প্রসাদ খেলেই ৫ হাজার টাকা জরিমানা, ফতোয়া জারী হল পশ্চিমবঙ্গেরই এক গ্রামে!

মহিষাদলের ছায়া এবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর এলাকায়। আবারো একবার এলাকার বুকে পঞ্চায়েত দ্বারা ফতোয়া জারি করার অভিযোগ উঠল। এবার ঘটনার কেন্দ্রস্থল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুরের শ্রীরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের খড়িকা পাটনা গ্রাম। এলাকার খাপ পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে ফতোয়া জারি করে বলা হয়, পুজো বাড়ির প্রসাদ খেলেই 5 হাজার টাকা জরিমানা জমা করতে হবে আর এই খবরটি সামনে আসার পরে প্রতিবাদে সামিল হন এলাকাবাসীরা।

সূত্রের খবর, পটাশপুরের এক বাসিন্দা তপন বিশাইয়ের বাড়িতে সত্যনারায়ণ পূজার আয়োজন করা হয়। গতকাল সেই পুজো উপলক্ষ্যে সকল গ্রামবাসীকে সেখানে আমন্ত্রণও জানানো হয়। কিন্তু হঠাৎই গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে ফতোয়া জারি করে বলা হয় যে, পুজো উপলক্ষ্যে তাদের কাছ থেকে গ্রামবাসীদের ভোগ খাওয়ানোর জন্য কোনরকম অনুমতি নেওয়া হয়নি আর সেই কারণেই সকল এলাকাবাসীদের অনুষ্ঠানে যাওয়া এবং প্রসাদ খাওয়ার ওপর ফতোয়া জারি করে পঞ্চায়েত।

শুধু মাত্র এখানেই না থেমে নির্দেশ দেওয়া হয় যে, “যদি আমাদের নির্দেশ অমান্য করে অনুষ্ঠানে কেউ হাজির হন, তবে তাকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা দিতে হবে।” এই ফতোয়াটি সামনে আসার পরই বিক্ষোভে সামিল হয় তপন বিশাই সহ তার গোটা পরিবার এবং তাদের সেই প্রতিবাদে গ্রামের মানুষজনও সঙ্গ দেন। সূত্রের খবর, এলাকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পটাশপুর থানার পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়। পরবর্তীতে, পটাশপুর থানার বিডিও শঙ্খ বিশ্বাস এবং থানার ওসি দীপক চক্রবর্তী সেখানে হাজির হয়ে সম্পূর্ণ ঘটনাটি খতিয়ে দেখেন এবং শেষ পর্যন্ত গ্রাম কমিটির 8 জনকে পুলিশের তরফ থেকে জেল হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে খবর। ঘটনায় আরো দুজন অভিযুক্ত পলাতক হলেও দোষীরা যে শাস্তি পাবে, সে বিষয়ে এ দিন এলাকাবাসীদের আশ্বস্ত করে পুলিশ প্রশাসন।

প্রসঙ্গত, কিছুদিন পূর্বে চক দ্বারিবেড়িয়া গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে গিয়ে খাম ভর্তি নোটিশ বিলি করে গ্রাম কমিটির সদস্যরা। আর সে সকল নোটিশ হাতে পেতেই ঘুম উড়ে যায় সকল গ্রামবাসীর। তাতে স্পষ্ট লেখা থাকে, কোনও সমস্যা হলে সরসারি প্রশাসনে না গিয়ে আগে গ্রামকে জানাতে হবে। বাড়িতে যদি কোনো মাঙ্গলিক বা অশৌচ কাজ করতে হয় তবে গ্রাম কমিটির সঙ্গে বসে আলোচনা করতে হবে। নাহলে জরিমানা করা হবে।পরিবার বা প্রতিবেশীদের মধ্যে ঝগড়া হলে তা তাদের জানাতে হবে। গ্রামের কোনও ছেলে বা মেয়ে বাড়ির অমতে যদি বিয়ে করে তবে তা গ্রাম কমিটিকে জানাতে হবে। এছাড়া অপর এক ফতোয়া যা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে তা হলো, গ্রামের জমি কোনও মুসলিমকে বিক্রি করা যাবে না। এই পুরো ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেসের দিকেই অভিযোগের আঙুল তোলে বিরোধীরা।


Sayan Das

সম্পর্কিত খবর