্থার কাছ থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা চালানো হচ্ছে। এদিকে, তেল সংস্থাও তাদের ঋণ পরিশোধ করার জন্য ক্রমশ চাপ দিচ্ছে। ঋণ শোধ না হলে তেলের আমদানিও করা যাবেনা। ধারে তেল দিতে গিয়ে যারা নগদ টাকা দিয়ে তেল কিনতে আসছেন তাঁদেরকে দেওয়ার মতো তেলও থাকছেনা।”

এদিকে, এই ঘটনায় রীতিমতো হইচই পড়ে যায় চারিদিকে। পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারাও বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পারেন। ওই পেট্রোল পাম্প কর্তৃপক্ষকে ১৫ দিনের মধ্যে সমস্ত বকেয়া টাকা ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

Petrol

পাশাপাশি, এই ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও! বিরোধীরা সরাসরি আক্রমণ করেছেন নীতিশ কুমারের সরকারকে। নীতিশ জমানায় পুলিশ এতটাই গরিব হয়ে গিয়েছে যে, তাদের গাড়িতে তেল ভরার মতো টাকা নেই বলেও কটাক্ষ করেছেন তাঁরা।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর