বাংলা হান্ট ডেস্ক: রাজ্য জুড়ে চলছে NRC আতঙ্ক। এর প্রভাবে অনেকেই মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। রাজ্যে ইতিমধ্যেই সাত জনের বেশি লোকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবারই মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘অপপ্রচারে নিজেদের মূল্যবান জীবন নষ্ট করবেন না।’ মঙ্গলবার ফের একবার স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন, ‘বাংলায় কোনও NRC হবে না। কোনও মানুষকে বাংলা থেকে কেউ তাড়িয়ে দিতে পারবে না।’ মুখ্যমন্ত্রী এদিন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মভিটে বীরসিংহ গ্রামের সভা থেকে রাজ্যের মানুষকে আশ্বাস দিলেন। সামনেই বিদ্যাসাগরের দুশো’তম জন্মদিবস, এই উপলক্ষে কাজে লাগিয়ে রাজ্য সরকার বছরব্যাপী অনুষ্ঠানের কর্মসূচি নিয়েছে। সেই অনুষ্ঠানের সূচনা করতে হাজির ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
NRC-র ইস্যুতে কেন্দ্রীয় শাসকদলকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলার মাটিকে ভয় দেখানো যায় না। জব্দ করা যায় না।’ ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্টার বা NPR নিয়েও আতঙ্কিত হতে মানা করেন মুখ্যমন্ত্রী। জানান, ‘প্রতি ১০ বছরই জনগণনা হয়। এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।’
সম্প্রতি রাজ্যের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করতে দিল্লি গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী কে রাজ্যে দেউচা পাঁচামি কয়লাখনির উদ্বোধনে আমন্ত্রণ জানিয়ে এসেছেন মমতা। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আলোচনা পর্ব চলার পর মমতা বেরিয়ে এসে বলেছিলেন, “NRC অসমের বিষয়।”
দিল্লি সফরে গিয়ে শুধু প্রধানমন্ত্রী নয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গেও দেখা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি নিয়ে কোনরকম কথা হয়নি বৈঠকে। অসমে ১৯ লক্ষ মানুষ বাদ পড়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বাংলা, হিন্দিভাষী ও গোর্খারা। ভারতীয়দের যেন সুযোগ দেওয়া হয়।”
শুধু তাই নয় মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ”এনআরসি-র জন্য বলতে গেলাম। বিষয়টি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের হাতে পড়ে। তাই বলে এলাম দিল্লি গিয়ে।” অন্যদিকে বাংলায় ভোটার তালিকায় নাম তোলা ও ডিজিটাল রেশন কার্ড নিয়ে গুজব ছড়িয়েছে সর্বত্র। এই প্রসঙ্গে সকলকে আশ্বাস দিয়েছেন মমতা যে যে যে বাংলায় কোনওভাবেই এনআরসি চালু হবে না।