বাংলা হান্ট ডেস্ক : পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) জন্ম নিলেই মাথা চাপবে ৫৮ হাজার টাকা ঋণের বোঝা! চাঞ্চল্যকর এই তথ্য উঠে আসছে ফিসকাল রেসপন্সিবিলিটি অ্যান্ড বাজেট ম্যানেজমেন্ট বা এফআরবিএম-এর পরিসংখ্যানে। আগের বামফ্রন্ট সরকারের (CPM Government) আমলের শেষে ২০১০-১১ আর্থিক বছরে জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৯.১২ কোটি। আর গড় মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ ছিল ২০,৫৩০ টাকা। সেখানে ২০২২-২৩ সালে রাজ্যের ঋণ ৫,৮৬,৪৩৮ কোটি টাকা। এখন জনসংখ্যা বেড়ে হয়েছে প্রায় ১০ কোটি। সেই হিসাবে মাথাপিছু ঋণের প্রায় ৫৮ হাজার টাকা! রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের জানান, ‘এফআরবিএম ভঙ্গ হচ্ছে না। যতটুকু প্রয়োজন, ততটুকুই ঋণ নিচ্ছে রাজ্য সরকার।’
উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে বৃদ্ধির ক্ষেত্রে, আয়ের থেকে বেশি ব্যয়কে সব সময় ঋণাত্মক ভাবে দেখা হয় অর্থনীতিতে। তবে সেই ব্যয় যদি মূলত সড়ক-সেতু-বন্দরের মতো স্থায়ী সম্পদ তৈরিতে ব্যবহার হয় তাহলে তার অর্থনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে। পরিকাঠামগত উন্নয়নে দীর্ঘ মেয়াদি অর্থনৈতিক লাভ বৃদ্ধি পায়। পাল্লা দিয়ে বাড়ে রাজ্যের রাজস্ব আদায়ের পরিমাণও। কিন্তু রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, সেই মূলধনী খাতে এ রাজ্যের বরাদ্দের পরিস্থিতিও খুব খারাপ।২০২০-২১ সালে রাজ্যের মোট জিডিপির মাত্র ১.১%।
সংস্থার রিপোর্ট বলছে বেতন, পেনশন, প্রশাসনিক খরচ, নগদ বিলি, ভর্তুকি, অনুদান প্রকল্পের খরচ, পুরনো ঋণের সুদ মেটাতেই প্রায় ৯০% অর্থ ব্যায় হয়। কোভিড মহামারির সময় সংকট আরও বেড়েছে। পরিস্থতি সামাল দিতে ধার করা ছাড়া আর কোনও রাস্তা নেই রাজ্যের কাছে। এর জেরে ঋণের পরিমাণ দ্বিগুণ হলেও সেই তুলনায় পরিকাঠামো নির্মাণ হয়নি। অর্থনীতিবিদ অশোক লাহিড়ি বলেন, ‘উন্নয়নকে গতি দেওয়াই পরিত্রাণের একমাত্র পথ। তবেই বাড়বে আয়। খেলা-মেলায় খরচ হলে, কী করে হবে?’
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দাবি, ২০১০-১১ সালে ঋণ ছিল জিডিপি-র ৪১.৯%। এখন তা কমে ৩৩-৩৪ শতাংশে। তবে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের দাবি, ২০২৬-২৭ আর্থিক বছরে জিডিপি-র নিরিখে ঋণ পৌঁছবে পারে ৩৭ শতাংশে।