বাংলাহান্ট ডেস্ক : ‘চল, ঘুড়ি কিনে দেব তোকে’, এই বলে শিশুটিকে সঙ্গে করে নিয়ে বেরিয়ে যায় প্রতিবেশী যুবক। তার পর আর বাড়ি ফিরে আসে নি সেই শিশুটি। থানায় নিখোঁজ-ডায়েরি করে পরিবার। কিন্তু হদিস মেলেনি তার। দেড় দিন ধরে নিখোঁজ থাকার পর বাড়ির অদূরে একটি খাল থেকে উদ্ধার হল তার বস্তাবন্দি দেহ (Child Murder case)। রবিবার সন্ধ্যায় আট বছরের ওই শিশুর দেহ উদ্ধারের পরই তীব্র শোরগোল শুরু হয় দক্ষিণ দিনাজপুরের (South Dinajpur) বালুরঘাটে।
এই ঘটনায় শিশু খুনে অভিযুক্ত প্রতিবেশী যুবক মানস সিংহকে গ্রেফতার করেছে বালুরঘাট থানার পুলিস। এমনকি ওই অভিযুক্ত যুবকের বাবা, মা ও বোনকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিস সূত্রে খবর, জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছেন মানস। তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, ঘুড়ি নিয়ে ঝামেলার জেরেই দীপ হালদার নামে ওই শিশুকে খুন করে মানস। ঘটনা সামনে আসতেই অপহরণ করে খুনের অভিযোগ তুলে মানসের বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেন প্রতিবেশিরা।
মৃত শিশুর পরিবার এবং স্থানীয় সূত্রে খবর, শনিবার বিকেলে ঘুড়ি কিনে দেওয়ার নাম করে দীপকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় মানস। ঘুড়ি কিনে মাঠে গিয়ে দু’জনে ঘুড়িও ওড়ায়। কিন্তু তার পর থেকেই নিঁখোজ হয়ে যায় দীপ। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত বাড়তেই গেলে শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। কিন্তু কোনও হদিস না মেলায় রবিবার সকালে থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। শিশুর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতারও করা হয় মানস ও তাঁর পরিবারকে। এর পরই সন্ধ্যায় বাড়ির পাশের একটি পুকুর থেকে দীপের বস্তাবন্দি দেহ উদ্ধার হয়। এই ঘটনার পরেই এলাকার মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে মানসের বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় র্যাফ পর্যন্ত নামাতে হয়। মোতায়েন করা হয়েছে বিরাট পুলিস বাহিনী। মৃত শিশুর ঠাকুমা দীপ্তি মোহন্ত বলেন, ‘মানস ঘুড়ি কিনে দেওয়ার নাম করে দীপকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। তার পর থেকে দীপর আর কোনও খোঁজ মেলেনি।’
পুলিস সূত্রে জানা যাচ্ছে, মানস খুনের দায় স্বীকার করেছে। জেরায় তদন্তকারীদের সে জানায় ঘুড়ি ওড়ানোর সময় একটি ঘুড়িতে পা দিয়ে দিয়েছিল দীপ। তা নিয়েই দু’জনের মধ্যে ঝামেলা হয়। তার পরই সে দীপকে খুন করে তার দেহ পুকুরে ফেলে দেয়। দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপার রাহুল দে বলেন, ‘বিবার সকালে আমাদের কাছে একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। সেই মতো পদক্ষেপ করি আমরা। সন্ধ্যায় ওই শিশুর দেহ উদ্ধার হয়েছে। অভিযুক্ত প্রতিবেশী যুবক ও তাঁর পরিবারের তিন জনকে আমরা গ্রেফতার করেছি। জেরায় ধৃত যুবক খুনের কথা স্বীকার করেছে।’