বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মহাকাশে ইতিহাস গড়ার লক্ষ্যে ভারত এক পা এগিয়ে গেছিল, কিন্তু চাঁদের থেকে মাত্র ২.১ কিমি দূরত্বে থাকার সময় চন্দ্রযান (Chandrayaan 2) এর সাথে ইসরোর (Isro) যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। রাত ১ঃ৫৩ মিনিটে স্বদেশী চন্দ্রযান-২ এর ল্যান্ডার বিক্রম চাঁদে অবতরণ করত। রাত প্রায় ২ঃ৩০ নাগাদ ইসরোর প্রধান কে. সিবন অফিসিয়ালি ঘোষণা করেন যে, যান এর সাথে ইসরোর সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়েছে। ৯৭৮ কোটি টাকা খরচ করে চাঁদে পাঠানো চন্দ্রযান-২ এর অভিযান এখনো সম্পূর্ণ শেষ হয়নি। এক আধিকারিক জানান, অভিযানে কেবল মাত্র পাঁচ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে। ৯৫ শতাংশ অর্বিটর সফলতা পূর্বক চাঁদের চক্কর কেটে যাচ্ছে।
অর্বিটর আগামী এক বছর পর্যন্ত ইসরোকে ছবি পাঠাতে থাকবে। ইসরোর এক আধিকারিক জানান, অর্বিটর ল্যান্ডারের ছবি পাঠাতে পারবে। এরফলে ওই ল্যান্ডার এখন কেমন পরিস্থিতিতে আছে সেটা জানা যাবে। চন্দ্রযান-২ তিনটি অংশে আছে অর্বিটর (২৩৭৯ কেজি), বিক্রম (১৪৭১ কেজি) আর প্রজ্ঞান (২৭ কেজি)। দু সেপ্টেম্বর বিক্রম অর্বিটর থেকে আলাদা হয়ে গেছিল। Geosynchronous Satellite Launch Vehicle মার্ক-৩ এর মাধ্যমে ২২ জুলাই চন্দ্রযান-২ কে মহাকাশে পাঠিয়েছিল ইসরো।
২০০৮ সালে চন্দ্রযান-২ মিশনের জন্য সম্মতি জানানো হয়েছিল। এরপর সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল, ল্যান্ডার আর রোভারের টেস্টিং। আর এর জন্য, চাঁদের মতো মাটি, কম মধ্যাকর্ষণ এলাকা, চাঁদে পড়া চমকদার আলো এর মতো পরিস্থিতি। আর এর একমাত্র উপায় ছিল, আমেরিকা থেকে সিমুলেটেড লুনার সয়েল (চাঁদের মতো মাটি) আনা। যার দাম প্রতি কেজি ১০,৭৫২ টাকা। আমাদের এইরকম ৭০ টনের মাটির দরকার ছিল। এর দাম অনেক, তাই বিজ্ঞানীরা ঠিক করেছিল যে, কিছুটা মাটি আমেরিকার থেকে কেনাহবে আর সেটির পরীক্ষা করে এরকম মাটি খোঁজা হবে।
এরপর খবর পাওয়া যায় যে, তামিলনাড়ু অ্যান্থ্রোসাইট নামের পাথরে এইরকম মাটি পাওয়া যায়। যেই মাটি কেনার জন্য আমাদের ৭২ কোটি টাকা লাগত, সেটা বিনামূল্যে পেয়ে গেলো ইসরো। পরে ওই মাটিকে ভালো মতো পরীক্ষা করে চাঁদের মতো মাটি বানানো হয়। এরপর সেই মাটি ইসরোর ব্যাঙ্গালুরুর কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। আর শেখা দুই মিটারের মোটা মাটির চাদর বসানো হয়। সেখানে চাঁদের মতই আলোর ব্যাবস্থা করা হয়। সেখানে ২০১৫ থেকে এক হাজার বার ল্যান্ডিং করানো হয়েছে। চাঁদের মধ্যাকর্ষণ শক্তি পৃথিবীর থেকে ছয় গুণ কম, আর সেটির জন্য হিলিয়াম গ্যাসের ব্যাবহার করা হয়েছে।