বাংলা হান্ট ডেস্ক: এমনিতেই বর্তমানে রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের দিকে তাকিয়ে রয়েছে সমগ্র বিশ্ব। পাশাপাশি, এর প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছে সব ক্ষেত্রেই। এদিকে, ইউক্রেনে ক্রমশ আধিপত্য বিস্তার করছে রুশ সেনা। এমতাবস্থায়, ইউক্রেনের উপর হামলা শুরু হতেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন করে একগুচ্ছ বিধিনিষেধ ও নিয়ন্ত্রণ জারি করেছে আমেরিকা। যার মধ্যে মহাকাশ গবেষণা সংক্রান্ত সহযোগিতার বিষয়টিও রয়েছে।
আর এতেই রেগে লাল হয়ে উঠেছেন রুশ মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্র Roscosmos-এর মহানির্দেশক দিমিত্রি রোগোজিন। জানা গিয়েছে যে, গত বৃহস্পতিবার রাশিয়ার উপর জারি করা নতুন এই বিধিনিষেধের তালিকা ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে টুইটারে নিজের ক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন দিমিত্রি।
পাশাপাশি, তিনি আশঙ্কাও করেছেন যে, আমেরিকার এহেন পদক্ষেপের জেরে আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রের কাজ বিরাট ধাক্কা খাবে। এমনকি, গোটা প্রক্রিয়াটাই ধ্বংস হয়ে যেতে পারে বলেও মনে করেছেন তিনি। আর যার ফল ভুগতে হবে আমেরিকার “মিত্র”দেরই।
শুধু তাই নয়, ভারতের উপর ৫০০ টনের এই বিশাল স্পেস স্টেশন ভেঙে পড়তে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দিমিত্রি! এই প্রসঙ্গে আমেরিকার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন যে, “আপনারা যদি আমাদের সহযোগিতা করতে না দেন এবং আমাদের সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে দেন, তাহলে আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রকে কক্ষচ্যুত হওয়ার হাত থেকে কে বাঁচাবে? গোটা স্টেশনটাই যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপের উপর ভেঙে পড়ে, তার দায় কে নেবে?”
তবে, এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। পাশাপাশি, তিনি আরও জানান যে, “৫০০ টনের ওই স্পেস স্টেশন ভারত বা চিনের উপরেও ভেঙে পড়তে পারে। আপনারা (আমেরিকা) কি এইভাবে ওদের (ভারত ও চিনকে) ভয় দেখানোর চেষ্টা করছেন? মনে রাখবেন, ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন কিন্তু এখন রাশিয়ার উপর দিয়ে উড়ছেনা। ওই জন্য যাই ঘটুক না কেন, তার দায় আপনাদেরই (আমেরিকা) নিতে হবে।”
পাশাপাশি, আমেরিকা এই সমগ্র ঘটনায় একেবারেই “অবিবেচক”-এর মত কাজ করছে বলেও মনে করেছেন দিমিত্রি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মহাকাশে এবং সামরিক ক্ষেত্রে রাশিয়ার ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করতেই মস্কোয় প্রযুক্তি রফতানিতে নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে জো বাইডেনের প্রশাসন। অন্যদিকে, মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA-র পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, আমেরিকা এই নতুন বিধিনিষেধ জারি করলেও তাতে অসামরিক ক্ষেত্রে যৌথ মহাকাশ সংক্রান্ত গবেষণা চালাতে রাশিয়ার কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
এছাড়াও, ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনের কাজ যাতে নিরাপদ এবং সুষ্ঠুভাবে চালিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, তার জন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সাথেই ক্রমাগত যোগাযোগ রেখে চলেছে NASA। এদিকে, এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে রয়েছেন চারজন মার্কিন, দু’জন রুশ এবং একজন জার্মান নভোশ্চর। সম্মিলিত ভাবেই মহাকাশ গবেষণার কাজ করছেন তাঁরা। কিন্তু, আমেরিকার নতুন এই বিধিনিষেধের ফলে রাশিয়া সহযোগিতার সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে পারে বলেও হুঙ্কার দিয়েছেন দিমিত্রি।