দীর্ঘদিনের পরিচিতি, লজেন্স-খেলনার লোভ দেখিয়ে ৯ বছরের শিশুকে লাগাতার যৌন হেনস্থা সিভিক ভলেন্টিয়ারের

বাংলাহান্ট ডেস্ক : ৯ বছরের শিশু কন্যাকে লাগাতার যৌন নির্যাতন। দিনের পর দিন বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে হেনস্থার অভিযোগ উঠল এক সিভিক ভলেন্টিয়ারের বিরুদ্ধে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার চাকদহ থানা এলাকায়। ওই শিশুর বাবা মায়ের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ঘটনার জেরে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়।

পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত যুবকের নাম সুপ্রিয় পাল। চাকদহের ঘেঁটুগাছি গ্রামের দিঘরা এলাকার বাসিন্দা ওই যুবক সিভিক ভলেন্টিয়ার হিসেবে চাকদহ থানাতেই কর্মরত ছিল। দীর্ঘদিনের পরিচিতি সূত্রে ওই গ্রামেরই বাসিন্দা শিশুটির পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে তার। ৯ বছরের শিশু কন্যাটির সঙ্গেও অত্যন্ত সুসম্পর্কই ছিল বছর ৩০ এর সুপ্রিয়র। শিশুটি তাকে মামা বলেই ডাকত। পরিচিত হওয়ার দরুণ শিশুটিও অবাধেই যাতায়াত করত যুবকের বাড়িতে। সুপ্রিয় সিভিক ভলেন্টিয়ার হওয়ায় কারওই মনে কখনওই কোনওরকম সন্দেহের অবকাশই ছিল না, এতটাই বিশ্বাস এবং ভরসা গড়ে উঠেছিল মেয়েটির পরিবারের। আর ঠিক সেই সুযোগকেই কাজে লাগায় যুবক।

পরিবার সূত্রে জানা যাচ্ছে, দীর্ঘদিন ধরেই শিশুটিকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে নিজের সঙ্গে বাড়িতে নিয়ে যেত যুবক। কখনও লজেন্স, কখনও খেলনা বা চকোলেটের লোভ দেখানো হত। আর সেখানেই দিনের পর দিন ধরে চলে শিশুটির উপর যৌন নির্যাতন। কখনও আবার বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার অছিলাতেও চলে অত্যাচার। সুপ্রিয়র বাবা মা দুজনেই অসুস্থ। বাবা বিশেষভাবে সক্ষম, বা মানসিক ভারসাম্যহীন। ফলে বাড়িতে কী ঘটছে সেই সম্পর্কে একেবারেই অবগত ছিলেন না তাঁরা।

কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, গত মাস তিনেক ধরে এসব চলতে থাকলেও পরিবারকে কিছুই জানায়নি নাবালিকা। ফলে ঘটনার কিছুই জানত না পরিবার। কিন্তু শেষ মেষ নিজের এক দূর সম্পর্কের দিদিকে সব কথা জানায় শিশুটি। তারপরই বিষয়টি জানাজানি হয় পরিবারেও। এরপরই সোমবার গভীর রাতে অভিযুক্ত সুপ্রিয় পালের বিরুদ্ধে চাকদহ থানায় যৌন হেনস্তার অভিযোগ দায়ের করেন শিশুটির পরিবারের সদস্যরা। মঙ্গলবার প্রায় ভোর রাতে সুপ্রিয়কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর মঙ্গলবারই তাকে চালন দেওয়া হয় কল্যাণী মহকুমা আদালতে। যদিও পুরো বিষয়টি শোনার পর ওই সিভিক ভলেন্টিয়ারকে জামিন দিতে অস্বীকার করেছেন বিচারক। শিশুটির শারীরিক পরীক্ষাও করানো হয়েছে কল্যাণীর একটি হাসপাতালে।

উল্লেখ্য, সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছে অভিযুক্ত যুবক। তার দাবি পরিবারের এবং বাবা মায়ের ওই পরিস্থিতির কারণে একা সবকিছু সামলাতে হিমশিম খেতে হয় তাকে। এরই মধ্যে তার নিজের কাজও রয়েছে। বাচ্চাটিকে স্নেহ করত বলেও জানিয়েছে সে। তার আরও দাবি, তাকে ফাঁসানোর জন্যই মিথ্যে অভিযোগ এনে চক্রান্ত চালানো হচ্ছে।


Katha Bhattacharyya

সম্পর্কিত খবর