বাংলাহান্ট– ছেলেবেলায় সাপুড়েরা আসতো ঘরে ঘরে সাপের খেলা দেখাতে, রাস্তায়ও সাপের খেলা নিইয়ে বসত তারা। রংচঙে পোশাক পরা, হাতে বিন, মাথায় বিশাল পাগড়ী। আর তার সাথে কাঁধে ঝোলার মধ্যে বেতের ঝুড়িতে বড় বড় বিষাক্ত বিষাক্ত সাপ। ছোটরা ভয়ে ভয়ে সেই খেলার মজা নিত, মা কাকিমার আঁচলের তলায় ঢুকে দেখতো কি করছে তারা।
তবে অবশ্য ভয় পাওয়ার কিছু ছিল না। কারণ কবির কথায় এ সাপের নখ নেই, দাঁত নেই, কাওকে সে কাটেনা।
সাপুড়ের পেশা ছিল একটা অবাক করা পেশা ।এরা গ্রামে থেকে গ্রামে ঘুরতো, খেলা দেখাতো এবং মাটির গন্ধ শুঁকে বলে দিতে পারত কোথায় কোন সাপ আছে। বড় বড় বিষাক্ত সাপ নির্বিকারে ধরে জুলিতে পুরতো তারা আবার তাই নিয়ে নানারকম খেলাও দেখাতো। সাধারণ মানুষ রাস্তায় জড়ো হয়ে গোল হয়ে দেখতো সে খেলা। কিন্তু এই খেলা এখন বিলুপ্তির পথে। সাপুড়েদের এখন আর দেখা যায় না এই কলিযুগে।
আর সেই রঙ-চঙে বিশাল পোশাক পরা সাপুড়ের দেখা ও মেলে না।।এখন বাবুরাম সাপুড়ে কোথা যাস বাপুরে কবিতাও নেই ছোটদের বইয়ের পাতায়।
পরবর্তী প্রজন্মকে বাপুরাম সাপুরের কথা বললে বা এরকম সাপুড়ের খেলার কথা বললে তারা গালে হাত দিয়ে চিন্তা বসবে এবং কি হয় সেই ব্যাপার তাই নিয়ে নানান চিন্তা করবে, কল্পনা করবে।
ভাগ্যিস সুকুমার রায় বাবুরাম সাপুড়ে কবিতাটি লিখেছিলেন, তা না হলে পরবর্তী প্রজন্মের ছোটদের বোঝানো যেত না সাপুড়েরা কেমন হয়। আর আজকাল সেই সাপুড়ের খেলাও নেই, তাই সাপুড়েরা কেবলমাত্র বইয়ের পাতাতেই বন্দি। ছোটরা এখন খেলাধুলা করা ছেড়ে মজেছে ভিডিও গেমস, পাবজিতে। তাই আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে এই সাপুড়েরা ও তাদের সাপের খেলা।