বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের দেশ ভারতবর্ষ (India) তার ইতিহাস এবং প্রাচীন সংস্কৃতির জন্য সারা বিশ্বজুড়ে সমধিক পরিচিত। যে কারণে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ পর্যটক ভারতে আসেন। শুধু তাই নয়, প্রতিটি ক্ষেত্রে থাকা নানান নিদর্শন দেখে অবাকও হন তাঁরা। মূলত, আজও ভারতে এমন অনেক ঐতিহাসিক ঐতিহ্য রয়েছে, যা দেখলে মনে স্বস্তি পাওয়া যায়। শত শত বছরের পুরোনো এসব নিদর্শনগুলিকে দেখতেই পর্যটকরা ছুটে আসেন। এমনকি, আপনিও হয়তো এই ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলি বহুবার পরিদর্শন করেছেন। এমতাবস্থায়, আজ আমরা আপনাকে ভারতের এমন কিছু মহিলা সম্পর্কে জানাবো, যাঁরা একাধিক ঐতিহাসিক স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করেছেন।
১. হুমায়ুনের সমাধি (দিল্লি): দিল্লির সবচেয়ে বিখ্যাত স্মৃতিসৌধগুলির মধ্যে অন্যতম একটি হল, মোগল সম্রাট “হুমায়ুনের সমাধি”। মূলত, সম্রাট হুমায়ুনের মৃত্যুর পরে তাঁর স্ত্রী হামিদা বানু বেগম বা হাজি বেগম এটির নির্মাণ করেছিলেন। মোগল স্থাপত্যের একটি জীবন্ত নিদর্শন হিসেবে বিবেচিত এই সমাধিটি ১৫৬৯ সালে নির্মিত হয়েছিল।
২. বিরূপাক্ষ মন্দির (কর্ণাটক): কর্ণাটকের বাগালকোট জেলায় অবস্থিত “বিরুপাক্ষ মন্দির” পাট্টডাকলের অন্যতম প্রধান ঐতিহাসিক কেন্দ্র। ভগবান শিবের প্রতি উৎসর্গীকৃত, এই মন্দিরটি রাণী লোকমহাদেবী অষ্টম শতাব্দীতে পল্লবদের বিপক্ষে তাঁর স্বামী দ্বিতীয় বিক্রমাদিত্যের বিজয়ের স্মরণে তৈরি করেছিলেন।
৩. ইতমাদ-উদ-দৌলা (আগ্রা): আগ্রা শুধুমাত্র তাজমহলের জন্যে বিখ্যাত নয়, বরং “লালকেল্লা”, “ফতেপুর সিক্রি” এবং “ইতমাদ-উদ-দৌলার সমাধি”-র জন্যও বিখ্যাত। শুধু তাই নয়, এটি “বেবি তাজমহল” নামেও পরিচিত। মূলত, নূরজাহান তাঁর পিতা মির্জা গিয়াস বেগের স্মরণে ইতমাদ-উদ-দৌলার সমাধিটি ১৬২২ থেকে ১৬২৮ সালের মধ্যে তৈরি করেছিলেন।
৪. রানি কি ভাভ (গুজরাট): গুজরাটের পাটানে অবস্থিত, “রানি কি ভাভ” হল মারু-গুজরা স্থাপত্যশৈলীর একটি চমৎকার নমুনা। সরস্বতী নদীর তীরে অবস্থিত এই সৌধটি একটি উল্টানো মন্দিরের নকশার মত তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি, এটি জটিল ভাস্কর্য সহ মোট সাতটি স্তরে বিভক্ত রয়েছে। মূলত, একাদশ শতকে রাণী উদয়মতী তাঁর স্বামী তথা সোলাঙ্কি রাজবংশের রাজা প্রথম ভীমের স্মরণে এটি তৈরি করেছিলেন।
৫. মির্জান ফোর্ট (কর্ণাটক): কর্ণাটকের উত্তর কন্নড় জেলার আঘনাশিনী নদীর তীরে অবস্থিত এই দুর্গটি তার অসাধারণ স্থাপত্য সৌন্দর্যের জন্য বিশ্ব বিখ্যাত। শুধু তাই নয়, এই দুর্গ অতীতের বহু যুদ্ধের সাক্ষী হয়ে রয়েছে। এই ঐতিহাসিক দুর্গটি গেরসোপার রাণী চেন্নাভাইরাদেবী ষোড়শ শতকে তৈরি করেছিলেন। পাশাপাশি, তিনি ভারতের “কালো মির্চির রাণী” হিসেবেও পরিচিত ছিলেন।
৬. লাল দরওয়াজা মসজিদ (জৌনপুর): উত্তর প্রদেশের জৌনপুর জেলায় অবস্থিত এই ঐতিহাসিক মসজিদটি ১৪৪৭ সালে সুলতান মাহমুদ শর্কীর বেগম, রাজে বিবি তৈরি করেছিলেন। এটি সাধক সৈয়দ আলি দাউদ কুতুবউদ্দিনকে উৎসর্গ করা হয়েছিল। তবে “লাল দরওয়াজা মসজিদ”-এর নকশা ও স্থাপত্যশৈলী “আটালা মসজিদ”-এর মতোই।
৭. খায়ের আল-মানাজিল (দিল্লি): দিল্লিতে অবস্থিত এই ঐতিহাসিক মসজিদটি ১৫৬১ সালে মোগল সম্রাট আকবরের একজন সেবিকা তথা তাঁর দরবারের সবচেয়ে প্রভাবশালী মহিলা মাহাম আঙ্গা দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল। এই মসজিদটি মোগল স্থাপত্যের একটি চমৎকার নিদর্শন হিসেবে বিবেচিত হয়।