বাংলা হান্ট ডেস্ক: আজ থেকে ঠিক বছর ছয়েক আগে অর্থাৎ ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর এক ঐতিহাসিক ঘোষণা করেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। মূলত, ওই দিন তিনি “নোটবন্দি” (Demonetization)-র ঘোষণা করেছিলেন। যার ফলে পরবর্তীকালে তৎকালীন ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটকে নিষিদ্ধ করা হয়। এদিকে, রাতারাতি এহেন সিদ্ধান্তের জেরে রীতিমতো সাড়া পড়ে যায় সর্বত্র।
শুধু তাই নয়, নোটবন্দির জেরে বাড়িতে সঞ্চিত অবস্থায় থাকা পুরোনো ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট জমা দিতে হয় ব্যাঙ্কে। যার ফলে ব্যাঙ্কের সামনে পরিলক্ষিত হয়েছিল তুমুল ভিড়। সামগ্রিকভাবে এহেন ঘটনায় চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছিলেন সাধারণ মানুষ। যদিও, এখনও কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনেকে পুরোনো নোট বাতিল করতে পারেন নি। যার ফলে সঞ্চিত অবস্থায় ওই অর্থ থাকলেও তা রীতিমতো ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে গিয়েছে।
এমতাবস্থায়, শুক্রবার এই সংক্রান্ত মামলায় শুনানি হয় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court)। জানা গিয়েছে, সেই সময়ে সুপ্রিম কোর্ট জিজ্ঞাসা করেছিল যে, ২০১৬ সালে নোটবন্দির সময় যাঁরা কোনো সঠিক কারণের জেরে তাঁদের পুরোনো নোট জমা দিতে অক্ষম হয়েছিলেন তাঁদের ক্ষেত্রে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (Reserve Bank Of India) কোনো বিবেচনা করতে পারে কি না? শুধু তাই নয়, বিচারপতি এস. আবদুল নাজিরের নেতৃত্বে থাকা পাঁচজন বিচারপতির বেঞ্চ পুরোনো নোটের ফের বদলের ক্ষেত্রে সবুজ সংকেত দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
মূলত, এমন অনেকেই রয়েছেন যাঁরা বিভিন্ন কারণে তাঁদের বিপুল অর্থ নোটবন্দির সময়ে বদল করতে পারেন নি। কেউ বিদেশে থাকার জন্য আবার কারও অর্থ সেই সময়ে আদালতের কাছে জমা থাকার কারণে নোটবদলের বিষয়টি সম্পন্ন হতে পারেনি। এই প্রসঙ্গে ওই পাঁচ বিচারপতির অন্যতম একজন বিচারপতি বি.আর গাভাই জানান যে, “এমন ঘটনাও নিশ্চিত রয়েছে যেখানে একজন ব্যক্তি ছয় মাস ধরে কোমায় ছিলেন এবং সেই কারণে তাঁর নোটগুলি পরিবর্তন করতে পারেন নি। এমতাবস্থায়, যদি সেগুলি লকারে রাখা থাকে সেক্ষেত্রে তাঁর সন্তানেরা নোটগুলি খুঁজে পেতে সক্ষম হবে না। এই ধরণের ঘটনায় অবশ্যই একটি প্রতিকার দিতে হবে।”
এদিকে, সরকারের পক্ষ থেকে এই মামলায় রয়েছেন এটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটারামনি। তিনি জানিয়েছেন, নোটবন্দির পরে নোট বদলের ক্ষেত্রে একাধিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পাশাপাশি, সরকার কিছু বিশেষ দিককে মাথায় রেখেই নোটবন্দির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। জাল নোটের সমস্যা ও কালো টাকা এইসব বন্ধ করাই আসল উদ্দেশ্য ছিল। এছাড়াও, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নিয়ম মেনেই এই নোটবন্দির ঘটনা ঘটে বলেও জানা গিয়েছে। তবে, সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে পুরোনো ৫০০ এবং ১০০০ টাকার বদলের ক্ষেত্রে একটি বিকল্প পথ খোঁজা হবে বলেও জানানো হয়েছে বেঞ্চের তরফে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ২০১৭ সালের আইনি ধারার ৪ (২) (৩) অধীনে এটি করা হতে পারে।