বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত দু’বছর ধরে সরকারি আবাস যোজনা (Awas Yojana) প্রকল্প নিয়ে কেন্দ্র বনাম রাজ্যের মধ্যে চলছে ব্যাপক চাপানউতর। ২০২২ সালের পর থেকে এই প্রকল্পে রাজ্যের জন্য বরাদ্দ টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। অবশেষে এই প্রকল্পে বাংলার মানুষদের বাড়ি তৈরির জন্য নিজস্ব কোষাগার থেকেই টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
মুখ্যমন্ত্রীকে (Mamata Banerjee) জানাতেই মুশকিল আসান
কথা মতই বড়দিনের আগে এই প্রকল্পের প্রথম কিস্তির টাকা সঠিক উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে। সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে (Mamata Banerjee) অভিযোগ জানিয়ে ঝাড়গ্রামের ঝড়-বৃষ্টিতে ভেঙে পড়া প্রায় ৭০০ টি পরিবার আবাস প্রকল্পে পাকা বাড়ি তৈরির টাকা পেয়েছেন। ঝাড়গ্রাম (Jhargram) জেলার চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে প্রায় ২৬০০ জনের নাম।
এই জেলার ২০ হাজার ১৮৩ জন আবাসের বাড়ির জন্য টাকা পেয়েছেন। এদের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee) ‘গ্রিভান্স সেলে’ অভিযোগ জানিয়ে বাড়ি পেয়েছেন মোট ৬২৭ জন। এছাড়াও ঝড়-বৃষ্টিতে ভেঙে যাওয়ার পর বাড়ি ভেঙে মোট ৬৯ জন বাড়ি তৈরির টাকা পেয়েছেন। প্রসঙ্গত ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে আবাস যোজনায় মোট ৫০ হাজার বাড়ির সমীক্ষা করা হয়েছিল এর মধ্যে ৫০ শতাংশের বেশি বাড়ি ক্ষেত্রে গরমিল পাওয়া যায়।
এমন অনেক অভিযোগ আসে যেখানে দেখা যায়, পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও তারা আবাস যোজনা প্রকল্পে বাড়ি পাওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন। আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছিল একই পরিবারের দুই থেকে তিনজন এই বাড়ি তৈরির প্রকল্পে নাম লিখিয়েছেন। আবার দোতালা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও অনেকের নাম উঠেছিল এই তালিকায়।
সমীক্ষার পর ঝাড়গ্রাম জেলার তিরিশ হাজারের বেশি উপভোক্তার নাম বাদ যায় তালিকা থেকে। এছাড়া বাড়ি তৈরির অনুমোদন পেয়েছিল ঝাড়গ্রামের মোট ২২ হাজার ৮৪৬টি পরিবার। কিন্তু অনুমোদন পাওয়ার পরেও তাদের কোন টাকা দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। তাই বাড়িও তৈরি হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে আবার নতুন করে শুরু হয় সমীক্ষা। তারপর ওই আগের তালিকায় থাকা ২২ হাজার ৮৪৬ জনের মধ্যে থেকেও বাদ দেওয়া হয় ২৬০০ জনের নাম।
আরও পড়ুন: ভরা পৌষেও পিছু ছাড়ছে না বৃষ্টি! আবার কবে শুরু শীতের ইনিংস? রইল আবহাওয়ার আগাম আপডেট
কারণ গত দু বছরের মধ্যে অনেক পরিবারই আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হয়ে উঠেছে। তাই অনেকেই পাকা বাড়িও তৈরি করে ফেলেছেন। নিয়ম অনুযায়ী টিনের বা অ্যাসবেস্টটের ছাউনি দেওয়া চারটি পাকা দেওয়ালের বাড়ি থাকলেও এই আবাস তালিকায় ওই পরিবার অনুপযুক্ত হিসেবেই বিবেচিত হবে। তাই এমন উপভোক্তাদেরও এই তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’কে জানিয়ে ঝাড়গ্রামের ৬২৭ টি পরিবার এবার বাড়ি পেয়েছেন। এদের মধ্যে জামবনি ব্লকে ১৯৫ জন ও বিনপুর-১ ব্লকে ১৫৫ জন রয়েছেন। এছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকে ৪২ জন, এবং জামবনি ব্লকে ১৬ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে আবাস তালিকায়। সবাই বলছেন সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে অভিযোগ জানিয়েই তারা অনেক সুফল পেয়েছেন। এমনকি বাড়ির জন্যও টাকা পেয়েছেন।