আড়ালে থেকেই আদালতে জামিনের আবেদন করলেন রাজীব কুমার

বাংলা হান্ট ডেস্ক: রাজীব কুমারের খোঁজ করতে মরিয়া সিবিআই, শুক্রবারও চালানো হলো তল্লাশি। এরইমধ্যে সিবিআই আধিকারিকরা রাজীবের স্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলেছেন। আড়ালে থেকেই আলিপুর আদালতে আগাম জামিনের আবেদন রাজীবের। শনিবার আবেদনের শুনানি।

রাজীব কুমার কে খুজতে নিজেদের যথাসম্ভব চেষ্টা করছে সিবিআই। শুক্রবারও কলকাতা-বিষ্ণুপুরের চারটি হোটেল-রিসর্ট, আলিপুর ও টালিগঞ্জের সিআইডি গেস্ট হাউসে হানা দিয়েছে সিবিআই আধিকারিকরা। এদিন ৩৪ নম্বর পার্ক স্ট্রিটের বাড়িতেও যান সিবিআই আধিকারিকরা। রাজীব কুমারের স্ত্রী-র সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। রাজীব কোথায় আছেন সে বিষয়ে জানতে চান।

images 1 17

রাজীব কুমারের খোঁজ না পাওয়া গেলেও আড়ালে-আবডালে থেকেই পুলিশি গ্রেফতারি এড়ানোর চেষ্টা করে চলেছেন কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। রাজীবের আইনজীবী শুক্রবার আলিপুর আদালতে আগাম জামিনের আবেদন জানান। সিজিও কমপ্লেক্সে গিয়ে সেকথা জানিয়েও আসেন।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি রাজীব কুমার ইস্যুতে দেবযানী মুখাপাধ্যায়ের স্বীকারোক্তি দেওয়ায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে চারদিকে। সিবিআই এখন এই স্বীকারোক্তিতেই রাজিবের বিরুদ্ধে মূল অস্ত্র হিসেবে কাজে লাগাচ্ছেন। সাত মাস ধরে বহু দোনামোনার পর, সারদাকাণ্ডে অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত দেবযানীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। এদিনই বয়ানে রাজিবের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে দেবযানীর মন্তব্যে, হাতে মোয়া পেয়েছে তদন্তকারীরা। সূত্রে জানা গেছে, সিবিআই আদালতের কাছে আবেদন করেছে যাতে খুব শিগগিরই সুদীপ্ত সেনের বয়ান নেওয়া যায়।

সিবিআইকে বয়ান দিতে গিয়ে দেবযানী বলেছেন “বিধান নগর পুলিশ কে আমি বলেছিলাম যে তাদের সাথে আমি মিড ল্যান্ড পার্ক এর অফিসে যেতে চাই। মিডিয়া এবং সারদা রিয়েলটি সংক্রান্ত নথি দলিল কোথায় আছে, সেটা আমার জানা। আমি আপনাদের দেখিয়ে দেব। কিন্তু প্রথমে আমার এই বক্তব্যে কোনো সায় দেয়নি পুলিশ। পরে পুলিস আমাকে সেখানে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে আমি দেখতে পাই বহু ভাঙাচোরা জিনিস এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। অফিসের সবকটা কাঁচ ভাঙা। এমনকি অফিসে অনেক কম্পিউটার পর্যন্তও নেই। আমাকে পুলিশ সেখানে নিয়ে যাওয়ার আগেই ওরা সেখানে পৌঁছেছিল। এমনকি অফিস থেকে সব ট্রাঙ্কও সরিয়ে নিয়ে গেছিল তারা।”

এদিন দেবযানী আরও বলেন, “আমাকে নিয়ে গিয়ে অফিসের নীচের তলার ঘর থেকে সারদার সমস্ত নথি ও কাগজপত্র বের করে পুলিস। সেগুলিকে তারপর তারা নিয়ে, যায় প্রচুর নথি ছিল সেখানে, আমি জানতাম যে সব নথি পুলিশের কোনো কাজেই লাগবে না, তাই ২৩ দিন ধরে সারদার জমি ও মিডিয়া সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য আলাদা করে সরিয়ে রেখে রাজীব কুমারকে দিয়েছিলাম। আমার বাছাই করে দেওয়া নথিপত্র দুটি আলাদা ট্রাঙ্কে ভরে পুলিস। একটা ট্রাঙ্কে মিডিয়া সংক্রান্ত নথি রাখা হয়েছিল। অন্যটায় জমি সংক্রান্ত নথি। আমি আবার আলাদা করে ল্যাপটপের সূচিপত্র বানিয়ে দিয়েছিলাম। আর সারদার গাড়ি সংক্রান্ত তথ্য পেন ড্রাইভে করে আমি দিয়েছিলাম।”

দেবযানীর এই বয়ানের পর চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে চতুর্দিকে, তারি বয়ানকে সিবিআই এখন রাজীবের বিরুদ্ধে মোক্ষম অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার জন‍্য মুখিয়ে রয়েছে। উল্লেখ্য প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে গোয়েন্দারা অভিযোগ এনেছেন যে সারদা কাণ্ডের তথ্যপ্রমাণ লোপাট করেছে রাজীব। সিবিআই আইনজীবীরা তাকে গ্রেফতার করতে চাওয়ার কারণ হিসেবে আদালতের কাছে প্রতিবার বলেছেন এই কথা।

গতকাল আলিপুর আদালত রায় দিয়ে জানিয়েছে, রাজিব এর বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে তার করা অপরাধের যথেষ্ট সাক্ষী প্রমাণ রয়েছে। তাই এখন কোন পরোয়ানা ছাড়াই, সিবিআই নিজের ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে, তদন্তের স্বার্থে তাঁকে গ্রেফতার করতে পারে, এ ব্যাপারে কোনো রকম কেউ নাক গলাতে পারবেন না।

Admin

Krishna Chandra Garain, BIET alum, blends mechanical ingenuity with literary finesse. An adept in technical and business content, his words breathe life into concepts. With a background in mechanical engineering, he navigates complexities effortlessly, crafting narratives that enlighten and inspire. A virtuoso of words, Krishna transforms ideas into captivating realities.

সম্পর্কিত খবর