বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার সাউদার্ন রেলওয়ে এক অবিশ্বাস্য কাজ করতে চলেছে। পাশাপাশি, রামেশ্বরমে আসা পর্যটকরাও সাক্ষী থাকবেন এক বিষ্ময়কর সৃষ্টির। জানা গিয়েছে যে, এবার তৈরি হতে চলেছে প্রায় ৫৬০ কোটি টাকা ব্যয় পামবান সেতু। মূলত, লিফ্ট সিস্টেম ব্যবহার করে ট্র্যাক পেতে দেওয়ার পর এই ব্রিজের ওপর দিয়ে চলবে ঘন্টায় ৮০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন। এছাড়াও, এই ব্রিজের মাধ্যমে রামেশ্বরম পর্যন্ত ট্রেন চলাচলে আরও অনেকে সুবিধা হবে এবং রামেশ্বরম থেকে ধনুশকোটি পর্যন্ত ফের একবার ট্রেন চলাচল শুরু হবে।
রামেশ্বরম থেকে ১৮ কিমি এগিয়ে:
এর আগে ধনুশকোটিতে একটি রেলওয়ে স্টেশন ছিল। যেখান থেকে পণ্য শ্রীলঙ্কায় নিয়ে যাওয়া যেত। কিন্তু ষাটের দশকে প্রবল সামুদ্রিক ঝড়ে এই রেলস্টেশন ও রেললাইনটি ধ্বংস হয়ে যায়। এমতাবস্থায়, ষাট বছর পর আবারও এই রেল যোগাযোগ চালু হবে। মূলত, এই স্টেশনটি পর্যটন এবং ধর্মীয়, উভয় দৃষ্টিকোণ থেকেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।
এই প্রসঙ্গে মাদুরাই বিভাগের সহকারী নির্বাহী ইঞ্জিনিয়ার আনন্দ জানিয়েছেন, রেলওয়ে স্টেশনটিকে পুনর্নির্মাণ করার জন্য এবং এটিকে নতুন ব্রডগেজ ও বৈদ্যুতিক লাইনের সাথে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, এর ফলে রামেশ্বরম থেকে মোট ১৮ কিলোমিটারের লাইন সম্প্রসারণ হবে এবং এতে ৩ টি হল্ট থাকবে। এদিকে, এর ফলে পর্যটকদের সংখ্যা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
বর্তমানে এই সেতু ১২০ বছরের পুরনো হওয়ায় মাত্র এক ডজন ট্রেন এই সেতু দিয়ে চলাচল করে। যাদের গতিবেগ থাকে ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার। শুধু তাই নয়, পুরনো পামবান সেতুতে মাল গাড়ি চলাচল করেনা। এমতাবস্থায়, নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে পামবান সেতুর পাশাপাশি নতুন সেতু তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। এছাড়াও, পামবান সেতুটিতে একটি লিফট সিস্টেম ব্যবহার করে পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছে যাতে জাহাজ এলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে উপরে উঠে যাবে এটি। যার ফলে এখন সময়ও বাঁচবে। কারণ, আগে থাকা সেতুগুলিতে জাহাজ চলে যাওয়ার পর পুনরায় সংযোগ স্থাপন করতে হত। যাতে সময় লাগত প্রায় আধঘন্টা।
সেতুটি ২ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে:
জানা গিয়েছে, রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড দ্বারা নির্মিত এই নতুন সেতুটি ২ কিলোমিটারেরও বেশি দীর্ঘ হবে। নতুন সেতুটি শেজর রোলিং লিফট প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো হচ্ছে। যার ফলে কোনো বড় জলযান এলে সেতুটি অনুভূমিকভাবে খুলে যাবে। এছাড়াও, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে ট্রেন দ্রুত গতিতে চলাচল ছাড়াও আরও ভার বহনের ক্ষমতা প্রদান করবে। শুধু তাই নয়, এই সেতু ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বেগে প্রবল বাতাস সহ্য করার পাশাপাশি সাগরের শক্তিশালী ঢেউয়ের সঙ্গে পাল্লা দিতেও সক্ষম।
সেতুটির আয়ু হবে ১০০ বছর:
মনে করা হচ্ছে যে, এই সেতুটি ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলবে। পাশাপাশি, রামেশ্বরমের সাথে দক্ষিণ ভারতের সংযোগকারী প্রধান সেতু হিসেবে বিবেচিত হবে এটি। এদিকে, নতুন এই সেতু নির্মাণের ফলে ভক্তরা সহজেই ভারতের প্রান্ত ধনুশকোটিতে পৌঁছতে পারবেন। পাশাপাশি, এখান থেকে শ্রীলঙ্কার দূরত্ব সমুদ্রপথে মাত্র ১২ নটিক্যাল মাইল।
খরচ হবে ৭০০ কোটি টাকা:
রেলের তরফে জানানো হয়েছে, ধনুশকোটি থেকে রামেশ্বরম পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার একক লাইন রেলপথ তৈরি করা হবে। বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরের কাছে তৈরি হওয়া এই রেলস্টেশনটি হবে অত্যন্ত আধুনিক। রেলওয়ের মতে, ৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পটি সম্পন্ন হবে।