বাংলা হান্ট ডেস্ক: ম্যাথু স্যামুয়েলের কাছ থেকে কোনও টাকা নেননি বলে মন্তব্য করলেন মুকুল রায়। নারদকাণ্ডে ধৃত পুলিশ অফিসার এস এম এইচ মির্জ়াকে নিয়ে আজ তাঁর এলগিন রোডের ফ্ল্যাটে যায় CBI৷ এই নিয়ে মুকুল রায় বলেন, তাঁর ফ্ল্যাটে কোনও টাকা লেনদেন হয়নি। আজ তিনি আবারও বলেন, “আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে।”
ছদ্মবেশী নারদ কর্তা ম্যাথু স্যামুয়েলকে মির্জ়ার কাছে পাঠিয়েছিলেন মুকুল। CBI তদন্তে উঠে এসেছে এমন তথ্যই। ম্যাথু এবং মির্জ়া উভয়েই জানিয়েছেন এই একই কথা। তবে মুকুল রায়কে সরাসরি টাকা নিতে দেখা যায়নি নারদের ভিডিয়োতে। এদিকে ম্যাথুকে যে তিনি মির্জ়ার কাছে পাঠিয়েছিলেন, তা অস্বীকার করেননি মুকুল। জানিয়েছেন, উনি শিল্প করতে চেয়েছিলেন৷ সেই কারণে বর্ধমানের তৎকালীন পুলিশ সুপার মির্জ়ার কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর ভূমিকা ততটুকুই।
প্রসঙ্গত, নারদা কান্ডে সিবিআইয়ের কাছে হাজিরা দিয়েছেন মুকুল রায়। নিজাম প্যালেসে মির্জা-মুকুলকে সামনা সামনি বসিয়ে জেরা করে CBI। সূত্রে খবর, মির্জা নিজের বয়ানে মুকুলের নাম করায় তাঁকে তলব করেন তদন্তকারীরা। মির্জাকে সামনে বসিয়ে মুকুল রায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার আইপিএস অফিসার এসএমএইচ মির্জা কে নারদকাণ্ডে গ্রেফতার করা হয়। এরপরই ডাক পড়ে মুকুল রায়ের। নারদের ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, ব্যবসায়ীর বেশে থাকা নারদকর্তাকে মির্জার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছিলেন তত্কালীন তৃণমূল নেতা মুকুল রায়।
প্রথমবার মুকুল রায় উপস্থিত না থাকায়, দ্বিতীয়বারের তরে CBI-র তরফে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। সেই নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে আজ নিজ়াম প্যালেসে যান তিনি। জানা গেছে প্রায় তিন ঘন্টা ধরে সিবিআইয়ের এই জেরা পর্ব চলে। CBI সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তার হওয়া পুলিশ কর্তা এস এম এইচ মির্জ়ার মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হয় মুকুলকে। জেরা শেষ হওয়ার পর, নিজাম প্যালেস থেকে বেরিয়ে, BJP নেতা বলেন, “বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে সাহায্য করা যাবে না৷ আমি বলি আইনকে সম্মান করে এমন একজন সাধারণ নাগরিকের কর্তব্য তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে সাহায্য করা৷ যতবার তদন্তকারী সংস্থা আমাকে ডাকবে , আমি আসব৷ সাহায্য করব৷”
উল্লেখ্য, মুকুল রায় জেরা করার পেছনে উঠে আসে একটি ভিডিও ফুটেজ়, যেখানে দেখা গেছিল, মুকুল রায় বর্ধমানের তৎকালীন পুলিশ সুপার মির্জার সঙ্গে দেখা করতে বলেন ম্যাথু স্যামুয়েলকে। অন্যদিকে মির্জা আবার দাবি জানিয়েছিলেন যে তিনি টাকা নিয়েছিলেন মুকুলের নির্দেশেই। অবশেষে সেই টাকা মুকুলের কাছে পৌঁছেছে। সূত্রে জানা গেছে যে, আজকের জেরায় এই বিষয়গুলিই উঠে এসেছে। আজ জেরা শেষে যদিও মুকুল রায় এপ্রসঙ্গে কোনও কথা বলতে চাননি। তিনি এড়িয়ে গিয়েই বলেন বলেন, “এগুলি তদন্তকারী অফিসারদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।”
কিন্তু অন্যদিকে আবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে আক্রমণ করতে পিছুপা হননি মুকুল রায়, তিনি বলেন, “আমি জানি এই ঘটনায় আমি জড়িত নই, তাই সবসময় তদন্তকারী সংস্থার মুখোমুখি হতে রাজি৷ তোমরা ভিডিয়ো ফুটেজ় দেখেছ? কোথাও আমাকে টাকা নিতে দেখেছ? আমি বলছি নেই৷ তবে আমার বিরুদ্ধে বড় ষড়যন্ত্র করছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ যারাই গ্রেপ্তার হচ্ছে তাদেরই বলা হচ্ছে মুকুল রায়ের নাম নিতে৷”
উল্লেখ্য, প্রথমবার নিজ়াম প্যালেসে হাজিরা না দেওয়ায় রাজনৈতিক মহলের বিভিন্ন অংশে নানান গুঞ্জন ওঠে৷ অনেকেই মনে করেছিলেন যে সিবিআইকে এড়িয়ে যাচ্ছেন মুকুল রায়। কিন্তু এরপরে নিজ়াম প্যালেসে CBI-র সামনে হাজিরা দিয়েছেন মুকুল, যার ফলে এই সন্দেহ খানিকটা লঘু হয়েছে বর্তমানে৷