বাংলা হান্ট ডেস্ক: “টাইম ট্রাভেল” (Time Travel), বিভিন্ন কমিকস এবং দেশ-বিদেশের একাধিক সিনেমার দৌলতে এই শব্দগুলির সাথে এখন কম-বেশি সকলেই পরিচিত। পাশাপাশি, বর্তমানের সোশ্যাল মিডিয়ার (Social Media) যুগে আবার অনেকেই “টাইম ট্রাভেল” করে এসেছেন বলেও দাবি করেন। যদিও, আজও এহেন দাবির সঠিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে, এইসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বারংবার “টাইম ট্রাভেল” আদৌ সম্ভব কি না সেই বিষয়ে প্রশ্ন উঠে এসেছে। উল্লেখ্য যে, টাইম ট্রাভেলের কল্পনার সূত্রপাত ঘটেছে কোয়ান্টাম প্রযুক্তির (Quantum Technology) সাহায্যে।
এমতাবস্থায়, এই কোয়ান্টাম প্রযুক্তির গবেষণাতেই এবার এগোনোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে মোদী সরকার। ইতিমধ্যেই কোয়ান্টাম ক্ষেত্রে শক্তিবৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে জাতীয় কোয়ান্টাম মিশনের (National Quantum Mission) ঘোষণাও করেছে ভারত। সর্বোপরি, ওই প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেটের তরফে ৬,০০৩ কোটি টাকা বরাদ্দও করা হয়েছে। পাশাপাশি, জাতীয় কোয়ান্টাম মিশনের অধীনে কেন্দ্র আগামী আট বছরের মধ্যে ১,০০০ কিউবিটের কোয়ান্টাম কম্পিউটার গড়ে তোলার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে।
জেনে অবাক হবেন যে, পদার্থবিদ্যার “কোয়ান্টাম মেকানিক্স” অনুযায়ী তৈরি হওয়া এই কোয়ান্টাম কম্পিউটার সাধারণ কম্পিউটার ও ল্যাপটপের চেয়ে ১০০ লক্ষ গুণ বেশি শক্তিশালী। শুধু তাই নয়, এর মাধ্যমে যেকোনো তথ্যের গবেষণা ও বিশ্লেষণ নিখুঁত এবং নিরাপদ পদ্ধতিতে করা সম্ভব। পাশাপাশি, সুপারকন্ডাক্টিং এবং ফোটোনিক প্রযুক্তির বিভিন্ন বিষয়ে অত্যন্ত উপযোগী হবে এই কম্পিউটিং পদ্ধতি। ২০২০ সালের বাজেটে এই প্রকল্পের ঘোষণা করা হলেও সেই সময় প্রকল্পের মেয়াদ ৫ বছর ধার্য করেছিল সরকার। তবে, চলতি বছরের এপ্রিলে আগের বাজেটের তুলনায় অনেক কম খরচেই ওই লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানোর বিষয়টি সামনে এসেছে।
এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, বর্তমান সময়ে বিশ্বে কোয়ান্টাম প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে আমেরিকা, ফ্রান্স, কানাডা, চিন, ফিনল্যান্ড ও অস্ট্রিয়ার মত দেশ। এবার সেই তালিকায় নাম জুড়তে চলেছে ভারতের। এই প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, বিষয়টিতে ঝুঁকি থাকলেও কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের ক্ষেত্রে পশ্চিমী নির্ভরতাকে কমিয়ে আনতে এই গবেষণা করতেই হত ভারতকে। তবে, সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল সিনেমা বা কল্পবিজ্ঞানে টাইম ট্রাভেলের সঙ্গে কোয়ান্টাম প্রযুক্তির মেলবন্ধন দেখানো হলেও বাস্তবের মাটিতে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন বিজ্ঞানীদের অধিকাংশ।
এদিকে, কোয়ান্টাম প্রযুক্তিকে রীতিমতো “ভুতুড়ে কাণ্ডকারখানা” বলে অভিহিত করেছিলেন অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের মতো বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী। যদিও, এই প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণার পর রুশ, মার্কিন এবং সুইস বিজ্ঞানীদের দাবি ছিল যে, কোয়ান্টামের বিচিত্র জগতে প্রাণী বা বস্তুর ভিন্ন রূপের তথ্য পাওয়া যায়। যা বাস্তবের জগতে সম্পূর্ণ বিপরীত হতে পারে। অর্থাৎ, কোয়ান্টামের ধারণায় একই প্রাণী জীবিত বা মৃত উভয়ই হতে পারে।